জেনের কবিতা: মেঘবৃষ্টির পথ
(ফিলিপ তোশিও সুডো, জেন সেক্স: দ্য ওয়ে অফ মেকিং লাভ, হার্পারকলিন্স ই-বুকস: ক্ষমাপ্রার্থনাপূর্বক)
নিশ্চলতার পথ
জেন-বনে, বরষার সনে
নিশ্চল বসে থাকা,
পড়ছে না শ্বাস…
বরষা আসছে তবু,
বেড়ে উঠছে ঘাস।
পিরিতের পথ
জেন-যৌনতার ফাঁকে ফাঁকে
চিহ্ন যত জমা হলো সুদিনে-দুর্দিনে—
কারা সব লিখতে যাবে, অতো দূরে,
জাপানে বা চীনে?
পথকে আরাধ্য জেনে, ফেলে-আসা পথের কিনারে
পড়ে-পাওয়া পেন্সিলের পুরাতন শিষে
লিখে রাখছি অচেনাকে—জেন-যৌনতার ফাঁকে ফাঁকে—
যেন সব মুছে ফেলতে পারি।
যেন ইরেজারে-ইরেজারে
মুছে ফেলা দাগ দেখে বুঝে নিতে পারে পথচারী,
কেন লোকে রক্তচিহ্নে প্রেমতন্ত্র লিখে
মুছে ফেলতে চায়, পুনরায় …
তা ছাড়া কে-ই বা হায়, ফিরে যায়
অত দূরে, জননের আদিম উচ্ছ্বাসে—
জেন-যৌনতার শান্ত, দুরন্ত মার্জিনে।
অদৃশ্যের পথ
জেন-বিশ্বে নিখিল নিশ্বাস
বস্তুর উপরিতল ভেদ করে চাও:
দেখো তো, দেখতে পাও, সত্তার শক্তিকে—
যে তোমার পদতলে জন্মাতেছে ঘাস,
তোমার আত্মায় যার দৃশ্যহীন নিখিল নিশ্বাস?
দৃশ্যের উপরিতলে ডুব দিয়ে পাতালে পৌঁছাও।
জলের অন্তরে দেখো: প্রকাশিত অতল আকাশ।
কামনার পথ
জেনের গতিবিধি
আমাকে নিয়ে হাসতে পারে
শুধু তোমার হাসি,
আমাকে পারে ভিজিয়ে দিতে
তোমার ঘনশ্বাস;
আমি তোমার ভাসতে থাকা লাশ—
প্রাণ-মদির তীব্র কামজল।
তোমাকে গান গাইতে পারে
আগুনমাখা বাঁশি,
তোমাকে পারে থামিয়ে দিতে
আমার স্তব্ধতা—
যতই বলি না-বলা সব কথা;
আমি তোমার স্থিতি, অচঞ্চল।
আমাকে হাওয়া বানাতে পারে
তোমার চলাফেরা,
আমাকে নিয়ে উড়তে পারে
রিকশা-প্রজাপতি
— থাকলে তুমি, ওগো আমার গতি—
তুমি আমার নিত্যচলাচল।
তুমিই শুধু হাসতে পারো
একা-পথের ঝড়ে;
তুমিই পারো মানাতে বশ
সর্বগামী ঘোড়া—
পরকীয়র গন্ধাগুনে পোড়া;
আমি তোমার শুদ্ধ কামানল।
মেঘবৃষ্টির পথ
জেন-সঙ্গম
মেঘ কি কখনো স্বাদ পায় বৃষ্টির?
বৃষ্টি কি থাকে মেঘের জমাট স্বাদে?
আমি তো মেঘেরই ভেতরে ঘুমিয়ে থাকি—
আমি জেগে উঠি বাদলের ধারাপাতে।
কবে যেন আমি গেলাম মেঘের দল—
দেখি মেঘলীনা-মগ্ননয়না মেয়ের
কালো চোখ-ভরা টলোমলো নোনা জলে
ফুটছে আলোক: স্বাধীন, অচঞ্চল।
আমি উড়ে যাই সে আলোর ডানা মেলে,
যেভাবে অক্ষি পাখি হয়ে উড়ে যায়;
আকাশে যেভাবে কাদম্বিনীর কালো
ভাসে— সেইভাবে ভেসে যায় গাঢ় ছেলে।
মেঘ চেয়ে আছে সাগরের চোখাচোখি,
আঁখিতে-পাখিতে বাড়ে বৃষ্টির বেগ;
আলগা দৃঢ়তা গলে গেল সব নুন-দ্রবণের নীলে—
চরাচরে জেগে থাকলো কেবলই মেঘ।
জমাট মেঘের পুষ্প তখন মগ্ন মোরগফুলে
একাকার— স্নানসিক্ত— জলের পূর্ণতা-সঙ্গতে।
আমি কি মেঘ, না আমিই মেঘলা পথ:
কে মূঢ় তখন সে কথা আকাশে তোলে !
অর্গাননের পথ
জেনের ছন্দ
আমি তোর ছন্দ তোলার তালেই আমার অর্গাজমে আসি,
আমি জেন-ছন্দ জেনেই হাসব জীবন-অর্গাননের হাসি।
রাবি: বৈশাখ ১৪১৮, মে ২০১১
jante chai
“দৃশ্যের উপরিতলে ডুব দিয়ে পাতালে পৌঁছাও।
জলের অন্তরে দেখো: প্রকাশিত অতল আকাশ।”
“আমাকে নিয়ে হাসতে পারে
শুধু তোমার হাসি,
আমাকে পারে ভিজিয়ে দিতে
তোমার ঘনশ্বাস;
আমি তোমার ভাসতে থাকা লাশ—”
“তুমিই শুধু হাসতে পারো
একা-পথের ঝড়ে;
তুমিই পারো মানাতে বশ
সর্বগামী ঘোড়া—
পরকীয়র গন্ধাগুনে পোড়া;
আমি তোমার শুদ্ধ কামানল।”
“মেঘ চেয়ে আছে সাগরের চোখাচোখি,
আঁখিতে-পাখিতে বাড়ে বৃষ্টির বেগ;
আলগা দৃঢ়তা গলে গেল সব নুন-দ্রবণের নীলে—
চরাচরে জেগে থাকলো কেবলই মেঘ।”
“আমি তোর ছন্দ তোলার তালেই আমার অর্গাজমে আসি,
আমি জেন-ছন্দ জেনেই হাসব জীবন-অর্গাননের হাসি।”
Darun! Sobguli kobitai bhalo laglo, Newton.
Obhinondon,byatikromi ei nobin Zen sadhok-ke!
আপনি আমার কবিতা পড়ে ভালো লাগার মন্তব্য করেছেন, মাসুদ ভাই!
আমার খুব আনন্দ হচ্ছে। আমার অনেক শুকরিয়া জানবেন।
ভালোবাসা …