এই নাও দাহ
ভেতর কঙ্কাল
নেবে?
আলোর দহন ঢেউ আলোকিত ভোর
কালোর কলঙ্ক গাঁথা তপ্ত বাহুডোর।
গুচ্ছ আর পুঞ্জময় বিভক্ত পীরিতি
মোমের প্রতিমা শব, প্রসূন প্রতীতি।
নেবে? ঐ দীর্ঘ স্বর্ণাভ স্মৃতিতন্তুজাল?
প্রথম পাঠ
পাঠ ভুলে থাকি, প্রতিপাঠ ভুল হতে থাকে!
সে উদ্ভিন্ন, পাতা থাকে বহুভিন্ন পাতে
তরল রূপের নিচে দগ্ধ হতে থাকে।
খুব ভোরে আর্দ্রতলে ধবল শেফালি
জাফরান পরীদের ধবধবে ডানা।
সুনন্দ বাঁকের কাছে বিদ্ধ প্রজাপতি
দেহই প্রথম পাঠ, আত্মাময় অক্ষরের দ্যুতি।
পাঠ ভেদে দুপুরের তাপিত বাতাসে
উপমেয় উপমান ছুটে আছে।
তুমিই প্রবল পাঠ, মুখস্থ নামতা আমার।
ভূবনবিহারে আরও একবার
মগ্ন নৈরাজ্যে আছি অর্ধাঙ্গিণী তুমি যাও
ভূবনবিহারে আরো একবার দেখে এস পাখি-টাখি
জলজ সম্পদে তুমিও তো কম ধনী নও
মনে আছে সমুদ্রে গাঁথা ছিল তোমার দর্পণ?
একদা তোমাকে ডেকেছি এই দাহন নেভাতে
পরিবর্তে জ্যোৎস্না থেকে পলাতক প্রণত পরীরা
নৃত্যের নিচে নূপুরে নিষাদ।
আজ নিমগ্ন নিরুচ্চার থেকে তুমি নও
অন্য কেউ উঠে আসে
তুমি কাছে ছিলে তাই সহজ হলো তাকে চিনে নেয়া
অর্ধাঙ্গিণী তুমি যাও, এই দহনে মেশো না।
ঘোর
প্রপাতবিসারী আলো সেরে নেয় ভোজ
বুকখোলা প্লেটে হা হা শুভ্র চাঁদের বরফী
চামচে গড়ায় দ্রুতগতি মাছের চমক।
লুপ্তরূপ ফিরে পেয়ে উড়ে আসে হাওয়া
বুকের চাতালে এসে টোকা দেয়, বলে, ‘কি হে,
দুই চোখে লবণাক্ত পীড়া
খেলাচ্ছলে রুধিরাক্ত সাজ,
ভুলে গেছ?
ঘনঘোর ভেঙ্গে বলে উঠি, কে?
পিঠ হতে খসে পড়ে অমাবস্যা-শাল;
‘না, না, মনে আছে
তন্নিবিড় সেই মুখে ভেঙ্গে ছিল সোনার সকাল।
কেবল কবি যা পারে
দৃষ্টিতে ফন্দি ছিল, তবু দেখ খুলেছি সুন্দর
ভ্রুর রেখাতে ছিল বিভ্রম বাঁকানো
আসলে তো সহস্র নাগিনীর ঢেউ
তবু আমি বলেছি কুন্তল,
খুলে দিলে লাবণ্য কিছুই নয়
অস্থি-মাংসে সুভদ্র প্রলেপ
তাকে বলি কোমলতা, তাকে বলি প্রতিমাপ্রতিম
শুভ্র আস্তরের নিচে, স্নেহক্ষীর মজ্জার নিচে
ছিলে তো কঙ্কাল এক, মাড়ির বীভৎসতা নিয়ে
দাঁতাল ভয়ের কেউ।
তুমি তো সামান্য নারী, কেবল কবি পারে ফোটাতে সুন্দর।
কামরুল হাসান
কামরুল হাসান এর জন্ম ২২ ডিসেম্বর, ১৯৬১, শরীয়তপুরে। তিনি মূলত কবি। অনুবাদক, প্রাবন্ধিক ও ভ্রমণ গদ্যকার হিসেবেও খ্যাত। আছে নানা দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা।
ভারতের বিশ্বখ্যাত খড়গপুর আইআইটি থেকে এ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতক শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে এমবিএ সমাপ্ত করেন। এছাড়াও স্নাতকোত্তর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন যুক্তরাজ্যের ব্রাডফোর্ড ও এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কামরুল হাসান শিক্ষকতা করছেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে ।
কাম রুল হাসান দ”হাতে লেখেন। এ প র্যন্ত ১৪ টি কাব্যগ্রন্থ, ১ টি ছোটগল্প, ১টি প্রবন্ধ, ৪ ভ্রমণ গ্রন্থ, ২ টি অনুবাদ কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া স মী র রা ইয় চৌ ধুরী ও তুষার গায়েনের সাথে পোস্ট ম র্ডাণ বাংলা পোয়ে ট্রি ২০০৩ সম্পাদনা করেছেন।