ইমরুল হাসান
‘পৃথিবীতে আজ আর হয় নাই কোনো ভাত রান্না’
— এই কথা শুইনাই বিনয় মজুমদার কইলেন,
‘ফাইজলামি করো, মিয়া!
আর আমারে নিয়া কেন এত টানাটানি?
আমি ত নির্বিবাদী, তথাপি গণিতজ্ঞ
এবং গায়ত্রীরে ভালবাসি, এবং ভালবাসি বলেই
আমি রেললাইনের ধার দিয়া হাঁটি
চা’য়ের দোকানে গিয়া চা খাই;
গোপনে মাওবাদীদের বাসনা’রে উজ্জীবিত করি
সাহস থাকলে উৎপল’রে গিয়া বলো;
যেহেতু তার থাকতে পারে আন্ত-রাষ্ট্রীয় সৈন্য-সামন্ত
তুমি কি তারে ডরাও, এই জন্য?’
আমি কইলাম, ‘উনার পৃথিবী ত ভূ-মণ্ডল আক্রান্ত
ট্যাপ-খাওয়া বাস্তবতার ভিতর
গড়াইয়া গড়াইয়া পইড়া যাবে
ভাতের সব ফেনা;
জাউ’রে কি তাইলে ভাত বলবো আমরা?
মানে, শ্বাস, অর্গানসমুহ… ইত্যাকার মাইনা নিয়া?
কানা-মামা ত ভালো না নাই-মামা’র থিকা…’
শু্ইনা বিনয় মজুমদার ঠোঁট চাইপা হাসেন,
বলেন, ‘জিগাও না তুমি আগে, জিগাও’
গিয়া দেখি কি, উৎপল ত ভাত-ই খান না
বাদামপাহাড়ের নিচে বইসা ঘাই হরিণের বারবিকিউ করতেছেন
পেঙ্গুইনের স্যুপ নাই বইলা একটু মন খারাপ হয়তো
কইলেন, ‘আজেবাজে প্রশ্নের উত্তর আমি করি না…’
তখনই দেখি হঠাৎ লাজুক কবিতা হেঁটে যায়
তার লেজ ধইরা রণজিৎ দাশের কাছে যাই,
তার সবাক নীরবতারে জিগাই; উনি শুইনাই রাইগা যান,
লাজুক কবিতা ত আসলে মধ্যবিত্ত-অভিমান
উষ্মাও বর্তমান; বলেন ‘এইটা কেমন কথা,
ভাতের কবিতা লিখলেই কি সম্ভব ভাত রান্না করা?
দাঁড়াও, এইসব অহেতুক বাহানা’র বিরুদ্ধেও কবিতা লিখবো আমি,
একটা গোটা কবিতার বইয়ের প্ল্যানও করা যাইতে পারে…’
আমি কইলাম, ‘তাইলে আমারে মাফ কইরা দেন আপনেরা,
কবিতাই আর লিখবো না!’
তখন উনারা তিনজনই আবার বাক বাকুম কইরা উঠলেন,
করতেই থাকলেন…
এবং একা না, উনারা তিনজন
উনাদের সঙ্গী-সাথী আরো অজস্র, অসংখ্য, অপলক কবিতা-পাঠক
সবারই কথার প্রতিধ্বনিতে চারপাশ গমগম
এই ভীড়ের ভিতর কে যে কার প্রতিধ্বনি
সেইটা বোঝার আর কোনো উপায় নাই তখন!
‘তখন উনারা তিনজনই আবার বাক বাকুম কইরা উঠলেন,
করতেই থাকলেন…
এবং একা না, উনারা তিনজন
উনাদের সঙ্গী-সাথী আরো অজস্র, অসংখ্য, অপলক কবিতা-পাঠক
সবারই কথার প্রতিধ্বনিতে চারপাশ গমগম’/ইমরুল হাসান
ওনাদের ছোট করা আছে এইখানে। আপনের কবিতার তেজ এইভাবে প্রকাশ কইরা নিজের কবিতারেও ছোট করলেন।
‘বাক বাকুম’ শব্দটার জন্য ‘ছোট’ লাগতেছে? অন্য শব্দ দিলে কি সেইটা চেইঞ্জ হয়া যাবে? আমার মনে হয়, হবে। তবে ‘ছোট’ বা ‘বড়’ বিষয়টা নিয়া আমি খুব একটা চিন্তিত না। আমার ধারণা, উনাদেরও কবি হিসাবে খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা না।
আর আমার সমস্ত কবিতা’র ভিতর এইটা আসলেই একটা ‘ছোট’ কবিতা… এই কবিতা ‘বড়’ হয়া গেলে আমার কবিতা লিখতে সমস্যা হওয়ার কথা…
কিন্তু তার মানে সম্ভবত এইটা না যে, বিষয় হিসাবে এইটা বেশ ‘ছোট’।