একটি হাইপার রিয়াল পদ্যনাটিকা
মলয় রায়চৌধুরী
পরিদৃশ্য:
পায়রোটেকনিকে তোলা রঙিন ঝড় ( গাঢ় লাল, কমলা, হলুদ, সবুজ, নীল, বেগুনি এবং গোলাপি । রঙগুলো প্রতিটি নারীর ভাবকল্প। )
সাত রঙের ঝোড়ো আলো (যে-রসায়নে আলো গড়ে উঠেছে: লিথিয়াম ক্লোরাইড, ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড, সোডিয়াম ক্লোরাইড, কপার সালফেট, কপার ক্লোরাইড, পটাশিয়াম সালফেট এবং পটাশিয়াম ক্লোরাইড)
পাত্রপাত্রী:
১.কুলসুম বানু (১৪ বছর, কালো, মোটা, সলমা-সিতারার কাজ করা গাঢ় লাল সস্তা চুড়িদার) ২.নন্দিতা সিনহা (১৯ বছরের তরুণী, ফর্সা, সুন্দরী, ঢ্যাঙা, অভিমানী, কমলা কটন শাড়ি)
৩.ভুবনমোহিনী রাণা (২১ বছরের নেপালি যুবতী, সুশিক্ষিতা, হলুদ কাঞ্জিভরম), ৪. চিত্রাঙ্গদা বসু (৩৫ বছরের বাঙালি যুবতী, যৌনকর্মী, সবুজ সিনথেটিক শাড়ি)
৫. ক্যারল নোভাক (২৬ বছরের মার্কিন যুবতী, মাদকাসক্ত, নীল টপ ও ফেডেড জিন্স), ৬.অবন্তিকা রায় (৩০ বছরের বাঙালি যুবতী, প্রেমে উন্মাদ, বেগুনি কল্কার জামদানি শাড়ি),
৭. শ্রীমন্তিনী সেনগুপ্ত (২৭ বছরের বাঙালি যুবতী, হলুদ টপ ও জিন্স পরা; পিঠে ছড়ানো কালো চুল।) ৮. চারজন বৃদ্ধের দল (ধুতি ও গেরুয়া পাঞ্জাবি পরা । পায়ে কথ্থক নাচের ঘুঙুর এবং প্রতি সংলাপে কথ্থকনাচের ভঙ্গীতে পাক খান ও গোড়ালি ঠোকেন । দৃশ্যকেন্দ্রে তাঁরা শবের ডান দিকে সার বেঁধে দাঁড়ান।) ৯. চারজন বৃদ্ধার দল (লালপেড়ে সাদা শাড়ি ও ব্লাউজ। প্রতি সংলাপে ভারতনাট্যমের মুদ্রায় হাত নাচান ; সেসময়ে মৃদঙ্গ বাজে। দৃশ্যকেন্দ্রে তাঁরা শবের বাঁদিকে সার বেঁধে দাঁড়ান।)
১০. একজন টাকমাথা আউলবাবু (শার্ট-প্যান্ট পরা, কাঁধে ঝোলা, কথা বলার সময়ে হিপ-হপ নাচেন ; হিপ-হপ নাচের সময়ে নেপথ্যে বাজতে শোনা যায় গিটার, ভায়োলিন, পিয়ানো, বাস ও ড্রাম।)
১১.একজন যোদ্ধা
[ধুলিকণাদের নিয়ে ঝড় ওঠে, প্রতিটি রঙিন
বালু, তাদের সাতটি আলোকণা একবেগে দৃশ্যকেন্দ্রে ছুটে
যায়, ঘুর্ণিকেন্দ্রে গিয়ে মানব আকার মেলে ধরে
উলঙ্গ যোদ্ধার, অবিন্যস্ত চুল তার, শ্বেতশুভ্র দাড়ি-গোঁফ,
ঋজু ফর্সা । আচমকা চারিদিক থেকে ছয়জন
কিশোরী-তরুণী আবির্ভুত হন, ঘিরে ধরে বৃদ্ধটিকে খুন
করে ছোরা ছুরি তরোয়াল দিয়ে আর
উধাও একইভাবে হন । তারপর চারিদিকে শব্দহীন ঝিঁঝিডাক।
যোদ্ধাটির শব পড়ে থাকে বহুক্ষণ। মৃতদেহ থেকে ওঠে
ছয়রঙা ধোঁয়া ; কিছুক্ষণ পর নারীর আকার পায় তারা–
সেই নারীদের, যারা লোকটিকে খুন করে চলে গিয়েছিল।
এ-সময়টুকুতে সরোদে রাগ দুর্গার আরোহ শোনা যায়।]
কুলসুম:
(উবু হয়ে যোদ্ধার হাত নিজের দুহাতে নিয়ে):
আমি এই বালকের হাত দুটি কেটে নিয়ে যাব:
আমিই দিয়েছি একে প্রথম ছোঁয়ার নিরাময়
এই দুটি হাত দিয়ে আমার তাপিত তাড়নায়
শান্তি দিয়েছিল এ-বালক, অন্ধকারে হাঁস ও মুর্গির মাঝে
যখন দুজনে মিলে নিজেদের কৌতুহলী-উমে শিখিয়েছি
কী ভাবে প্রেম পেলে দুধখোর প্রাণীর জন্ম হয়।
এর হাত আমারই দ্বারা প্রভাবিত ।
এর হাত কখনো কচলায়নি গিয়ে নন্দনের বনানীতে
এতই ভার্জিন এর হস্তরেখাগুলো।( চপার দিয়ে
বাঁ হাত কাটতে উদ্যোগী হয় । বৃদ্ধদলের প্রবেশ )
বৃদ্ধদল:
(কোরাস, কুলসুমের দিকে তাকিয়ে ):
নিচ্ছ যদি ছোঁয়াচ নিও,
শুধুই নিজের ছোঁয়াচ নিও
অন্য নারীর ছোঁয়াচগুলো
হাতেই রেখো যেমন ছিল
তোমার তাতে নেই অধিকার,
তাদের নিও যারা তোমার
গোপন-গলি চরতে এলো,
প্রভাব নিয়ে গুলে খেলো !
