প্রাসঙ্গিক
প্রেতাত্মার নির্বাসনে
রচিত হল আজকের এই কবিতা।
মুমূর্ষু রাত মন্থর গতি নিয়ে এগিয়ে আসছে
পাতার চাবুকে প্রথম প্রহর চমকে উঠে
আকাশের কিনারায় ঘুমিয়ে থাকা চোখে।
নিরুপায় আলো শেষ দৃশ্য দেখবে না আর
প্রতি সেকেন্ডের মূল্য হয়ে আছে সহস্র শতাব্দী।
এখন ঘুমিয়ে যাওয়া ভালো।
প্রেতযোনি বসে আছে চুপচাপ
কি করবে তাই যেন ভাবছে আমাকে নিয়ে।
ধৈর্য
হতাশায় আকাশটাকে মনে হয়
বঙ্গোপসাগরে ডুবিয়ে দেই
চোখের নোনা জলে ভিজিয়ে দেই
স্বার্থপর পৃথিবী।
আমাকে দেখে উনি তো চিন্তিত নন!
মোটেও চিন্তিত নন! উনি আমার আপন জন,
গুরু, বয়োজ্যেষ্ঠ, উনি কেন নির্বিকার ?
ঘৃণা করব না অভিমান করবো বুঝতে পারছি না ঠিক।
উনি হাসলেন,
বললেন, ধৈর্য ধর!
জীবনের আরও কিছুটা সময় পার করে বুঝলাম,
আসলে চলতে চলতে ওনারা বুঝে গেছেন
জীবন কখনো এক জায়গা থেমে থাকে না।
প্রতীপ
একটি রাত প্রতীক্ষায় আছে আমাদের!
আলো নেই,
আঁধার নেই,
অপেক্ষায় বিবর্ণ বাতাস।
মহাজ্ঞানী ঠিক স্বার্থ বুঝে চলে
কিন্তু
বুঝতে পারে না তারা অন্ধ।
এঁটেল মাটির দেশে আলু ফলাব বলে
চাষ করি রাতের পর রাত দিনের পর দিন
ঘামে সিক্ত হই জমি,
সিদ্ধি গাছ গুলো ঠিক বেড়ে ওঠে।
কতশত দিন চলে যায় রাতের আয়না।
ভৌতিক শব্দ
ভৌতিক শব্দের নিরবচ্ছিন্ন মুহূর্তগুলো
আমাকে আজো কাঁদায় দিনভর।
অলৌকিক স্মৃতির ক্যানভাসে দুপুরের কড়া রোদ,
ঝলসানো ছায়াছবির একের পর এক দৃশ্য,
ঝাঁ ঝাঁ দুপুরে চা-স্টলের ভাঙ্গা চুলোর লালায়িত আগুন
স্পর্শ করে প্রিয়তমার ঠোঁট,
চুরুট জ্বালাবার আগেই তার সর্বাঙ্গ ছুঁয়ে যায় এক ফাল্গুনী বাতাস।
চুমুর বিষে অবশ হয়ে আছে সে
কোন এক বীর রাজাকার
তাকে বীরাঙ্গনা করে চলেছে কত কত দিন।
সে ভূমিষ্ঠ করে স্বাধীন দেশের
স্বাধীন সু-পুরুষ।
চিঠি
বেনামী চিঠিটা আকাশে বিপ্লব ঘটিয়ে
আমার উঠোনে যখন এলো তখন বিকাল।
হর্ন বাজিয়ে রিকশাওয়ালারা ঘরে যাচ্ছে
পাখিদের সন্ধ্যা ভোজন তখনো শেষ হয়নি
বাকি আছে ফড়িং আর মৌমাছির বৈঠককাল।
আমার তখনো চিঠিটা খোলা হয়নি
যখন মেয়েটা আর্ত চিৎকার করে বলল তাকে ধর্ষণ করেছে
কয়েকজন বেঈমান ও একজন প্রেমিক।
আজকাল দৈহিক মিলনের জন্য রাত্রি প্রয়োজন হয় না
বলেছেন এদেশের বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ,
তবুও রাত বেকার আবরণে আমার ঘরে আসে বার বার,
আমার আবার প্রেমিকা নেই!
বুদ্ধিমান মেয়েগুলো ঠিক বুঝে গেছে আমি বোকা।
বেনামী চিঠিটা তখনো খোলা হয়নি,
যখন নর্দমায় ডুবে থাকা খাদ্য তুলে খায় বেনামী মানুষ
তরল ঝোলের মতো টপটপ ঝরে নোনা জল।
বেনামী চিঠিটা তখনো খোলা হয়নি
যখন সব মহিলারা তেঁতুল হয়ে যায়
আমার বান্ধবী সহ।
বেনামী চিঠিটা তখনো খোলা হয়নি
যখন ৫২, ৭১ এর সব দালাল কেঁদে কেঁদে বলে,
আমার সোনার বাংলা
আমি তোমায় ভালোবাসি।
লেখক পরিচিতি
শাহীদ লোটাস (Shaheed Lotus) বাংলা ভাষার লেখক— কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ ও ছোটগল্প লেখেন । জন্ম ১৫ জ্যৈষ্ঠ সোমবার সকাল ৮টায় ।
প্রকাশিত গ্রন্থ :
উপন্যাস : বেদনার বাঁশি, কলকি সুন্দরী, আরশি, ঘৃণা ।
কাব্যগ্রন্থ : একুশ ও মুক্তির গান, ‘মুদ্দাফরাশের কবিতা।
আত্মজীবনি : ১৮ মার্চ ২০১৯,
মেইল : [email protected]