কবিতা ১
কী ভেবে
অনেকগুলো কবিতা লিখে ফেলেছি
দেখা যাচ্ছে
ওই যে পত্রিকা, রাগী কাগজ স্তুপ করে রাখা
ওই যে বইগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে
আমার নাম
ওদের ভেতরের জানালা থেকে উঁকি দিচ্ছে
দেখতে পাচ্ছি
কিন্তু কবিতাদের
কেউ এসে বলছে না,
‘আমাকে চেন?’
কবিতা ২
শেষে ভেবেছিলাম হোমাইপুরের গাঁয়ে আবার যাই
ওখানকার চিন্তাগুলোকে দেখছি ওখানেই বিশ্রাম
করছে
গা হাত পা এলিয়ে
গাছপালায়
কবরস্থানে, হোমযজ্ঞে
রেজ্জাকের চায়ের দোকানে
মেয়েটির নামও ছাই মনে নেই
বাংলাঘর-বহির্বাটিতে
এক ফাঁকে
বলেছিল
রহিম না ফরিদার লগে
আলাবালা করে
তখনকার ওর আলোকিত মুখ!
আমার উজ্জ্বল মুখ!
আমাদের আলাবালা…
কবিতা-৩
খুব অহঙ্কারী ওই যুবক
কী বলব
দৃপ্ত পায়ে হাঁটে
তর্ক করে
আগামিকালের, আগামি মাসের, বছরের, যুগের
কথা বলে
দেখতে পায় না যে
ভয়ানক রক্তাল্পতা চাঁদের
মাটিরও ইউটেরাসে ক্যান্সার
আর
ওর নারীটির মন
ওর জায়গা
গত কাল হয়ে যাচ্ছে ফিরে
কবিতা ৪
আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের দিকে
আমার পায়ের ছাপ
নিস্তব্ধতা
নানানরকম অন্ধকার
২০০১-এর বছরটিকে বিছিয়ে রাখা
রকমারি রঙের মেয়ে
মার্বেল
চেয়ারের কাঁধ ধরে চেয়ার
অসম্পূর্ণ চাহনি
কথা
কবিতা ৫
আবার একদিন
আমি বললাম, এসো
তুমি এসে পড়লে নিরালা বাড়িটিতে
আগের কয়েকদিনের মতো, সেদিনও
দেখে মনে হল না আমি তোমারই জন্য অপেক্ষা করে ছিলাম
তখন হাতে নিলাম ক্যামেরা
তোমার দিকে তাক করলাম
অন করলাম
বললাম, গান করো
একটুও অবাক না হয়ে গাইতে লাগলে
বললাম, কবিতা পড়ো
দ্বিধাহীন পড়তে শুরু করলে অমনি তোমার চেনা গলায়
জানতে চাইলাম, তোমার স্বামী আজ কোথায়?
তুমি দিতে শুরু করলে বিবরণ
টেরই পাচ্ছিলে না
তোমাকে যে মেরে ফেলছিলাম
আমাকে যে মেরে ফেলছিলাম
কবিতা ৬
ও যা লিখেছিল তা করেনি
সে লিখছে
করছে
কাকে ধন্যবাদ দিই
মনে মনে
না ইমেল, না ফেসবুক-মেসেজ, না পোস্টম্যান
কেউ পৌঁছবে না
আগেও পৌঁছত না
এখন দিন না-পৌঁছনোর
চেয়ে আছি
থাকি
যতক্ষণ না খট্
কবিতা ৭
বেশি নেই
সবসুদ্ধ ১০টা ১২টা
তবু কমাতে ইচ্ছা করে
শব্দ
বেশি নেই
সব মিলিয়ে ৪টা ৫টা
তবু কমিয়ে দিতে ইচ্ছা
সংকেত
কবিতা ৮
ইটকাঠে ঠোকাঠুকি
বাচ্চাদের টেনিসবল-ক্রিকেট
আকাশ ময়লা
পুরনো বাতাসে ট্রেন
ঘোড়ার গাড়িতে সপাং সপাং,তার দেড় গিগা ফাইল,ফের
কবে খোলা হবে অপেক্ষা
ইমেল-চিঠি এখানেই শেষ
তা না হলে ঘুম, আর তা জড়িয়ে জ্যোৎস্নার উড়ে
যাওয়া
কবিতা ৯
সব লেখার সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে
সময় লেখারও সময়
থাকছে না
সব লেখার সময় শেষ হয়ে-হয়ে যাচ্ছে
সময় লেখারও সময়
থাকছে না
‘নেতিবাচক নেতিবাচক’
তোমাদের গজরগজর
কবিতা ১০
আমাদের কথাবার্তা খুবই জখমি
নানা জায়গায় নানা স্টেশনে
নানা জঙ্গলে, দীঘিতীরে
গুদারাঘাটে
নিজেকে ফেলে রেখে আসি
ও চলে যায় এখনকে ছাড়িয়ে দূরে, ফের প্রাচীন
কাহিনিকাব্যও নিয়ে আসে
কথাবার্তাকে ফেলে রেখে সুরের দিকে দৌড়ে যাবার
পায়তারা
আমার
দূর ওপরে তারারা থেকে যায় তারাদের মতো,
অন্তরীক্ষ
গুম গুম শব্দে রাগ জানায়
কবিতা ১১
সন্ধ্যাবেলা থেকে একটি শব্দ পাল্টে দিলেই
বিশাখা থেকে যেত
শেয়ার করার জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ ।