ভেঙে গেলে সান্নিধ্যের সাঁকো
ডানা ঝাঁপটায় অস্থির জল
ঘুম আর জাগরণের মধ্যে—
স্নান সারে নির্জনতা
নাকফুলে নেমে এলে সন্ধ্যাতারা
জাহাজ ডাকে দূরের বন্দরে
প্রতি সন্ধ্যায় একটি খরগোশ
ঢুকে পড়ে পাতাল সিঁড়িতে
২
পরম গতিতে ছুটে চলে অনুভূতি
ফিরে ফিরে আসে ভ্রাম্যমাণ ব্যথা
আমাকে ঘুমাতে দেয় না স্বাপ্নিক—
দু’টি সামুদ্রিক চোখ, কাঁপে দৃষ্টি
থরথর— বসন্তের অস্থির কুহক
লাল, কালো টিপে ভরে ওঠে—
স্নানঘরের আয়না, তোমার যে
চোখ মিলেছে আমার চোখে
ছায়াপথের গভীরে ক্ষীণ তারা
বেজে ওঠে কাঁটা শঙ্খের বাঁশি
তিন ধ্বনিতে জীবনের উচ্ছ্বাস
থেকো না নুলিয়া মেয়ে, দূরে দূরে
শঙ্খের গভীরে সমুদ্রের হাহাকার
৩
পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে
যে মুহূর্তে উচ্চারিত হয়—
একটি শব্দ— ‘প্রেম’
জন্ম নেয় নতুন একটি নদী
বাতাসের নেশায় মাতাল পাখি
জাহাজের প্রেমে ছোটে দিগভ্রান্ত
বিষণ্ণ সঙ্গীতে আচ্ছন্ন বন্দর—
আঁশটে গন্ধে উদ্ভ্রান্ত নিঃশ্বাস
সমস্ত শরীর জুড়ে ফোটে প্রেমচোখ
প্রেমে পড়লে মানুষ আনারস হয়ে যায়
চুম্বনের শব্দের মত সন্ধ্যা নামছে
দিগন্তের কাছে অঙ্গ ছুঁয়েছে অঙ্গে—
নদীর বুকে কত যে সুপ্ত অভিমান!
শাহেদ কায়েস
মূলত কবি। জন্ম ঢাকায়, ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭০। পড়াশুনা কম্পিউটার বিজ্ঞানে, দক্ষিণ ভারতের চেন্নাই-এ, এরপর দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়াংজু শহরে, চোন্নাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ‘হিউম্যান রাইটস’ বিষয়ে মাস্টার্স। এখন পুরোপুরি সামাজিক প্রকৌশলী, কাজ করেন মানুষের অধিকার নিয়ে। কবিতায় হাতেখড়ি নব্বই দশকের শুরুতে। থাকেন নিজ গ্রাম সোনারগাঁয়। শখ ভ্রমণ, সুযোগ পেলেই ঘুরে বেড়ান দেশ-বিদেশ।
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ:
বাঁক ফেরার অভিজ্ঞতা (দোয়েল প্রকাশনী, ১৯৯৯)
চুড়ায় হারানো কণ্ঠ (মঙ্গলসন্ধ্যা, ২০০৩)
মায়াদ্বীপ (ঐতিহ্য, ২০১৫)
মঙ্গলসন্ধ্যা প্রেমের কবিতা (সম্পাদিত, ধ্রুবপদ, ২০১৭)
কৃষক ও কবির সেমিনার (অভিযান, একুশে বইমেলা, ২০২০)
নির্বাচিত কবিতা (ঐতিহ্য, একুশে বইমেলা, ২০২০)
সহজিয়া প্রেমের কবিতা (অভিযান, একুশে বইমেলা, ২০২১)
অন্যান্য গ্রন্থ:
এশিয়ার বারটি দেশের মানবাধিকার বিষয়ে (মে এইটিন মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন, দক্ষিণ কোরিয়া, ২০১৫)
বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলম স্মরণগ্রন্থ (ঐতিহ্য, একুশে বইমেলা, ২০২০)