(নাচতে নাচতে ঢোকে আউলবাবু নামে এক লোক।
লাশের পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে কাঁধের ঝোলা থেকে
পেন ও ডায়েরি সঙ্গোপনে বের করে)
আউলবাবু:
(স্বগত-সংলাপ, নাচতে-নাচতে)
প্রশ্ন হল এ কি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে এসেছে ?
যতদূর জানি ব্যাটা তো মেটিং গেমের ওস্তাদ
শব্দে-শব্দে মেটিং করে বাক্যে বাক্যে মেটিং করায়
অথচ ছিল না এর বেঘো-মা বাপ-হেলিকোপ্টারি !
(বৃদ্ধদলের প্রস্হান ও বৃদ্ধাদলের প্রবেশ )
বৃদ্ধাদল:
(কোরাস, কুলসুমের দিকে তাকিয়ে ):
তারপরে তুই যাদের ছুঁলি
তারা কেন বঞ্চিত রে
তাদের হকে দেয়াল তুলে
একলষেঁড়ে বায়না ধরে
বাসি প্রেমের টাটকা বুলি
ঝাড়িস কিসের জন্য রে ।
আউলবাবু:
(স্বগত-সংলাপ, নাচতে নাচতে)
তবে বুঝতে পারছি যোদ্ধা ছিল অতীব অশ্লীল !
নয়তো এমন ল্যাংটো পড়ে থাকে কেউ ?
পার্টি-অ্যানিমাল ছিল দলছুট বাঙালি-পুঙ্গব ।
(বৃদ্ধাদলের প্রস্হান )
কুলসুম:
(চলে যেতে থাকা বৃদ্ধাদলের উদ্দেশে )
কী হবে ওসব শুনে ! কাঁচা কৌমার্যের আরক্তিম
যা ছিল প্রথম রঙ তা তো আমারই অবদান
তাই আমি হাত দুটো নেবো; বলুক যার যা ইচ্ছা
এর হাত আমার দ্বারাই প্রভাবিত।
(বৃদ্ধদল ও বৃদ্ধাদলের প্রবেশ )
বৃদ্ধদল:
(কোরাস, বৃদ্ধাদলের উদ্দেশে ):
তা না হয় হল : কিন্তু কী হল শেষকালে ?
আউলবাবু: (স্বগত-সংলাপ, নাচতে-নাচতে )
কিন্তু যোদ্ধা লোকটি কি দ্রোহী না বিপ্লবী ?
রাষ্ট্রের মালিকদের জানিয়ে রাখার প্রয়োজন
বলা তো যায় না শবেরাও আইন শৃঙ্খলা ভাঙে এই দেশে ।
বৃদ্ধাদল:(কোরাস, বৃদ্ধদলের উদ্দেশে ):
তা না হয় হল, কিন্তু কী হবে শেষকালে ?
আউলবাবু:
(স্বগত-সংলাপ, নাচতে-নাচতে )
বদনাম লড়াকুর পচালাশ নেবে কি দেশের ইতিহাস ?
হতেই পারে না ; সামলাবে আমাদের পোষা খাদিম-মুন্সিরা
জলজ্যান্ত মাটিতে পোঁতার আগে টেঁসে গেল শালা ।
(বৃদ্ধদল ও বৃদ্ধাদলের প্রস্হান )
নন্দিতা:
(১৪ বছরের কিশোরীটির দিকে তাকিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে
আর চপারসুদ্ধ হাত ধরে তাকে দাঁড় করায় )
কে রে তুই কচিখুকি ? এ আবার বালক কোথায় ?
মৃত তবু কত লোভনীয়-দেহ তরতাজা টাটকা যুবক ।
নিজের চেহারা দ্যাখ আর এ-পুরুষ্টু লোকটাকে
কোথাও কি কোনো মিল আছে ? ছোটোলোকি
কালো মোটা বদগন্ধ বেঢপ আদল তোর ! এই
সুপুরুষ যুবা ককখনো ভুলেও ছোঁবে না তোর
টোপ-ফেলা গোপন নোংরামি। শুধু দুটি হাত নয়
এর দুটি ঠোঁটও আমার। স্বাদও দিয়েছি
আমি বুকের সুগন্ধী ঘামে বনপ্রান্তে মাদুরের
গ্রীষ্মবকাশের ঘাসে আমারই অধিকার এর
নোনতা অধরে; রক্তহীন কেটে নিচ্ছি
এর ঠোঁট আমারই দ্বারা প্রভাবিত।
আজ অব্দি যে কথা বলেছে সব আমারই প্রভাবে ।
(ছুরি বের করে ঠোঁট কাটতে ঝোঁকে । বৃদ্ধদলের প্রবেশ )
বৃদ্ধদল:
(কোরাস, নন্দিতার উদ্দেশে ):
নিচ্ছ যদি চুমুই নিও
ওই ঠোঁটে তো আরও অনেক
নারীর মোহের কান্না-হিসেব
গরিব-ধনী গৌরী-শ্যামা
ঘূণপোকাদের দেখা খোয়াব
বাঁচিয়ে নিজের হিসসা নিও।
আউলবাবু:
(স্বগত-সংলাপ, নাচতে-নাচতে)
এ-ব্যাটা জিততো যদি আমাদের চাকরি খেয়ে নিতো !
