সৈয়দ তারিক
১.
পড়েছি যাবে না বলা প্রেমে,
পড়ি নি তাও তো ঠিক নয়,
অর্ধেক প্রেমন্ত আর নেভা আধখানা–
ভূতুড়ে সে বেড়ালের মতো মনে হয়।
তাকে আমি চাইছি তা নয়,
এমনও না– ভুলে আছি তাকে,
বেখেয়ালে বাঁয়ে যাই, সাথে সাথে ঘুরে যাই ডানে–
কেউ না পড়ুক–হায়– এমন বিপাকে।
২.
আমাকে পেরোতে হবে আরও কিছু নদী
আমাকে হারাতে হবে আরও ফুলবন
আমাকে এড়াতে হবে টেনে নেয় যদি
প্রণয়বিধুর কোনো মন।
আমাকে পোড়াতে হবে আরও কিছু সুখ
আমাকে ওড়াতে হবে আরও কল্পনা
আমাকে ঝরাতে হবে আরও যে-শোণিত
পরিমাণ তার অল্প না।
৩.
হাতিশূরা ফুল হৃদয় আমার
থমকালো এসে খাগড়ার জঙ্গলে,
মাখিয়ে দিয়েছ কোন মধু তুমি–
কামড়ায় যত পিঁপড়ের দঙ্গলে।
বড়শি-বাঁকা এ-স্তব্ধ হৃদয়
গিলেছে যে-মন সে যখন তড়পায়
পালিয়ে যাবার পথের মোড়েই
ছায়ার শরীর দুই গালে চড় খায়।
৪.
সে-বালিকা এই শহরেই আছে
যে-বালিকা আজ কোথাও নেই,
পর্দা সরিয়ে ডেকে নেব কাছে–
দুনিয়াতে এই প্রথাও নেই।
দুনিয়া গিয়েছে কে জানে কোথায়
কবর ফাটিয়ে সে উঠে আসে,
হৃদয়ে আমার সবুজ কাফন
সমাধিলগ্ন দীর্ঘ ঘাশে।
৫.
হৃদয়ে তোমার ঢুঁ মেরেই দেখি
আমাকেই আমি মারছি গুঁতা,
হেসে ওঠো তুমি বিমলানন্দে–
পালাবার কোনো পাই না ছুতা।
তুলে দিলে হাতে ফুলদানি ভাঙা–
‘নাও, জলাশয়ে খেল ছিনিমিনি,’
লজ্জায় লাল আমি খুঁজি দড়ি–
ডুবে মরে যদি ও-হৃদয় চিনি।
৬.
যদি সে হরিণী ফিরে যায় বনে
ডানা মেলে দ্যায় মুনিয়া,
তুমি কি তখনও খুলবে না চোখ
খাঁ খাঁ হতে দেবে দুনিয়া!
যদি-বা কখনও থরো-থরো চোখে
ভারি হয়ে ওঠা অভিমান
প্রান্তর ভরে বৃষ্টি নামায়
হবে না কি তাতে নির্বাণ?
৭.
রক্তজবা কি ফোটে নি প্রণয়ে?
গন্ধরাজ কি হাসে নাই?
পুঞ্জ পুঞ্জ আলোক জ্বালিয়ে
জোনাকিরা ভালোবাসে নাই?
ওড়া-চুমু ছুঁড়ে দেয় নি চন্দ্র?
ধরে নি বাতাস জড়িয়ে?
কৃষ্ণবিবরে চকমকি ঠোকো
সূর্যকে দূরে সরিয়ে!
৮.
কলাবতী ফুল গোসলে বিভোর
উঠানে তুমুল বৃষ্টিধারা,
ঘরকুনো এক সাপ ঘুমাচ্ছে–
আজব সে আর সৃষ্টিছাড়া।
সোনাব্যাঙগুলো কলকল করে
হেসে ওঠে গূঢ় রসিকতায়,
কুণ্ডলি আরও ঘন করে সাপ–
কাজ নেই আর বেশি কথায়।
Bah! ki sundor surela, medur, swagotoktimoy kobita! bhalo laglo. Obhinondon, Tarique!
খুব ভাল লাগলো। অনেক খুঁজে খুঁজে আপনাকে পাওয়া গেল। উন্মেষের সৈয়দ তারিক তো?