মৃত্যুমুখর উদ্বাস্তু ঘুম
একদল সবুজ বৃক্ষের বেড়ে ওঠা দেখতে দেখতে
পাড়ি দেই সহস্র পাতার মৃত্যুমুখর উদ্বাস্তু ঘুম,
সূর্যপতন ভেবে জাগিয়ে রাখি দূরের পাহাড়, সমুদ্দুর,
দৌড়ের ভেতর বসে থাকি- বসে বসে দাঁড়িয়ে থাকে গাছ
অনেক বছর ঘুরে এই এক তিল দাঁড়িয়ে থাকা
অনেক পাখির জীবন শেষে এক টুকরো হাওয়া।
বৃষ্টি বুকে নিয়ে যে মেঘ উড়ে গেছে নারীর স্তনে
তার কি জানা আছে ঘুমের নামতা!
ঘুমিয়ে থাকতে থাকতে যে রাত্রি হয়েছে পাথর
সেও জেগে আছে- মুখে নিয়ে ঘুমের ট্যাবলেট।
অনেক অশ্রু পুড়ে একঘটি জলের কৌতুক; মানুষ।
দাঁড়িয়ে আছি জিজ্ঞাসা চিহ্নে
প্রতিদিন জিজ্ঞাসা চিহ্নের নিচে দাঁড়িয়ে থাকি
হাতে নিয়ে অসংখ্য উত্তর,
একটি প্রশ্ন রেখে উড়ে গেছে বিষণ্ণ কবুতর,
পালকে গোলাপের ঘুম ও ওম
ওষ্ঠে সবুজ সংকেত, অন্ধকার;
মরণ উৎসবে খুন হয়ে গেছে শরতের শেষ নিঃশ্বাস,
উত্তরেরা জড়ো হয়ে দিচ্ছে প্রশ্নের মহড়া, স্বাগত ভাষণ!
কে যেন জগত পুরে দিয়ে গেছে এই বটমূলে, নিরন্ন প্রহরে,
আমি ডুবে গেলে জেগে ওঠে অন্ধ গলি,
জলদীঘি, পুরাণ মোহর,
নিরুত্তর বুক নিয়ে ঝুলে থাকে যে বারান্দা- জলসাঁকো,
আক্ষেপে সে কোনদিন হয়নি ডাহুক।
প্রশ্ন হারিয়ে গেছে সম্মোহনের আয়নায়, মৃত শব্দের কফিনে।
পুনর্জন্ম
প্রার্থনায় নত হলে তোমাকে পাই,
পাপে ও তাপে,
আর্দ্রতার কিনারে পাই ঘামের পালঙ্ক- অনিদ্রাসূচকে।
বাতাসে উড়ছে ভুল- বারান্দার ঝুল- গন্ধম সময়-
ধ্যান ভাঙলে একদিন ঈশ্বরের সাথে বদলে নেব
ঘুমের সেফটিপিন, জামার বোতাম-
পুনর্জন্ম হলে একবার প্রেমিক হবো-
হাওয়া বদলে গেলে যেমন
জোছনায় চোখ রেখে ঘুমঘোরে জেগে ওঠে কুমারী নদী,
মৃতের শহরে দেবদারু গাছ হয়ে ওঠে
প্রিয়তম পুরুষ।
মালেক মুস্তাকিম
এই সময়ের একজন তরুণ কবি। সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলায় জন্ম। গাঁয়ের ধুলোবালি আর কাদাজল মেখেই কেটেছে শৈশব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। পেশায় সরকারী চাকুরে। সাহিত্য সাময়িকী ও ছোট কাগজে নিয়মিত লিখছেন।
প্রকাশিত কবিতার বই: ভুলের ভূগোল, ২০১৩; বিষণ্ণতাবিরোধী চুম্বনগুলি, ২০১৬; তোমার সাথে হাঁটে আমার ছায়া, ২০১৮
[email protected]