নিসর্গ সিরিজ ১

শিবলী সাদিক   বিদূষকের কথা বৃষ্টির পরে এখন সব শান্ত হয়ে এল, গাছের থেকে সুন্দর নেমে এল। জানি সব নাচ দেখা হয়ে গেছে, শাড়ির গোপন ভাঁজ দেখে কবি চলে গেছে। …

ঈভলিনের শহর ও অন্যান্য সম্পর্কগুলি

আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ   জগিং সোনার পাতা গুঁড়িয়ে দেবার মুহূর্তে পৃথিবীতে জলের ধারণা হলো। সেই ভরসায় তোমার চোখ থেকে চুলে তাকালাম। এই প্রথম উড়তে উড়তে নাম না-জানা পাহাড়ে পাখি হয়ে …

তমিজ উদদীন লোদীর কবিতা

বালিকারা ফিরবেনা এখানে বালিকারা ফিরেনি এখানে ধোঁয়া-গন্ধে আচ্ছন্ন তারা আর ফিরবেনা কখনো। ধোঁয়ার আড়ালে আগুন ক্রমশ লেলিহান শিখাসহ বলকে উঠছে দেখো; তারও আগে বালিকারা দেখেছে চাঁদ ডুবে গেছে আ্যশশ্যাওড়া-ঢালা জলে। …

গোলাম কিবরিয়া পিনু’র কবিতা

ভ্রমণকালে   ভ্রমণকালে ভূখণ্ড আরো খণ্ড খণ্ড অনুভবে আসে, চিরহরিৎ মিঠেপাতার বৃক্ষ সবুজের ঘাসে। অন্ধকার ঢাকা গুপ্তস্থান সেইখানে বিদ্যুতের গান, বৈদ্যুতিক গোলযোগ নেই–শুধু বিদ্যুৎ চমকায়। গরম কেতলি ধরার বস্ত্রখণ্ড নাই …

সহসাই খুলে গেল

অদিতি ফাল্গুনী   ক. সহসাই খুলে গেল নিরুদ্ধ অর্গল এই গোপন জানালা প্রকাশিত হল নভোনীল অন্তরীক্ষ; মহাবিশ্ব সংবাদ… বলো, কীভাবে জেনেছিলে লুপ্ত অভিপ্রায়? জেনেছিলে মোহন পাতার ঝড়… আমার লুকনো বেদনা …

শিবলি সাদিকের দীর্ঘ কবিতা

পদ্মপুকুর   ১ যদি পদ্মপুকুরে নামতে পারি তুলে নেব সব রং আর বর্ণলিপি পদ্ম হয়ে তাবৎ বিকাশ সেথা জ্বলে তার রং আর রূপ তাই এত অপরূপ দেশ-কাল জলে থর থর …

ফেরদৌস নাহার-এর তিনটি কবিতা

জাদুর বাক্সে ঘর সারাদিন জ্বর জ্বর   জাদুর বাক্স হাতে হেঁটে যায়,কে যায়? মানুষের অদ্ভুত দুটি পা হেঁটে যায়, বাক্সে যায় তার সাথে ধুলোর সংসার। কত কবি নিয়েছে বিদায় পৃথিবীর কোলাহলে …

কবিতা: ব্লেডলিখিত সত্তাচিহ্ন

শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ১ চিরকাল ডিসেম্বরতাড়িত আমি ফেলে এসেছি ধারালো সুরের মধ্যে মাথা ও নির্ধারণ কোথায় সনেট থাকে? শান্তিপূর্ণ  দূরত্ব ভাষার শরীরে কি আমাদের বসবাস ছিল? রাস্তা জড়িয়ে যায় বালিকার ধূসর …

কবিতা: এক স্লাইস ঈদ

শামীম আজাদ   নতুনজামাটা নামাতেই হ্যাঙ্গারের হাড়ে হাড়ে কি নরম হাসি দিনতো গিয়াছে দূর্বার আমার তরকারি হাতে তখনো ঈদের সুগন্ধী সেমাই প্লেটে প্লেটে ফটোগ্রাফ দরজা দাঁড়িয়ে একা খিল খিল পা …