ভাগ্যিস এমন লোক বারবার আসে বটে তবে মারা পড়ে
এদের সাকিন-নাম বাসি নথি-খাতা ছাড়া কোথাও থাকে না
আকাশের মেঘ খেতো ডায়নোসর তারাও আজকে হাপিস ।
(বৃদ্ধদলের প্রস্হান ও বৃদ্ধাদলের প্রবেশ )
বৃদ্ধাদল:
(কোরাস, নন্দিতার উদ্দেশে):
তারপরে তুই চুমলি যাদের
ভুললি কেন তাদের ছুঁড়ি
কোথায় সেসব ঠোঁট রেখেছিস
একেই কেন চাইরে বুড়ি
এর ভেতরে কী পেয়েছিস
মাঞ্জা-দেয়া উড়োন-ঘুড়ি ?
আউলবাবু:
(স্বগত-সংলাপ, নাচতে-নাচতে)
তবে এই লাশটাকে কোটালের হেপাজতে দেয়াটাই ঠিক
ভ্যান রিকশায় তুলে ফেলবে ভাগাড়ে নিয়ে গিয়ে ;
সেজেছিল প্রেমিক লড়াকু বানচোত
জানতো না প্রেম আর বিরোধিতা জলে তেলে মেশার মতন।
(বৃদ্ধাদলের প্রস্হান )
নন্দিতা:
(চলে যেতে থাকা বৃদ্ধাদলের উদ্দেশে )
ঋতুর গোপন গন্ধে মহিষের চেয়ে দৃঢ়-ঋজু এ-যুবক
খুরের ধুলোয় গুঁড়িয়েছে ভুতগ্রস্ত প্রতিদ্বন্দ্বীদের বাধা
তারপর যা ঘটেছে ইতিহাসে লেখা যাবেনাকো
শিঙ-ভাঙা পুং-ছাগলেরা পড়ে আছে প্রতিষ্ঠানের হাড়িকাঠে
তাই আমি নিতে চাই যা আমার যা দিয়ে তৈরি করেছি একে।
কখনও ঠোঁট দুটি শিশুর মতন ইনি রাখতেন বুকে
কিংবা হাঙরের ঢঙে দুই ঠোঁট মেলেছে দেহের অলিগলি
কত কাতুকুতু জমে আছে শরীরের স্মৃতি-বিজড়িত ঘরে।
এর ঠোঁট আমারই দ্বারা প্রভাবিত ।
(বৃদ্ধদল ও বৃদ্ধাদলের প্রবেশ)
বৃদ্ধদল:
(কোরাস, বৃদ্ধাদলের উদ্দেশে)
তা না হয় হল, কিন্তু শেষকালে কী হল ?
বৃদ্ধাদল (কোরাস, বৃদ্ধদলের উদ্দেশে):
তা না হয় হল, কিন্তু শেষকালে কী হল ?
(বৃদ্ধদল ও বৃদ্ধাদলের প্রস্হান)
আউলবাবু:
(স্বগত সংলাপ, নাচতে-নাচতে)
যোদ্ধাদের কাজ হল টেঁসে যাওয়া, সেকাজ করেছে লোকটা
হেঁ হেঁ প্রেমপন্হা ভাঙবেন ইনি ? গানডুটা চেনেনি রাষ্ট্রকে
যে লোকই বসুক চেয়ারে তার মগজে বদল ঘটবেই ।
ভূবনমোহিনী:
(কুলসুম ও নন্দিতার মাঝে দাঁড়িয়ে ):
কী করছ কী বলছ যাতা তোমরা দুজনে মিলে,
দাঁড়াও, সবার আগে আমি জিভটুকু কেটে নিই
লেহন করেছে কতদিন নেকড়ের
ঢঙে, যে-অঙ্গে চেয়েছি হসটেলে সঙ্গে ছিল মিহিন সঙ্গীত যা আমার
দেহে আজো ঝিরিঝিরি রিমিঝিমি বেজেই চলেছে ;
এর জিভ আমারই দ্বারা প্রভাবিত।
শব্দ বলো বাক্য বলো যে-কোনো অভিধা, আমার প্রভাব তাতে
ব্যকরণে বিন্যাসে বিশেষ্য বিশেষণে আমার প্রভাব পাবে।
(জিভ কাটতে ঝোঁকে। বৃদ্ধদলের প্রবেশ)
বৃদ্ধদল:
(কোরাস, ভূবনমোহিনীর দিকে তাকিয়ে)
নিচ্ছ যদি স্বাদই নিও,
স্পর্শ নয় গন্ধ নয়
শ্বাসের ভিজে গানও নয়,
তুই তো দেখি ছিলিস-মার্কা
জিভখানা এর ইলিশ-মার্কা,
কেমন করে মিল যে হয় !
আউলবাবু:
(স্বগত-সংলাপ, নাচতে-নাচতে)
কিন্তু এ সত্যিই যুদ্ধ করেছিল কি না তার কী প্রমাণ আছে?
প্রমাণ থাকেও যদি ক্ষতি নেই আমাদের লোক আছে সর্বত্র ছড়ানো
লড়ায়ের ইতিহাস মিথ্যামঙ্গল লিখব তো আমরাই
সরকারি অনুদানে প্রকাশিত পড়বে খোকারা ইশকুলে।
(বৃদ্ধদলের প্রস্হান ও বৃদ্ধাদলের প্রবেশ)
বৃদ্ধাদল:
(কোরাস, ভূবনমোহিনীর দিকে তাকিয়ে)
তারপরে এ চাটলো যাদের
সকাল সন্ধে বিকেল দুপুর
মরল শেষে বিষে তাদের
আদর-খেকো মুখের মুকুর
জানিস সেসব দীর্ঘশ্বাসই
আটকে আছে এনার লাশে?
