শ্যারন ওল্ডসের কবিতা
ভাষান্তর ও ভূমিকা: সাবেরা তাবাসসুম আমেরিকান কবি শ্যারন ওল্ডসের কবিতার সাথে আমার প্রথম পরিচয় কবি শামস আল মমীন অনূদিত ‘সাম্প্রতিক আমেরিকান কবিতা’র বইয়ের পাতায়। শ্যারনের প্রথম কবিতা পাঠের আবহ আমাকে …
ভাষান্তর ও ভূমিকা: সাবেরা তাবাসসুম আমেরিকান কবি শ্যারন ওল্ডসের কবিতার সাথে আমার প্রথম পরিচয় কবি শামস আল মমীন অনূদিত ‘সাম্প্রতিক আমেরিকান কবিতা’র বইয়ের পাতায়। শ্যারনের প্রথম কবিতা পাঠের আবহ আমাকে …
ফুলজীবন বেঁচে থাকার আনন্দে ডুবি আর ভাসি। ডুবি আর ভাসি আর ভাসি আর ডুবি আমি এক প্রজাপতি দুলছি বাতাসে যাচ্ছি ঢেউ কেটে ফুলের মনের কাছে। তোমার জলতরঙ্গ প্রবেশ করছে …
অভ্যুদয় স্টিমারের যে হুইসেল শুনে ঘর ছেড়েছিলাম তা আজও শুনতে পাই। সেদিন সে যেতে বলেছিল আর আজ সে কেবলই ডাকে। কিন্তু যে পাখির বাসা আমি ভেঙে এসেছিলাম তা আর কোনোদিন …
বয়স নিজেকে এখন এক বয়সশূন্য প্রান্তর মনে হয় তরুনীরা অজানা সন্দেহে ঠারে-ঠারে চায়। তরুনরা দূরত্ব রেখে তাকায়। আমিও চালকুমরো মোরোব্বা হয়ে টিকে থাকি বয়ামে-বয়ামে আমার দুচোখ— শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য ও …
আমরা বেঁচে আছি সেইসব উলঙ্গ মানুষের ভিড়ে আমরা বেঁচে আছি সেইসব উলঙ্গ মানুষের ভিড়ে বরফাচ্ছাদিত নয় অথচ বরফে ছেয়ে গ্যাছে দেশ! ক্রমশ মানুষের অন্ধত্ববিলাস খেয়ে ফেলছে হৃৎপিণ্ড বিচিত্র ও বিবিধ …
ঝালকাঠি নদী ও নারী যদি না আলাদা করি তবে সবুজ গাছপালা ও তরুপল্লবে পরিপাটি ঝালকাঠি যেন জলের বুকে রূপালী এক বন্দরসুন্দরী! ডাচ ফরাসী ও ব্রিটিশ বেনিয়া তার মন জয়ে ছিল …
নাকফুল মায়ের নাকফুল আমার স্পর্শের প্রথম ফুল ঘ্রাণ বিলিয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর সব ফুলে.. পারাপার একটি খরস্রোতা ধোঁয়ার নদী পার হতে সমস্ত আয়ু যোগ করে বানিয়ে নিচ্ছি একটা ব্রিজ। …
শব্দ কিংবা মুখোশ কাঠামোহীন সংঘের চেয়ে বড় ঘাতক কে আছে লেখকের? অথবা সেই অর্থে যে কোনও সৃষ্টিশীলতার, একবার সভাক্ষেত্রে হাততালি উঠে গেলে ছারখার হয়ে যায় বুকের জমিন, যায় না? মাতৃভাষা …
প্রস্তাবনা (১) শীতের সন্ধ্যা ফুরিয়ে হঠাৎ করে রাত নেমে আসে সরু গলিতে ভেসে বেড়ায় সেদ্ধ মাংসের গন্ধ। এখন সময় ঠিক সন্ধ্যা ছটা। মৃত মানুষেরা বাড়ি ফেরে, দিনের ভস্ম গায়ে মেখে …
