তমিজ উদ্দীন লোদী
মৃত্যু শুয়ে থাকে
“Death is the unescapable reality, the one thing any man may be sure of; the
only security…” Hemingway
নিষ্প্রদীপ করা এক রাত্রির মমতায় আমরা গোল হয়ে বসে আছি মাঝখানে মৃত্যু শুয়ে আছে
সারারাত টিউবলের শব্দ, ঝনঝন শেকলের শব্দ, শব্দ হেনে যায় শুধু নিঃশব্দে পাতা ঝরে,
পাতা ঝরে, বৃক্ষরা গোঙায়।
খুব চুপচাপ হরিণীরা জলে নামে এক চিলতে জ্যোৎস্নাম্লান প্রদীপের মতো কাঁপে হলুদ ঘাসের
উপর রাতচরা পাখি হাঁটে, পেঁচারা ঝাঁপ দেয় গাঢ় অন্ধকারে আর নিঃশ্বাসের মতো শীতল
ক’ফোঁটা শিশির ঝরে যায়।
মৃত্যু শুয়ে থাকে বৃত্তের ভেতর হুলস্থূল হাওয়া, ধ্বনি-প্রতিধ্বনি, ধ্বংসস্তূপের তলায় বিষণ্ণ
বাতাসে, অপ্রেমে, ক্ষুধায় মৃত্যু শুয়ে থাকে নির্বিকার, ধুসরতাধৃত।
অহোরাত্রি জৈবিক মানুষ
খুব দ্রুতবেগে সরে যাচ্ছে দৃশ্যাবর্ত। অন্বেষার প্রক্রিয়ায় জন্ম নিচ্ছে নতুন
টেরাকোটা। অতীতকে অতিক্রম করে খুব উৎসাহে চাখা হচ্ছে সৃজনাত্মক
জীবনের সমাচার। আর আমাদের পানসি নৌকা থেকে আবারো উড়াল দিচ্ছে লালন-হাছন-
করিমের মনুয়া পাখি। স্বপ্নাতুর চোখ থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ছে
কৈবর্তের জাল।
হারিয়ে যাওয়া অতীত থেকে স্তব্ধ নীল আলোয় নুয়ে পড়ছে লাউডগা,
বট, অশথের ঝুরি। খুব পাখসাটে উড়ে যাচ্ছে নীল কাকাতুয়া। দুপুরে ধূসর ঘুঘু,
শাদা বক, শরতের মেঘ। গোপন গভীর প্রেম, কিশোর রবীর ঠোঁটে কাদম্বরীর
চুমু।
পেনড্রাইভ থেকে সিডিরম। ফেসবুক থেকে ইউটিউব। তবু মানবিক প্রেম খাবি
খায় আশ্লেষে। খাবি খায় শরীরী কামজ ঘোরপাকে। বীজাণুর মতো ছড়িয়ে যায়
মেঘাবাইট গিগাবাইটগুলো। মানুষেরা থেকে যায় অহোরাত্রি জৈবিক মানুষ।