তরমুজ
লালের ভেতর
কোথাও একটা স্বরগম
কোথাও একটা রিফিউজি গ্রাম
কেঁপে কেঁপে
লম্বা একটা বাস ধুলিনাশকতার ভেতর
আস্তে আস্তে
ধীর প্যাসেঞ্জারের স্মৃতিবল্লম
তার খালি চক্ষু-চিমনি
কবরস্থানের পাশে
পেঁপে গাছ হওয়া টেলিগ্রাম ।
ওড়ে
মৌন চিঠিলেখা
সবুজ রঙের খাম পৌঁছায়
২৬ মনেশ্বর লেন হাজারিবাগে।
সেখানে একটা দাঁত
একটা সিংহ গর্জনরেখা বেঁকে যায়
বাদামী বীজের ল্যাণ্ডিং মার্কে।
মিনাবাজার
এতো দরোজা এতো সাজানো খামার
বিবাহগাড়ি
ঝর্না পিচ্ছিল চর্বির চোরা রিদম
তাপ ভেবে
শিরস্ত্রাণের পালক গলে পড়ছে-
হলুদ এ টি এম-র ডাকাতবাক্সে।
জ্যাকেটের ভেতরে রাবারের প্রাণ
এই ময়ুর হারানো বেদনা
ভ্যানেটি ব্যাগ থেকে আস্তে আস্তে
দূরে ঘন কুয়াশার জলাশয়ে।
সেই সংবাদে টেলিগ্রাফের পাখি
তার শূন্য নীলের জানালা
গোল তামার পয়সা উড়ায়
শপিং মলের দানবাক্সে।
কামান
এক চোখা হরিণ কালো কুয়োর দাগ
দাগের ভেতর সেনাপতির খুল যা সিম সিম।
তালা পড়ছে পাতায় আর খাতায়
রাইফেল থেকে ছুরি ও বিষ।
শিষ শিষ পাখিদান তো নেবে না!
শুধু ইশারা দেবে উড়ালে পাতালে।
নিচে ছেলেরা খেলছে
লাল-নীল ক্যারাভানে শীত ও তুষার।
দুরে এই গোলপোস্ট কার জন্য?
কার জন্য হুইসেল বাজিয়ে
দমকলের গান?
নাও আর একটু জলপাই করো
শূন্যস্থান ভরে যাক তিতির আর তরমুজে।
চাবি
কারা এই দরোজা আগলে রাখে!
কাদের হাত পা বাতি
রাত্রির লেখার বেহালা! তাদের নাম বলো
তাদের বুকের মাপ তাদের কাঠ কাঠ নৌকা
গলুই
তাদের জাল থেকে কবরখোঁড়ার চাবি।
মিটিং রুম
পরশ্রীকাতর রোদ ঢুকে পড়ছে বুলেটিনে।
পাশে হেলানো তাজা ফল ও তন্দুর
নেশা নেশা গ্লাসের মুক্ত জলজাবিন!
পা ছড়িয়ে আছ মন্ত্র আর মেহগনি
যোনিগন্ধ তোমার ঠোঁটযুগলে।
তিরতির এগিয়ে আসছে ডাকাত
তাকে পতাকা দাও
আলিঙ্গনের ভাষা এই গ্যাসবেলুন সন্যাসে।
যে আসে তাদেরও পোশাক রেশমের জাল
ধ্বনি পৌঁছাও– তিরছা এই জমিনে ভূপল্লব রাখি।
জানালার পিপুল দিয়ে তুলে রাখি আজকের সূচি।
যারা বলছে তারা তো এই ফল ফলাবে না
ঝুঁকে থাকা এই পাহাড়ে খুনি চলবে অবিরত।
আরো তরমুজ
আজ না জাগালেই তুমি
পাতা সেজে শুয়ে থাকি শীত-গাছের জ্যুতে!
যতপারি আজ শুধু ঐরাবত ছবি
হেলে দুলে খেলা করে ব্যস্ত কাবিলের ছায়া।
তার নিচে আরো মায়া
আরো লালের মতো লাল খনিজ মাটির গভীরে
গন্ধে আগুন আগুন পাখি আর শিশুরা।
সেই ছায়ায়
জেলপারে শুয়ে আছেন ভারি নিতম্বের কেউ
ভরসা রাখি তার বন্ধ আর গন্ধমে।
অতিবীজ– মাতৃধারণা লালের
শত কর্মফাঁসি তরমুজ করে নিয়েছি।
সীমানা
বাঁধা আরো না-উড়ালের নামে
তার আকাশ দেখে–
এখন পাখি তো আর উড়বে না।
শুধু বালি বদলাবে
কাঠ থেকে কর্পুরগুলি
তাজা তাজা হাতবোমায়!
তারপর আস্তে আস্তে ন্যাংটা
দেয়ালটার ভেতর
কিছু ছায়া পাথরের বাজনায়
ছুরি দেবে মেয়েটার হাতে।
সকাল উঠছে এই অটোম্যাটিক পলেস্তরায়
গন্ধ পেয়ে ঢুকে পড়ি খুনিদের শহরে!
ওয়েটিং রুম
যে গাড়ি করে এসেছি
তার টায়ারে ময়ূর ময়ূর খেলা
সেই দৃশ্যে তোমার নামে
কথাময়ুর কোন মরুসিন্দুকে!
এই গোপনমধুর সরাইখানা
তুমি আর দেয়াল লিখ না
লাল উড়াও– তাঁবু বসাও
একটি ব্রিজ একটি নদীর চলা
জমে থাকা এই অপেক্ষা-বিন্দুতে!
অটো হাতবোমা
ফুটবো আমি তোমার ভেতর
তোমার এই ঘর জানালা বরফ করে রাখো!
সাথে তাঁবু ও সৈন্যরা। যারা থাকবে তাদের
নেমলিস্ট করো। যাদুঘরে কার নাম যায়
কার জাহাজভর্তি চিঠি।
বহুদিন আমি ঘাসের স্মৃতি হয়ে থেকেছি
এই অগ্নি ও অংকুরে কি সব প্রার্থনা
হারোনো গাছের বীজ হয়ে শুনেছি।
আজ লিরিক করে কাপছে ভুরু ও আঙুল।
দেখো কী এক পালক জাগে শূন্যের শরীরে!
তার আকাশের আগুন শেখো
শেষ সূর্যগ্রহণের ঘণ্টা নিয়ে ঘুমিয়ে
পড়েছে গাজী।
আরো হাতবোমা
তোমাকে কবর দিয়েছি। তুমি জাগো?
ফিরিঙ্গিদের রাজকলে জমে এসেছে বীর।
তার হাতিকল তার তাজা তীতুমীর
নেশা জন্মায় যুবকের কেল্লায়।
তাকে হীন জেনে জিপবহরে মীরজাফর
জামা বদলায় জিহবা বদলায়
পাক সেনাদের লিখে দেয় হাজারো যোনি।
তাদের আজ নামিয়েছি গেরুয়া মাটিতে।
বলো কবে বোমা পড়বে কবে কফিন করে
আনবে মুক্তিসেনারা। তাকে শুনাও
আমার যে ভাই বোন যে মায়েরা
হাড় হয়ে মিশে আছে আরো হাড়ে
তাদের চোখের নামে এই হাতবোমা বলি।
১৫/৫/২০১৩