চক্রব্যূহ যতোটা পাহাড় থেকে দূরে সরে যাই ততো বহু বছরের জমে থাকা বরফের শীর্ষে মমতা-পাথর নড়ে ওঠে। দুর্গাসাগরের মতো আমার নিজস্ব কোনো দীঘি নাই তথাপি কখনো পাতা পতনের শব্দে চমকিত …
প্রেম ও প্রতিবিম্ব প্রেম এসে বলে তার নাম রৌদ্র, এ কি কথা, সে তো মেঘের আড়ালে থাকে, কেবল দুঃখের দিনে রামধনু হয়ে দেখা দেয়, শুয়ে থাকলে বিষাদে সব রক্ত ঝরে …
অশ্ব আমার আস্তাবলে অশ্ব আমার আস্তাবলে হাঁটছি তোমার শ্যামসুন্দর পথটি বেয়ে। আমার পিতৃভিটে পূর্বাকাশে মেধা এখন মগজে নেই দুই চাতালে অশ্ব আমার আস্তাবলে। বনস্থলির শিরদাঁড়া সেই যেমন দাঁড়ায় বনমোরগের ঘাড় …
ইউটোপিয়া To us now these green days lie broken with leaves with blossoms fallen কাঠঠোকরার পায়ের চাপে ঘাসফুলের অশল্য চিৎকার কীভাবে বায়বীয় ঘূর্ণিতে হারিয়ে যায় সে গল্প তোমাকে বলব বলে …
আমার ছেলেবেলা ভাসানের চেনা প্রতিমায় ডুবে গেলে পঞ্চমির চাঁদ রাস-পূর্ণিমার ঠাণ্ডা নেমে আসে প্রতিবেশি ছাদে; কলমির ফুল ফোটে সুচিত্রা যুগের নায়িকার মতো ছাদ বাগানের টবে। পরিযায়ি পাখিরা আসে, সার্কাসের মেয়ে …
অভিলাষ ভাঙছে কাটছে পুড়ছে ডুবাচ্ছে গুড়িয়ে দিচ্ছে, তোমাকে। তবু তুমি তার মুখ থেকেই ‘স্টে টিউনড’ চাইছো শুনতে! সে আগলে রাখছে জাপটে ধরছে চুমুর দরিয়া খুলছে মান করে দূরে গিয়ে …
এক. সমাধি সমান্তরাল হেঁটে যাই সবটুকু আয়োজন কি নিজেকে নিয়ে বৃত্তাবদ্ধ জমানার পাখি এখানে এসেছে যে তাকে কী করে বেঁধে রাখি, ভুলে থাকি বলো ! আজব গল্প শেষে ধ্যানমঞ্চ থেকে …
বাংলাসাহিত্য বাংলাসাহিত্য শুরু করিয়া দিলাম। শর্ত মোতাবেক জনগণ শব্দটি রাখিব না। নির্বিচারে মানিয়া লইব স্বৈরতা, তাহাকেই দিব সব অধিকার। চোর ও বাটপারদের জন্য নিত্য দোয়া করিয়া যাইব। যে মাথা আকাশ …
১. ঘাতক শহর কিছুই নিরাপদ নয় গা-গতরে বেড়ে ওঠা ঘাতক শহরের হাতে। আমি, গ্রাম, বৃক্ষ, ঘাস, নিরেট অন্ধকার, জোৎস্নার আলো, জোনাকীর কারুকাজ, অলস দুপুর, কিছুই নিরাপদ নয় ঘাতকের হাতে। এখানে …
বয়স হলে বাঘের হরিণপ্রীতি খুব কমে যায়, বাঘ আর শিকারে কি সেভাবে তাকায়? যেভাবে দেখতো যৌবনে হরিণীর চকচকে দেহ হরিণী গাত্রের রেখা বাঘমনে জাগাত বিদ্রোহ! এখন বয়সকালে বাঘ বসে কেবল …
প্রাণন তোমার অন্তর থেকে ছুটে আসছে এক সরিষাক্ষেত সোনারঙ আলো ছুটে আসছে— সূর্যমুখীপাপড়ি অতল গহ্বর থেকে ঘরে ফেরা জোনাক-জোনাকী, ছুটে আসছে— ফিনিকফোটা জ্যোৎস্নায় খসেপরা সন্ধ্যার হিমরং আসছে। ছুটে-ছুটে আসছে আমাদের …