আউলবাবু:
(স্বগত-সংলাপ, নাচতে-নাচতে)
তবে একটা খটকা আছে কোথায় এনার ঢাল-তরোয়াল !
না হয় লোকটা যুদ্ধে গিয়ে মরল লড়ে, ওপড়ালো কী বাল ?
(বৃদ্ধাদলের প্রস্হান )
ভূবনমোহিনী:
(চলে যেতে থাকা বৃদ্ধাদলের উদ্দেশে)
জঙ্গল-নেকড়ে ছিলেননা ইনি । বিশ্ববিদ্যালয়ে
সিংহীদের পাল এক গর্জনে এনার আওতায় আসলেও
আমিই ছিলুম এঁর নিজস্ব সিংহিনী, কথাটা রিপিট করি–
এখনো আমার লোমে আছে এঁর প্রেমসিক্ত লালা
তাহলে পাবো না কেন জিভটুকু আমি ?
এঁর জিভ আমারই দ্বারা প্রভাবিত।
(বৃদ্ধদল ও বৃদ্ধাদলের প্রবেশ)
বৃদ্ধদল:
(কোরাস, বৃদ্ধাদলের উদ্দেশে)
তা না হয় হল, কিন্তু শেষকালে কী হল ?
বৃদ্ধাদল : (কোরাস, বৃদ্ধদলের উদ্দেশে)
তা না হয় হল, কিন্তু শেষকালে কী হল ?
আউলবাবু: অনেক করেও একে জালে-ফাঁদে ফাঁসানো গেল না !
মেয়েরা ফাঁসালো একে, তার কোনো রুলবুক হয়তোবা হবে ;
এরকম রুলবুক তৈরি করতে পারত হেড কোয়ার্টার ।
(বৃদ্ধদল ও বৃদ্ধাদলের প্রস্হান)
চিত্রাঙ্গদা:
(সবায়ের দিকে এক-এক করে তাকিয়ে)
যখনই দুঃখ গ্লানি ক্ষোভ দ্বেষে যুঝেছে লোকটা
এসেছে আমার কাছে, আমাদের কাছে; চিত্রাঙ্গদা নাম নিয়ে
যে গেছে এনার কাছে ইনি তাকে হাতির তরল মস্তিসহ
রাতভর ডলেমলেছেন। আমি এঁর লিঙ্গটুকু নিতে চাই।
আমাদের প্রেমের চত্ত্বরে ঠাঁই হবে; পুজার্চনা দেব রোজ।
এঁর লিঙ্গ আমারই দ্বারা প্রভাবিত।
(লিঙ্গ কাটতে ঝোঁকে। বৃদ্ধদলের প্রবেশ)
বৃদ্ধদল (কোরাস, চিত্রাঙ্গদার উদ্দেশে):
নিচ্ছ যদি বীর্য নিও
ঘাম পাবে না নাম পাবে না
অন্য বাবুর সঙ্গে মিশেল
করলে কিন্তু ভাগ পাবে না
এর বীর্য তুলনাহীন
বংশবিহীন দুকূলহীন ।
(নিজেরা আপসে ফিসফিস আলোচনা করেন বৃদ্ধেরা)
বলেছিল বটে এর কথা মহাকরণের সেই ভৌগলিক
সাতবাষ্টে তেলচিটা টাকার বান্ডিল নিতে-নিতে।
আউলবাবু:
(বৃদ্ধদলের উদ্দেশে , নাচতে-নাচতে)
মোটেই আমরা ভেড়ুয়া নই আমরা হলাম সেবকদেশি
বইপত্র দেয়াল লিখন দেখতে পারেন আমরা কেমন
গুরুবাবা চিন্তা করেন ভাবের ঘরে লাগিয়ে এসি
মাঙনা আমরা কাজ করি না যখন যিনি তখন তেমন।
(বৃদ্ধদলের প্রস্হান । বৃদ্ধাদলের প্রবেশ )
বৃদ্ধাদল (কোরাস, চিত্রাঙ্গদের উদ্দেশে ):
ভিনশহরে দেশ-বিদেশে
ভাষার বীর্য ভাষায় মিশে
লিঙ্গ এনার একলেকটিক
চলবে না তা পুজোর ঘরে
দশক-দশক ও-সব ক্লিশে
বাক-তাড়ুয়ার ঠিক-বেঠিক ।
আউলবাবু:
(স্বগত-সংলাপ, নাচতে-নাচতে)
সন্দেহ যে বুকের পাটা কি এর পেটালোহা যোদ্ধার মতন ?
দেখলে তো মনে হয় রোদে পোড়া খ্যাঙরাটে চাষি
লাশটাকে দেখেও তো মনে হচ্ছে ছাতাপড়া বাসি।
(বৃদ্ধাদলের প্রস্হান)
চিত্রাঙ্গদা:
(সকলের উদ্দেশে) আরে ছাড়ো তোমাদের তর্ক। মনে হয়
জোয়ান উন্মত্ত হাতি রসে এলে কতটা উন্মাদ
হতে পারে কোনোই ধারনা নেই তার
কেবল যোনির শান্তি তাকে প্রভাবিত করে দেবে
আমরাও ওভাবেই প্রভাবিত করেছি এনাকে
এঁর লিঙ্গ আমাদের দ্বারা প্রভাবিত ।
(বৃদ্ধদলের ও বৃদ্ধাদলের প্রবেশ)
বৃদ্ধদল:
(কোরাস, বৃদ্ধাদলের উদ্দেশে)
তা না হয় হল, কিন্তু শেষকালে কী হল ?
বৃদ্ধাদল: (কোরাস, বৃদ্ধদলের উদ্দেশে)
তা না হয় হল, কিন্তু শেষকালে কী হল ?
আউলবাবু: (স্বগত-সংলাপ, নাচতে-নাচতে)
চুলোয়-যাওয়া মানুষটা কি সত্যিকারের যোদ্ধা ?
অর্জুন প্রতাপাদিত্য নাকি সেই পর্তুগিজ রোদ্দা ?
প্রতাপাদিত্যের মতো মরে গেল খাঁচায় সফরে দরবারে
ভাবতে পারিনি হবে লাশটার দাবিদার এতোজন নারী !
( বৃদ্ধদল ও বৃদ্ধাদলের প্রস্হান)
ক্যারল নোভাক:
(ক্রুদ্ধভাবে মাথার সোনালি চুল ঝাঁকিয়ে )
তোমরা ভেবেছ বুঝি আমার কোনও দাবি নেই !
আমি এঁকে মাদকের যৌনতার যাবতীয় নিষিদ্ধের সাথে
করিয়েছি পরিচয়; যাকে ইনি পতনের পাঁক ভেবে ছিলেন চিন্তিত
আমি ওঁকে সেই স্বর্গে নিয়ে গেছি। অন্ত্র পাকস্হলি ফুসফুস
আমার সংগ্রহে নিয়ে যেতে চাই; নীলকন্ঠ থাকবে বয়ামে
অতিথিরা এলে দেখবেন অচেনাকে ভালোবাসা কাকে বলে
বিদেশী প্রভাবে আমি প্রভাবিত করেছি এনাকে ।
বিশ্বাস না হয় যদি আউলবাবুর কাছে জেনে নিতে পারো।
(ছুরি বের করে। বৃদ্ধদলের প্রবেশ)
বৃদ্ধদল:
(কোরাস, ক্যারলের উদ্দেশে )
পাঁক নিবি তো পাঁকই নে না
নিষেধগুলো পতনগুলো
চাইলে কি হয় লেনা-দেনা
আঠা তো সব পোস্তকুঁড়ির
তোর তাতে কী বল অবদান?
নোস তো তুই রেডিইন্ডিয়ান!
আউলবাবু:
(স্বগত সংলাপ, নাচতে-নাচতে )
না বাবা না, আমি ওনার ওসব জিনিস দেখতে যাব কেন ?
শুধুই খপর দেয়া আমার কাজের মধ্যে পড়ে ।
মনে হয় এইবারে মানেমানে কেটে পড়াটাই ঠিক হবে।
(বৃদ্ধদলের প্রস্হান। বৃদ্ধাদলের প্রবেশ )
বৃদ্ধাদল:
(কোরাস, ক্যারলের উদ্দেশে )
বয়াম গো তোর বহুজাতিক;
যা ভাসবে তার পতন কোথায়
জোড় বাঁধলে স্বর্গ দেখিস
মাদক নেবার মজায় বোধ হয়
বড্ডো তোদের পতন নিয়ে
চুল-ঘামানো ফোকাস-বাতিক।
আউলবাবু:
(স্বগত-সংলাপ, নাচতে-নাচতে )
যুদ্ধ করে মরবে লোকে এ কথা তো সবাই জানে !
চোকার যা তা চুকেই গেছে এখন একে লোপাট করো দিকি
আস্ত কিংবা টুকরো করে সরাও একে আস্তাকুঁড়ে
তারপরে তো গপ্পো বুনে নথিবাবা লিখব খাতা।
ক্যারল নোভাক:
জিরাফের উঁচু-মাথা, শাদা ভাল্লুকের তুষারের শুভ্রতায়
একা-একা গর্বোদ্ধত শিকারের খেলা
গোরিলার আদিগন্ত বুক থাবড়ানো
তোমাদের রাজনীতি-সংস্কৃতির নয়
স্লিপিং ব্যাগের মধ্যে নেশাগ্রস্ত আমিই দিয়েছি
সেসব বিদেশী আরণ্যকতার হাল-হকিকত।
বিশ্বাস না হলে এঁকে লাশকাটা ঘরে ফেলে কেটেকুটে দ্যাখো
এঁর অন্ত্র আমারই দ্বারা প্রভাবিত
ফুসফুসে আমারই ঘনিষ্ঠ প্রভাব
পাকস্হলিতেও পাবে প্রভাব আমার ।
(বৃদ্ধদল ও বৃদ্ধাদলের প্রবেশ)
বৃদ্ধদল:
(কোরাস, বৃদ্ধাদলের উদ্দেশে)
তা না হয় হল, কিন্তু শেষকালে কী হল ?
বৃদ্ধাদল (কোরাস, বৃদ্ধদলের উদ্দেশে)
তা না হয় হল, কিন্তু শেষকালে কী হল ?
আউলবাবু: (স্বগত-সংলাপ, নাচতে-নাচতে)
কী করে শিখল যুদ্ধ প্রেমিক প্রবর পচামড়া ?
মেটিং কলও দেখছি হয়ে গেল যুদ্ধ-হুঙ্কার !