মলয় রায়চৌধুরীর প্রহসন: ভরসন্ধ্যা

[একটি কদমগাছ ছেয়ে আছে ফুলে ; গাছটির চারিপাশে উবু হয়ে বসে উনত্রিশজন বুড়োবুড়ি আর জনা ছয় যুবক-যুবতী । সকলেই তারা ওপরে তাকিয়ে আছে কদম গাছের পানে ; বোঝা যায় তারা …

মঈন চৌধুরীর কবিতা

যতিচিহ্নের সুখ সত্য ও মিথ্যাকে খুঁজে একদিন চিহ্নকে পাওয়া গেল, যতিচিহ্ন, সমস্ত সমস্যার সমাধান। তারপর নৈশব্দের আলোড়নে জেগে ওঠে দ্বীপ, জল গড়িয়ে মিশে যায় সমুদ্রমহলে। ওখানে শব্দহীন মাছ, লাল রঙের …

নাহার মনিকার কবিতা

সকলি আয়ান ঘোষ, কেউ কেউ রাধা ১ ছিটমহলের বুকে মধুভাণ্ড নিয়ে নদী কথা বলে ওঠে চোখের সামনে ভাসে মমীদের শরীরের বাঁক। তোমাকেও অমাবস্যা পাক, অন্ধকারে নদীকে জড়াও পানিপোকা হয়ে নেমে …

জুয়েল মাজহার-এর কবিতা

রুবিকন   আমার সামনে এক রুবিকন, পুলসিরাত, ভয়ানক ক্রুর অমানিশা এর সামনে একা আমি; কিস্তিহীন, নিরশ্ব, রসদহীন পিগমিদের চেয়ে ছোটো আমি! আর আমার ভাঙা হাড়, থ্যাঁতলানো খর্বকায় দেহের ভেতরে যতো …

সপ্তর্ষি বিশ্বাস-এর একগুচ্ছ কবিতা

প্রতিশ্রুত পাথরের গা’য়ে কথা ছিল ফোটাবো গোলাপ – আজ দেখি পাথরে পাথরে শ্যাওলা ও সময়ের দাগ …           প্রতিশ্রুতির পাথরগুলো প্রতিশ্রুতির পাথর গুলো পথের পাশে ছড়িয়ে …

কিছু কবিতা

আলতাফ হোসেন ১ এখন পরীক্ষায় কী হবে সাপখোপ হয়তো বেরবে যা টক্সিক,তাই তো নিদান হাসিমুখে আজ  ফিরে যান ঘাসমাটি না বলে এনেছে একদিন ওই দূর, দূর ফেরার, অচিন ২ রোদ, …

পাতাবাহার অন্ধকার

পাপড়ি রহমান মেঘ থইথই আকাশ, পাশে হাওয়া মেঘের ভেতর মেঘ হয়ে তার যাওয়া থমকে যেত, চমকে যেত মৃদু তনুর ভেতর ছাই হওয়া মন ধু ধু কিছুই সে আর পায় না …

দারা মাহমুদের একগুচ্ছ কবিতা

দারা মাহমুদ   প্রেম মানুষ নিজের থুতু নিজে খায় পেটের ভেতর তা আবার জারক রসের কাজ করে তবে থুতু একবার মুখ থেকে বেরিয়ে গেলেই তা আর খাওয়া যায় না   …

পাঁচটি কবিতা

সুবীর সরকার ঘুঙুর যে কোনো রাস্তায় যাও দেখবে মরণপণ লড়াই। নদীর ধারে কুড়িয়ে পাওয়া পাথর নদীতেই ছুঁড়ে দিচ্ছি রাত জাগি,টোকা মেরে শীত সরাই সেতুতে ওঠার আগে অবস্থান বদল আর ভ্রু-সন্ধির …

কবিতা:গরম জামা

শামীম আজাদ নদী ও নক্ষত্র পেঁচিয়ে পাথর কাঠিতে উন্মাদের মতো উল বুনে চলেছি নখ থেকে নকশা উঠে আসছে নতুন নতুন স্তবকে স্তবকে পড়ে যাচ্ছে শেয়ারবাজার, মনপোড়া নদী, টিপাইমুখ, শৈশবের ফেনী …

পাচটি কবিতা

স্নেহাশিস পাল গুপ্ত   মধুভ্রমরের তুলিতে পদ্মদিঘি কেঁপে-কেঁপে ওঠে। কোনও এক আরব-নর্তকীর নেশাতুর মুদ্রার মতো – কিঞ্চিত ঘাসে ঢাকা – ভাঙা পাড়ের সরু রাস্তাটা রূপকথা-রঙা ভোরের পেটে ঢুকে গেছে … …