পুলকসঞ্চার শব্দটি এমন উচ্চারণমাত্র প্লাবিত হয় আবেগের বন উড়ে যায় হাওয়ায় দুই অক্ষরের পাখি। শব্দটি এমন উচ্চারণমাত্র অনুভবে শীত নামে হৃৎ প্রান্তরে শুরু হয় রৌদ্রোৎসব। শব্দটি এমন উচ্চারণমাত্র বাহিত হয় …
প্যানোরমা তোমাকে দেখতে আকাশে রেখেছি চোখ তোমাকে শুনতে বাতাসে পেতেছি কান! হাজার তারায় খুঁজেছি তোমাকে চাঁদের অবর্তমানে; তোমার জন্য রচনা করেছি গান। তুমি কি কাহারো প্রাণের সারথি … আদৌ … …
সুরের ধ্বনিপাত আহত পংক্তিমালার সাথে জুটি বেঁধে একটা গান লিখেছি, ” প্রিয়তম আমার, শেষ হয়েছে ফুলদের ঋতুকাল, পরিযায়ী বালিহাঁস চলে গেছে পাহাড় পেরিয়ে, রেখে পালকের কোমল আদর— সময়ের রেখায় দেখি …
রাবেয়া আক্তার আমাকে কথা দিয়েছিল জিপসিদের ভিড় ঠেলে উঠে আসা তোমার কোমল হাসিটা দেখতে এসেছে অ্যাপোলোর পোষা সাদা কাকটা। রাবেয়া আক্তার আমাকে কথা দিয়েছিল– যারা তার নরম যোনিতে সম্মতিহীন সংগম …
বনসাই হয়ে গেছি দুপুরের রোদে পোড়োবাড়ীর আঙ্গিনায় একাকী শালিকের মতো নিঃসঙ্গ আমি স্মার্ট ফোনের স্ক্রীনে আটকে রাখি চোখ। আমাকে ঘিরে নিস্তরঙ্গ বয়ে যায় চির বহমান কালের অচিহ্ন সময়। দোতলা ফ্লাটের …
জনসমুদ্র এবং সাগরের ধ্বনি জনসমুদ্র আর সাগরের ঢেউ কখনো সংক্ষুব্ধ কখনো বিক্ষুদ্ব সাগরের উত্তাল ধ্বনি জনসমুদ্রের ধ্বনিসাম্যের কাছে কখনো নত কিংবা কখনো পরিণত সাগরের একবিন্দু জল বেদনার নোনার সাথে অশ্রু …
ঘুম ব্যর্থতার পদচিহ্ন ম্লান করে সবুজ পাতার ঝলকানির মতো আমাদেরই কারও কারও স্বপ্ন মাটিতে পড়ে ফুল হয়ে গজায় যদিও ওরা ফুলের গাছে নয়। সূর্যাস্তের স্নিগ্ধ উষ্ণায়নে, আবাল-বৃদ্ধ দু:খ-সুখের শব্দ উচ্চারণে, …
শামুক বাড়ি শামুরবাড়িতে বো-কাট্টা ঘুড়ির মতো চক্কর খায় মেঘ, কেনো তরুণী মেঘের দোপাট্টা খুলে গিয়ে আটকে যায় দূরান্তে গ্রামের নিশানা উঁচুমাথা গাছের চূড়োয়; বৃষ্টি হয় বিধবার একপলক স্বামীশোকের মতো। এই …
বাতাস লিখে ফেলে সুগন্ধি কবিতা অন্ধকারে ধুয়ে নিয়ে হাত বাতাস লিখে ফেলে নতুন সুগন্ধি কবিতা কেউ দেখার আগেই তা প্রতি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়ে আসে আলোর কৃষক শহরের লোকেরা কৃষিজমি …
হারিয়ে ফেলা তুই কবে বড় হবি? কবে হবি সাবালক? ধরবি সংসারের হাল? বড় হবার বয়সতো পার হয়ে যায়! তোর ভেতর ঘরে কার বসবাস? কে তোর লাগাম টেনে ধরে? বেঁধে রাখে …