অভিলাষ
ভাঙছে
কাটছে
পুড়ছে
ডুবাচ্ছে
গুড়িয়ে দিচ্ছে,
তোমাকে।
তবু তুমি
তার মুখ থেকেই
‘স্টে টিউনড’
চাইছো শুনতে!
সে
আগলে রাখছে
জাপটে ধরছে
চুমুর দরিয়া খুলছে
মান করে দূরে গিয়ে
ফিরে ফিরে আসছে,
আমৃত্যু-আজীবন
সঙ্গী থাকার
আকুল আশ্বাসে
ছাড়ছে না কোনোমতে
তোমাকে;
তোমারই একান্ত
ব্যাকপেইন সে!
হয়তো
খাওয়াদাওয়া চলছে
তৈরি হচ্ছে
নতুন ক্ষুধার অবকাঠামো।
ঘুমিয়ে পার করে দিলাম
এতগুলো বছর
চোখে চোখে
নতুন নিদ্রার পাঁয়তারা।
রতিক্লান্ত দেহ তল্লাশ করে
নতুন রতির ফাঁকফোকর।
বৃদ্ধ ভাষায় ভরা
পৃথিবী মরে গেলে
জন্ম নেবে ০১টা নতুন কবিতা।
ছাতিমবতী
তোমার কাছে যেতে
পার হতে হতো
ছাতিম ফুলের সেতু।
সেতু ভেঙে গেছে
ফুরিয়েছে সব রহস্যের মৌ।
ছাতিমের গন্ধের অন্ধকারে
কী যেন অক্ষরের আলো;
তোমার-আমার
সেতুভাঙার স্মারকগ্রন্থ।
ঘুমের ভাষাভঙ্গি
রাতের হৃদয় চলে গেছে কতদিকে!
বাঘাবাড়ি, বনপাড়া, ব্যাধির বন;
স্বপ্নের দহনঋতুতে ঘামতে ঘামতে
তোমার নিদ্রিত এই রাস্তার নোঙর
কুয়াশাকুটির ও মেঘের মহল।
প্রতিটি জাগরণ চোখের কেতুর,
ফেলে আসা রাতের দাঁত আর
স্বপ্নের এঁটোবাসি মাজাঘষা।
সূর্যের নিচে বসে পাথর ভাঙতে
তবু হে আমি, কেন তুমি
বারবার ছেড়ে আসো ঘুম?
চাঁদে ছাওয়া কাদার কোল??
…
পিয়াস মজিদ
পিয়াস মজিদ সমকালীন বাংলা কবিতায় অন্যতম তরুণ কবি। কবিতার পাশাপাশি গদ্যেও পারদর্শী। সাহিত্যের নানা শাখায় ইতোমধ্যেই নিজের মেধা-মননের পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর জন্ম ১৯৮৪ সালের ২১ ডিসেম্বর, চট্টগ্রামে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে সম্মানসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে কাজ করছেন বাংলা একাডেমিতে।
কবিতার ও অন্যান বই: নাচপ্রতিমার লাশ, মারবেল ফলের মওসুম, গোধুলিগুচ্ছ, কুয়াশা ক্যাফে, নিঝুম মল্লার, প্রেমপিয়ানু, ক্ষুধা ও রেস্তোরাঁর প্রতিবেশী, নক্ষত্রের নিশ্বাস, বসন্ত কোকিলের কর্তব্য, গোলাপের নহবত। এছাড়াও তার রয়েছে বেশ কয়েকটি গদ্য, সাক্ষাৎকার ও গবেষণাবই।
পুরস্কার ও সম্মাননা: এইচএসবিসি-কালি ও কলম পুরস্কার ২০১২, কলকাতার আদম লিটল ম্যাগাজিন প্রদত্ত তরুণ কবি সম্মাননা ২০১৬, সিটি-আনন্দ আলো পুরস্কার ২০১৬, শ্রীপুর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার ২০১৬, দাঁড়াবার জায়গা সাহিত্য পুরস্কার ২০১৭, কলকাতা। ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার ২০১৮, ইতিকথা সাহিত্য সম্মাননা ২০১৯।
এছাড়াও, ২০১৫-তে আমন্ত্রিত হয়ে অংশ নিয়েছেন চীনে অনুষ্ঠিত চীন-দক্ষিণ এশিয়া-দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া লেখক সম্মেলনে।