প্রতিভা
একটা লম্বা চুল সারাদিন ঘুরেফিরে যুবকের মেরুন জামায়।
আপাতত এইটুকু সুখ, আর ভাবনার দু’একটা হৈচৈ—মাথার ভেতর।
বাইরে দীর্ঘ শীত।
চুমুর অভাবে তার ঠোঁট ফেটে যায়।
সারাদিন ঘুরেফিরে তাই, যুবকটি অনুসরণ করে—একটি লম্বা চুল;
দেখে নেয় চুপিচুপি—সে চুলের বাকিটা মানুষ, ঠোঁট, চুমু আর অন্যান্য
মেয়েটি—মূলত সে স্বপ্নদৃশ্য কারো।
একটি পলকের নিচে ঠিক যতটুকু পুষে রাখা ঘুম,
যুবকের ততটুকু ঘুমের প্রতিভা
না ফেরা
‘চা খেয়ে আসি’—বলে রাতের আহার সেরে বেরিয়েছিলাম প্রায় পনেরো বছর আগে। আমার এতক্ষণে ফেরার কথা। এতক্ষণে চা জুড়িয়ে যাবার কথা। বউ-বাচ্চা অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে গেল। যেভাবে গিয়েছি ঠিক সেভাবেই ফিরতে হবে, এমন ছিল না প্রতিশ্রুতি। হয়ত পুরনো পোশাক ছেড়ে নতুন পোশাকে একবার উঁকি। অথবা সংসার ছেড়ে অন্য কোথাও, শয়তান ও ভগবানের মাঝখানে, চেপেচুপে—কথা ছিল গজিয়ে ওঠার
স্বভাব
মানুষকে দেখামাত্র মানুষ কতটা খণ্ড-বিখণ্ড করে, চুরমার করে, ভেঙে দেখছে।
মাপছে
নোট নিচ্ছে
অভিশাপ কামনা শেষে—
খুনের ইচ্ছেটা চেপে জিজ্ঞেস করছে, কেমন আছেন?
বিখণ্ড মানুষ, নিজেকে জড়ো করে নিতে নিতে বলল, আরো কঠিন প্রশ্ন করুন!
দাবা
পৃথিবীতে মানুষেরা দাবা খেলছিল। তাদের খেলার পাশে, অনেক ক্ষতের পাশে পড়ে আছে মেধাবী ঘোড়া—নিহত
নিজেদের খেলা শেষে এখন মানুষ—নড়েচড়ে বেড়াচ্ছে পৃথিবীব্যপি। নীরবে আটকে যাচ্ছে তারা গুটির শরীরে ক্রমশ। (তাদের) ফসলের মাঠ হয়ে উঠছে দাবার ঘরের মতো, দাবার ছকের মতো সমতল।
তখন হঠাৎ
আকাশ হতে, ঘন মেঘের মতো ঢেকে নেমে আসতে থাকে
এক হাতেই তালি দিতে দিতে—
অচেনা একটা হাত
রনক জামান
কবি ও অনুবাদক ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৯১, মানিকগঞ্জে জন্ম।
প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ : অগ্রন্থিত ওহী [তিউড়ি, ২০১৯] এবং
ঘামগুলো সব শিশিরফোঁটা [অনুপ্রাণন ২০১৬]