একগুচ্ছ কবিতা

মাজুল হাসান জলাতঙ্ক নগর সন্ত্রস্ত করতে একটা পাগলা কুকুরই যথেষ্ট—এই কথা জানে না নগর-পুলিশের পুরোধা ব্যক্তি অথচ কৃষ্ণচূড়ার লাল দেখে অনবরত হুইসেল বাজছে দৌড়ে আসছে দমকলগাড়ি জোড় ছাড়িয়ে সঙ্গমকে পোরা …

কবিতার গ্রাফগদ্য

ফকির ইলিয়াস নৃত্যবান্ধব নদী ও নামগুলোর এক্সিট নৃত্যবান্ধব নদীর মুখ দেখে শুরু হয় আমার যাত্রা। এর আগে যারা চিনেছে দূরের পথ, তাদের ধূসর ছবি দেখে আমি থামিয়ে দিই প্লটযুদ্ধ। মাটির …

পাঁচটি কবিতা

আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ   ছুটি ১ রোদে শুকানো পাজামা গলে পড়ছে প্রজাপতি গন্ধমুকুরের কাচ আরো পয়দা আরো এলাহী। হলুদ গোলাপি মিলে আরো রঙধনু তীর তীর শিকারপাখি শীতব্রিজ করে কুয়াশা কেয়াকাহিনী …

দুটি কবিতা

মুগ্ধ চন্দ্রিকা প্রহর ভোরের দিকে তাকালে দেখি তার উষ্ণ সুরে আর, ধারালো কিরণে নেচে ওঠে এক অজানা পাথর দুপুরের মায়াবী মুখ থেকে ঝরতে থাকে হলদে বৃষ্টি ভেজা চাঞ্চল্যে অস্থির সে …

মলয় রায়চৌধুরীর কাব্যনাট্য

যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের পাত্রপাত্রী: ১. কাশ্যপ ফিকির। বৃদ্ধ। শবের বাগানের কেয়ারটেকার। ২. বদ্যিনাথ। যুবক। কাশ্যপ ফিকিরের ছেলে। ৩. বিভূতিসুন্দর। প্রৌঢ়। ষষ্ঠ শতকের সম্রাট হর্ষবর্ধনের গুপ্তচর। ৪. দেবযানী। ১৮ শতকের …

বিষামৃতে মাখাজোখা

রওশন আরা মুক্তা পুতুলজন্ম আমাকে পুতুল পেয়েছিলে, তাই না? ফর্সা গোলাপি মুখ আর ছাগ-শিশুর মতো দাঁত। কোনো কোনো দিন প্যান্ট থাকত না ফ্রকের নিচে। তোমার বুকে উঠে বসত পুতুল। জিহ্বায় …

দীপক চাইবাসায় কবে এসেছিল মনে আছে

সমীর রায়চৌধুরী বিটুর যখন প্যারাটাইফয়েড হয়েছিল ঠিক তার পরে, সেদিন মধুটোলার বাড়িতে গরুটার কালো বাছুর হয়েছিল প্রেসিডেন্সি কলেজের ড্রাগ খাওয়া ছেলেমেয়েগুলো ফিরে যাবার পরের রবিবার– কদিন পরেই ছিল রাসযাত্রা– সন্দীপনদার …

দীর্ঘ কবিতা: স্মৃতিলেখা

আর্যনীল মুখোপাধ্যায়   ছবি: ছায়াছবির স্থির চিত্র ব্যক্তিগত অ্যালবাম– আর্যনীল মুখোপাধ্যায়   যেখানে এক অবলোকন ধরা পড়েছে আর এক দেখায়     কেউ দেখছিলো সেই অবলোকন      পেছন থেকে ক্যামেরাবাস্তবের মনশ্চক্ষু  দিয়ে …

দীর্ঘ কবিতা: ভেকপুরাণ অথবা জনগণতান্ত্রিক ইস্তেহার

শামসেত তাবরেজী Since human nature is the true community of men, those who produce thereby affirm their nature, human community, and social being which, rather than an abstract, general power …

Back to Top