(বৃদ্ধদল ও বৃদ্ধাদলের প্রস্হান)
অবন্তিকা:
(শান্ত কন্ঠে) তোমাদের যার যা নেবার কেটেকুটে নিয়ে যাও
অবশেষ যা থাকবে তা আমার কেননা এ যুবা চিরকাল
ঠকিয়েছে ভুলভাল কথা বলে অস্তি-নাস্তি করেছে ভন্ডুল–
শেয়াল শকুন কিংবা হাঙরের মুখে এর অবশেষ দিলে
তবেই সোয়াস্তি পাবে হাড়কাটা গলি।
(বৃদ্ধদলের প্রবেশ)
বৃদ্ধদল:
(কোরাস, অবন্তিকার উদ্দেশে)
কে বলল তুই শান্তি পাবি
অস্তি-নাস্তি ঘূর্ণীতে
পাবার হলে আগেই পেতিস
যখন প্রেমের দাম নিতে
ঝাঁপাই ঝুড়ে গুণছ খাবি
শরৎ বর্ষা আর শীতে।
(বৃদ্ধদলের প্রস্হান। বৃদ্ধাদলের প্রবেশ)
বৃদ্ধাদল:
(কোরাস, অবন্তিকার উদ্দেশে)
কেন এঁটো লাশ নেবে শেয়াল-শকুন
ফেলে গেছে যাকে বেওয়ারিশ
তোদের ভাষার চামুকুন,
হতেই পারে না এ হাঙরের ডিশ
দ্যাখ যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে বেপাত্তা সবাই
রাজার কোঁচড়ে কিংবা রানির আঁচলে
ব্যাঙরা এ-দল ছেড়ে গিয়েছে ও-দলে,
ইংরাজের হাতে-গড়া ব্যাঙ ওরা
টিভি দপতরে গিয়ে বাতেলা ঝাড়ছে ঘাড় নেড়ে।
আউলবাবু:
(স্বগত-সংলাপ, নাচতে-নাচতে)
এ তো দেখছি কিংবদন্তি মেটিং গেম থেকে ফিরে
আলফা পুরুষ টেসটোসটেরনে টানে যদিও জানতুম
যাই বাবা কেটে পড়ি নথিবাবাদের দপতরে
(কলম ও ডায়েরি ঝোলায় পুরে দৌড়ে পালায় আউলবাবু)
[ধুলিকণাদের ঝড় ফিরে আসে আরো বেগে; পুরুষের শবটিকে ঘিরে
রঙিন ঘূর্ণির নৃত্যে সমবেত যুবতীকে চোখ ঢাকা দিতে বাধ্য করে।
শবটির চারিধারে বসে পড়ে তারা। ঝড় থামে।
যুবতীরা চোখ খোলে ঝিরিঝিরি নম্র বাজনায় । সকলেই ঝুঁকে পড়ে
চিৎকার করে ওঠে পুরুষের নির্ধারিত অঙ্গগুলো দেখতে না পেয়ে
ওপরে দুহাত তুলে যুবতীরা হাহুতাশ করে–
নেপথ্যে সরোদে তিলক কামোদ রাগে অবরোহ শোনা যায় ]
কুলসুম:
এ কী! কে এই পুরুষ? হাত দেখছিনা! নিশ্চই নিয়েছ কেউ ?
নন্দিতা:
সত্যি তো! ঠোঁট দেখছি না? ওফ কী বীভৎস মুখ!
কী হবে তাহলে? গর্ভে ওর কূলবীজ থেকে গেল
পরের প্রজন্মগুলো চলে গেল ওর প্রভাবের আওতায়!
ভূবনমোহিনী:
হাঁ-মুখে জিভও নেই, দুর্গন্ধিত পোকারা চলছে!
আমারও জরায়ূতে ওর ধাতুরস গড়ছে সন্তান জানি।
চিত্রাঙ্গদা:
এ-সব লুচ্চা-প্রেমিকদের শেষকালে এই দশা কতোই দেখেছি,
সে-কথা ভেবেই আমি ওর জনন-ইন্দ্রিয় ভাবলুম পাবো; কে জানতো
ওই মাংস-খণ্ডটাও জাল-জোচ্চুরির বীজে ভরা !
প্রভাবের বীজ ফেলে চলে গেছে সবকটি প্রেমিকার দেহে।
ক্যারল নোভাক:
ফুসফুস পাকস্হলি অন্ত্র বৃক্ক কিছুই তো নেই; বুক থেকে তলপেট
খাঁ খাঁ করছে দেখছি । সন্দেহে ভুগছি এই ভেবে, ছিল কি কখনও
নাকি সব মাদকের ভ্রমে গড়া ছবিগুলো ভেঙেছে লোকটা চুপিসাড়ে
আমাদের সবাইকে নিজের নাস্তিক-জালে ফেলে রেখে সটকে পড়েছে !
