অস্ত্র ভাঙার মুহূর্ত
প্রথম পাঠের বর্ণগুলো হানা দিচ্ছে
অ- তে অজগর কানের কাছে
ফোঁস-ফোঁস করে
আর ঈ- এর ঈগল এসে ছোঁ মেরে
নিয়ে যায়
ঋ-বর্ণটি সবাইকে ঋষি বানাতে ব্যস্ত
কিন্তু ক-সমস্ত শক্তি দিয়ে
কবি হওয়ার মন্ত্র দেয়
গ-বলছে সমাজে বাঁচতে হলে
সব ছেড়ে ছুঁড়ে গাধা হও
সর্বংসহা হও,টু -শব্দ করো না
নত হতে শেখো
কিন্তু ঘ-যারপরনাই ক্ষ্যাপাটে
সে ঘাড় মটকে দিতে চায়
কাপুরুষ বলে
দ -দেয়ালের জামা পরিয়ে দেয়
বাড়ির গায়ে আর
ফ-সব ছিঁড়ে ফাঁক করে দিলে
সূর্য ঢুকে পড়ে
ট- খুব টানাটানিতে ওস্তাদ
বাড়িটির জরায়ু টেনে লম্বা করে ব্রহ্মাণ্ড অবধি
দ্যাখো কাকে বলে অসীম শূন্যতা
বরাবরের মতোই ঠ সিগারেটের মাথায় আগ্নেয়গিরি নিয়ে বসে থাকে
উচ্চারিত হবার সুযোগ বঞ্চিতদের মন্ত্র দেয় ঐক্যবদ্ধ হতে
স-স্বাধীনচেতা-হাতে তাঁর
এ কে ফরটিসেভেন – দিগন্ত ফুটো করে দেবে
সে মুহূর্ত পরমতসহিষ্ণু ভ-খৃস্টের নামে
ভালোবাসার স্তনের চাপে অস্ত্র
ভেঙে গুড়ো করে দেয়
রেজাউদ্দিন স্টালিন
রেজাউদ্দিন স্টালিন (জন্ম ২২শে নভেম্বর, ১৯৬২) কবি, লেখক ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব। তিনি আশির দশকের অগ্রগণ্য ও সফল কবি হিসেবে বিবেচিত। তার রচিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা প্রায় পঞ্চাশটি। কবিতায় অবদানের জন্য তিনি ২০০৬ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
রেজাউদ্দিন স্টালিনের উল্লেখযোগ্য হচ্ছে: “পূর্ণ্যপ্রাণ যাবে”-১৯৮৩ সাল, “দাঁড়াও পথিকবর”-১৯৮৬ সাল (একটি যৌথ প্রকাশনা), “ফিরিনি অবাধ্য আমি”-১৯৮৫, “ভেঙে আনো ভিতরে অন্তরে”-১৯৮৭, “সেইসব ছদ্মবেশ”-১৯৮৯, “আঙ্গুলের জন্য দ্বৈরথ”-১৯৯২, “আশ্বর্য আয়নাগুলো”-১৯৯২, “ওরা আমাকে খুঁজছিল”-১৯৯৭, “সম্ভাবনার নিচে”-১৯৯৬, “পৃথিবীতে ভোর থেকে দেখিনি কখনো”-১৯৯৭, “আশীর্বাদ করি আমার দুঃসময়কে”-১৯৯৮, “হিংস্র নৈশভোজ”-১৯৯৯, “আমি পৃথিবীর দিকে আসছি”-২০০০, “লোকগুলো সব চেনা”-২০০১, “নিরপেক্ষতার প্রশ্ন”-২০০২, “পদশব্দ শোন আমার কন্ঠস্বর”-২০০৩, “পুনরুত্থান পর্ব”-২০০৪, “অবিশ্রুত বর্তমান”-২০০৫, “মুহুর্তের মহাকাব্য”-২০০৬ সাল, “অনির্দিষ্ট দীর্ঘশ্বাস”-২০০৮, “ভাঙা দালানের স্বরলিপি” ২০০৯, “কেউ আমাকে গ্রহণ করেনি”-২০০৯ সাল। রেজাউদ্দিন স্টালিনের কবিতা ইংরেজি, হিন্দি, উর্দু, উড়িয়া, রুশ, জার্মান, চীনা, জাপানী ও ফরাসী ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
রেজাউদ্দিন স্টালিন দীর্ঘদিন নজরুল ইনস্টিটিউটের উচ্চপদে কর্মরত ছিলেন।