প্রথম স্মৃতি
বহুকাল আগে
নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করেছিলাম
বাবার উপর প্রতিশোধ-পরায়ণ হয়ে।
বাবার কারণে নয়, আমার নিজের কারণেই—
শৈশবের শুরু থেকে আমি ভাবতাম
বেদনা মানে
আমায় কেউ ভালোবাসেনি
আমিই শুধু ভালোবেসেছি।
সুখ
শুভ্র সাদা বিছানায় একজন পুরুষ ও একজন নারী শুয়ে আছে;
এইতো সকাল হলো মাত্র
শীঘ্রই তাদের ঘুম ভাঙবে।
বিছানার পাশের টেবিলে ফুলদানিতে রাখা লিলিগুচ্ছ,
গলা গ্রীবা জড়িয়ে থাকা দ্যুতিময় সূর্যরশ্মি।
পুরুষটির পাশ ফেরা দেখছিলাম;
ক্ষীণ কোমল স্বরে সঙ্গিনীকে কাছে ডাকছে,
জানালার কার্নিশে কুঞ্জরিত পাখিদল,
একবার, দুবার…তারাও ডাকছে
নারীটি পাশ ফিরে সাড়া দিতেই পুরুষটি এঁকে দিলো
শরীর জুড়ে নিঃশ্বাসের উষ্ণ আলপনা।
আমি চোখ খুলতে দেখি তুমি নির্নিমেষ
তাকিয়ে আছো আমার দিকে।
পুরো ঘরজুড়ে সূর্যের আলোর লুটোপুটি…
সন্নিকটে আসতেই আমার কাছে তুমি একটা
দৃশ্যমান আয়না হয়ে উঠলে।
তুমি বললে- এবার নিজেকে দেখো।
কী স্থির শান্তি তুমি!
প্রজ্বলিত সূর্য আমাদের উপর আলো ছড়াতে
ছড়াতে নীরবে হারিয়ে গেলো।
ভালোবাসার কবিতা
বেদনা দিয়ে সবসময় কিছু না কিছু তৈরি হয়–
যেভাবে তোমার মা উল বুনন করেন।
প্রত্যেকটা লাল রঙের আবেশে মাফলার বুনতেন
বড়দিন অনুষ্ঠানের জন্য, তোমাকে সেটা উষ্ণতায় জড়িয়ে রাখত,
যখন তিনি বারবার বিয়ে করতেন, তোমাকে সঙ্গে রেখে,
কীইবা করার ছিল,
পুরোটা সময় জুড়ে মৃত্যু তাড়া করতো সেই সঙ্গীহারা হৃদয়কে।
বিস্ময়ের কিছু নেই,
তুমি ঠিক তোমার মতোই–
রক্তভয়ে ভীত, নারীরা একের পর এক ইটগাঁথা দেয়ালের মতো।
কেয়া ওয়াহিদ
জন্ম ও বেড়ে ওঠা বাংলাদেশে। দুইযুগ ধরে কানাডার বৃহত্তর টরোন্টতে বাস করছেন। বর্তমান চাকরি—ব্যাংক অফ মন্ট্রিয়লে। বিভিন্ন পত্রিকা, সংকলন ও লিটল ম্যাগাজিনে লিখেন তিনি।