উল্টে আমাকেই প্রভাবিত করে গেল
গর্ভে রেখে চলে গেল নিজের বিজয়ী ঝলকানি।
অবন্তিকা:
জানতুম, জানতুম , মরেও ঠকাবে এই লোক;
পুরো প্রকৃতিকে, মেঘ রোদ ঝড় রঙসুদ্ধ দখল করেছে
ভাষাকে লাগাতো কাজে যখন তরুণ আর ডাকাবুকো ছিল
শব্দ-বাক্যে ফাঁদ পেতে আমাদের অযৌক্তিক আত্মীয় করেছে
হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিক, ইরর্যাশানাল সম্পর্কের মনোমুগ্ধকর টোপ
উফ যা উপেক্ষা করা ছিল অসম্ভব।
প্রভাব রেখে গেল শরীরে আমাদের । অক্ষরের সন্তানেরা,
তারা নিশ্চয় এর যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে আঘাত হানবে মনোমত ।
[অসহায় তরুণীরা মৃতদেহ ঘিরে বসে পড়ে। ঠিক তখনই ঝড়
পূনর্বার আগুনের ধুলো নিয়ে দৃশ্যকেন্দ্রে আবির্ভূত হয় ;
টের পাওয়া যায় না কী ঘটছে লাশটিকে ঘিরে,
ছেয়ে যায় চারিদিক দুচোখ-ধাঁধানো ঘন নীলাভ আলোয় ;
দৃশ্যকেন্দ্রে শ্রীমন্তিনী আবির্ভূত হন, হলুদ টপ ও জিন্স পরা ।]
শ্রীমন্তিনী:
কিছুই পাইনি আমি এই পুরুষের কাছ থেকে
যদিও আমিও তোমাদের মত এর ভালোবাসা পেতে কত
দিন রাত্রি সপ্তাহ বছর মাস চেষ্টা করে গেছি
তবে জানি আমি এঁর মস্তিষ্কের প্রত্যেকটি কোষে
শব্দ-বাক্য-চিহ্ণ-ছবি হয়ে আছি রেমব্রাঁর ইহুদি দম্পতি
যেভাবে রয়েছি আমি অজন্তার মোহিনী ম্যুরালে
কোণারক খাজুরাহো মহাবলিপুরমের সম্ভ্রান্ত অর্জুনে
চিনের পোড়ানো মাটি যোদ্ধদের রহস্যতে মিশে
সান্তো দোমিঙ্গোর সিংহে ইরানের আর্দাবেল জাজিম-বুনোটে
জ্যাকসন পোলকের একত্রিশে আর ভ্যান গঘের চেয়ারে ।
দেখতে পাচ্ছ না ? তোমাদের জন্য সবকিছু দিয়ে দিয়েছেন
কী করবে মৃতদেহ থেকে মাত্র তোমার প্রণয়ে তৃপ্ত অঙ্গখানা নিয়ে ?
ঠিক করে চেয়ে দ্যাখো প্রতিটি অঙ্গই এঁর দেহে বর্তমান।
এনার শবটি নিয়ে আমরা সবাই মিলে চলো এক উৎসব করি
জীবনের যাপনের বিজয়ের মহা-উৎসব ।
কুলসুম:
ঠিকই বলেছ তুমি ; ভালোবাসাবাসি নিয়ে উৎসব করি।
চিত্রাঙ্গদা:
মনে হয় আমারাও উৎসবে মাতি সকলেই।
ক্যারল নোভাক:
চলুন তাহলে। মৃতদেহ ঘিরে সমবেত উৎসব হোক।
[আরেকবার ঝড় ওঠে, এইবার সাতরঙা ঝড়। যুবতীরা
সকলে একত্রে শবদেহটিকে তুলে অন্তরালে চলে যান।
আড়ালে বাজতে থাকে মৃদু ইগর স্ত্রাভিনস্কির কনচের্তো বেহালায়;
শোনা যায় যুবতীগণের কলোরোল ঝর্ণাজলের উল্লাস—
দৃশ্যকেন্দ্র আরো বেশী আলোকিত হয়ে ওঠে রঙের মিশ্রণে ।]
(রচনাকাল: সেপ্টেম্বর – নভেম্বর ২০১২)
মলয়দা! এ কি সংকটে ফেললেন! 🙂 এ লেখা আপনার মত ভার্সাটাইল ক্রিয়েটিভ জিনিয়াস-এরই রচনা সম্ভব. একজন কবি নাট্যকার! শুধু বলতে পারি আজ আর একবার আপনার প্রেমে পড়লাম! নতুন করে!
আমাকে লেখাটি পড়তে দেওয়ার জন্য মলয়দাকে অনেক ধন্যবাদ জানাই। সত্যিই সাতরঙা ঝড় উঠল যেন!
তুষার রায়ের শেষ নৌকো বা সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ এর ‘লাল শালু’ ‘কাঁদো নদী কাঁদো’ পড়ে ফেলে
নিজেকে কেউ কেটা ইন্টেলেকচুয়াল ইন্টেলেকচুয়াল মনে করা এই অধম বঙ্গালী (বাঙালী নয় ) আজ
আরো একবার নতজানু আপনার এই লেখাটির কাছে … যেমন তার শ্লেষাত্মক তেমনিই যেন কোথায় একটা
চাপা কান্না আর আমি নিজেই নিজেকে ফাক (!) করে দেখছি মানে দেখতে বাধ্য হচ্ছি আবার না দেখেও থাকতে পারছি
না …… এখানেই আপনি আপনিই ……
বর্তমানের বংলা (বাংলা নয় ) লেখার শুকতলা খোয়ানো “এক রাজা আর এক রানী রাজপুত্র পুত্রী…”
ভাড়ারে এ লেখা একটি সম্পদ …… স্বাক্ষী না হয় থাকুক আপাততঃ ভাবীকাল .
Sei Dhrupadi jochchor-r samay theke tomake porhchhi.Fantabulous Malayda.Superreal ei kabyanatake dhrupadi Bharatiyatwar sange Pinter jamanar European slesh milemise jata rakamer bipatti r shock dilo.Sarbopari sab charitragulo saman jatne garhte perechho.Pennam janai boss.
এ কোন জগতে নিয়ে গেলেন দাদা! সময়, সত্য আর পরাবাস্তবতার ধ্রুপদী ধোয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে আছি!
হে নির্বাক যোদ্ধা, শব্দহীন ঝিঁঝিডাকে পড়ে আছো একাকী
জীবনের রঙ্গমঞ্চে হেরে গেছো কিনা জানি না, তবে প্রমিলা বাহিনীর হাতে তুমি এখনও জীবিত
তুমি জীবিত পৌরুষের জগতে, সীমন্তিনীর প্রেমে, শব্দহীন বাক্যে ভুষিত করো পাঠক সমাজকে
প্রণমি তোমায় হে যোদ্ধা ….
হে নির্বাক যোদ্ধা, শব্দহীন ঝিঁঝিডাকে পড়ে আছো একাকী
জীবনের রঙ্গমঞ্চে হেরে গেছো কিনা জানি না, তবে প্রমিলা বাহিনীর হাতে তুমি এখনও জীবিত
তুমি জীবিত পৌরুষের জগতে, সীমন্তিনীর প্রেমে, শব্দহীন বাক্যে ভুষিত করো পাঠক সমাজকে
প্রণমি তোমায় হে যোদ্ধা ….
কবিতাটির বহুমাত্রিকতা আমাকে মুগ্ধ করে রেখেছে ….
darun laglo….
eTa aapni likhte paaren malayda . shudhu aapni .
aapluto holam dada — onobodyo srishty
dada, besh valo
Priyo Malay Da,
Lekhata pore nesha holo. Migraine attack shamlanor oshudh kheye jemon hoe. Pa tole, katha jorie ashe, ektu beshi beshi hashi, olpotei kendefeli, phonebooke khuje khuje lokeder birokto kori, choshmata chokh theke chure fele bipodjonok traffic die antabli hati. Lekhatae ekta shadhinota ache. Shecchacharita. Kichuta biroktikor. Disturbing. Ja apnar shob lekhae kom-beshi thake. Etai apnar ostro.
Apni emon ek lekhok jar theke shobkichui asha kora jae. Abar kichui paoar nei. Pathok hishebe amar obostha onekta Rabindranather kobitar bhikkhuker moto. Ek kona chal die mone hoe purota dhele dile aj borolok hotam. Apni emon ek jogoter lok jekhane neel pori ar electric bill er modhye farak shudhu shobdo dutor banane. Emon ek jogot jekhane shobi shombhob. Ar shei shombhonae apnar osheem bishwash. Rupkathar moto ‘Once upon a time’ bole shuru hoe na. Emon indicator nei, je pathok toiri hoe thaklo, porider golpo ohoba nirosh integral calculus er jonyo. Ekhane hip hop owl babu ar rembrandtr shukher dampotyo.
amar kache apnar lekha porar onubhutitai apnar lekhar maner mapdondo. etai amar bichar.
Onek onek shundor shaboleel jogoter opekkhae roilam.
Shosraddhe,
Nayanima Shome
BESH LAGLO… TOBE KICHHU DIK THEKE KRITRIM O…ABAR POROKKHONEI MONE HOY KRITRIMOTAO SOCHETON PROYOG
TOBUO AMI NIJE HOLE ETAKE ONYOROKOM BHABE AKROMON KORCHHI
sporshomatro bidyutspristo holam … ,aro asankhyobar chunte chai ei current,malay da
এটা আমার কাছে খুব একটা নতুন লাগল না। তবে চিন্তার বৈচিত্র যে মলযদা হারান নি, সেটা বোঝা গেল।
কি আর বলি, যদিও ভাল করে বুঝতে গেলে আর ও কয়েকবার পারাপার করতে হবে,তাসের দেশ এর আমেজ পেলাম, নতুন আঙ্গিকে
satronga ramdhonur rupkotha noy ,kolomer tulite anka satronger jhor kothin bastob er ronge rangano ,antormonke nariye dey… notun kore bhabte badhyo kore .
soshroddho pronam chara akjon sadharon pathikar ar ki ba bolar thake.
Aah, eje ekkebare khati MRC(Malay Roy Chowdhury)!!
Aaro 2/3 bar porei tobe er montobbyo kora jabe,
jodio ta dussahos!!
Aaaah!!
ek kothay asadharan,mon chuye geche,hrid majare anuranan,sristy korlo Malay da bolei e sambhab,abar natun kore chinta korte ,bhabte badhho korlo ei lekha.eto bastab kotha gulo,charitra gulo.athacho koto akopote tar sikarakti…..thanks Malay da ….lekha ta porte debar jonno….sangita paul.
dada,ochintoneo sundor dialog gulo.
পড়লাম মলয়দা । ভাবনার ডানাটি অসাধারণ প্রসারিত । তবে খিস্তিগুলো আমার অপ্রয়োজনীয় আরোপিত মনে হয়েছে, না থাকলেও বক্তব্যের শক্তি কমত না ।
Flickering images of unrehearsed communications , igniting the living rooms where tired sighs sees thing ending, so sure that life is slipping !!!! Surrealist at its best…..
onek ……..onek………………onek ………………….anondo pelam………………lekhati pore……………………………………
erokom uchchanger natok onekdin porini. osadharon laglo. khisti kotota shoilpik hote pare tar proman apni diyechhen. protyekti choritrer bhasha sabolil. aaulbabu jothajotho. kothagulo o chabuk.
tobe amar mone hoyechhe, prothome raag durga na diye borong darbari jatiyo kichhu dile aro jomto. briddhodoler hate ekti kore khol dhoriye dile aro bhalo. karon apnar kobitar jhnok dadrar dike jachchhe. ghungurer songe khol ta bhalo. ar briddhader jokhon bhorotnatyomer poze e dnar koralen tokhon mridongo keno? pakhoaaj byabohaar korle aro bhalo hoto na? aulbabur hiphop ta boddo common. ektu halkao laglo. samba hole perfect hoto. er abirvaber sathe jazz music beshi cholonshoi. ebong protiti narir abirvaber somoy tar choritro onujayi ekti kore rager chhnoa hole sholokola purno hoy.
janina chhoto mukhe boro kotha bole fellam kina…. bhul hole kkhomaprarthi. sobtai ei orbachiner byaktigoto motamot.
abar bolchhi. opurbo natok.
ভালবাসার উৎসব pore khub amod ar tripti holo