পাবলো কফি নিয়ে এসে বসেছে আমার পাশে, বলে ওলা। কমসতাস? (কেমন আছো?)!
মুই বিয়েন (আমি ভালো) , বলেই আমি হাসতে হাসতে হাত জোড় করে বলি, এসো এসো(এতটুকু) আমার স্প্যানিশের জোর। লা প্লাটা নদীতে হালকা ঢেউ হচ্ছে। আমার মনে হলো আমি স্বপ্ন দেখছি, আর চাইছি যেন স্বপ্ন যেন না শেষ হয়।
বুইনেস আইরেসে আসার তিন দিন হয়েছে, আমি এখনও জীবনে প্রথম লাতিন আমেরিকায় আসার আনন্দে বুঁদ হয়ে আছি। লন্ডন থেকে বিমানে ওঠার পর রিও ডি জেনিরোতে আসার সাথে সাথে মনে হলো আমি যেন অন্য পৃথিবীতে প্রবেশ করলাম। বিমান যেন হঠাৎ শব্দ গন্ধ বর্ণে মুখর হয়ে উঠল। স্প্যানিশ, পর্তুগিজ ভাষায় কলতান, লন্ডনে চাপানো গরম কাপড় খুলে পাতলা জামা জড়ানো, বাচ্চাদের ছুটোছুটি, দরজা খোলার পর বাতাসে নোনা গন্ধ, সবার মাঝে দেশে ফেরার উত্তেজনা আর আনন্দ ,আমার মনে হলো আমি নিজের দেশে ফিরে এসেছি। আমার পাশে বসা ছোট মেয়েটি যখন চাও বলে নেমে যাবার আগে গালে মধুর করে চুমু এঁকে দেয়, আমার মনে হয় লাতিন মানুষের হৃদয়ের উষ্ণতা আর উচ্ছ্বাস যেন ফেনিল ঢেউ হয়ে আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। রিওতে আমি নামছি না। ব্রাজিলের মানুষ নেমে যাবার চারিদিকে কোলাহল একটু কমে গেছে। আমার পাশে একজন মধ্যবয়স্ক আর্জেন্টাইন মহিলা, মানুয়েলা, একনাগাড়ে কথা বলে চলেছেন, আমি পরম আনন্দে তার সাথে তাল দিয়ে মাথা ঝাঁকিয়ে যাচ্ছি। জানালা দিয়ে দেখি আবছা সন্ধ্যার মায়াবী আলোয় দিগন্তে বুইনেস আইরেসের আট্টলিকা দেখা যাচ্ছে। বিমান নামছে, চে গুয়েভারার দেশে আসতে পারার জন্য নিজেকে ভীষণ ভাগ্যবান মনে হলো।
চাও, মানুয়েলা নামার আগে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, ‘এই যে আমার মোবাইল নাম্বার। আশাকরি আমার পরিবারের সাথে একবার কফি খেতে তোমার সময় হবে।’
আর্জেন্টিনা নিয়ে আমার রোমান্টিকতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় হতে। বামপন্থী রাজনীতি নিয়ে আমাদের সবারই একসময় অসম্ভব আগ্রহ থাকে। অর্থনীতি পড়ার কালে অনেকটা সময় আমার শ্রেনীবৈষম্য, সমাজতান্ত্র, শ্রমিক অধিকার, মার্কস আর লেনিন নিয়ে তর্ক করে কেটেছে। সেই সূত্রে কিউবার বিপ্লব, তাতে চে আর কাস্ত্রোর নেতৃত্ব আর লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে তা ছড়িয়ে দেবার চেষ্টা নিয়ে কিছুটা জানা ছিলো। আমি জানি লাতিন আমেরিকার মানুষ কতটা আবেগী হয়, লাতিন সংস্কৃতি কত সমৃদ্ধ, আর আজকের শোষন জর্জরিত লাতিন আমেরিকা পঞ্চাশ আর ষাট দশকের বাম চিন্তাধারা হতে বহুদূরে। তার পরও আজকে আমি পৃথিবীর বাম বিপ্লবের প্রবাদপূরুষ চে গুয়েভারার দেশে। আনন্দ আমার যেন ধরে না।
পাবলো আর্জেন্টিনার একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করে। যুক্তরাজ্য সরকারের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিভাগের সাহায্য পাবলোর সংগঠনটি পায়। আমি আর্জেন্টিনার তিনটি প্রদেশে নারীর ক্ষমতায়ন ও শিশু নির্যাতন রোধে এই সংগঠনের কার্যক্রমের সমীক্ষার নেতৃত্ব দিচ্ছি। গত সপ্তাহে চের জন্মস্থান রোজারিও আর দেশের উত্তরে করডোবা প্রদেশে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। সবুজ পাহাড়, নদী আর ফুলে ছাওয়া আর্জেন্টিনার সৌন্দর্যের তুলনা পাওয়া কঠিন। কিন্তু প্রকৃতির চেয়ে আমার মনে আর্জেন্টিনার দারিদ্র্য ও সমাজের বৈষম্য বেশি আমার মনে প্রভাব ফেলেছে। গত শতাব্দীর শুরুতে পৃথিবীর ধনী দেশ আর্জেন্টিনা আজ লাতিন আমেরিকার অন্যতম দরিদ্র ও বৈষম্যের দেশ বলে পরিচিত।
আজ পাবলো আমাকে মারাদোনার ক্লাব বোকা জুনিয়র দেখাতে নিয়ে এসেছে। শূন্য ষ্টেডিয়ামে হাঁটার সময় আমার মনে হলো আমি যেন এক পরাবাস্তব ভুবনে আচমকা এসে পৌঁছেছি। আমার সবচেয়ে প্রিয় খেলোয়াড়, অনেকের মতে পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো খেলোয়াড় যে ক্লাবে খেলেছেন আমি তা দেখছি। নিজেকে ভীষণ ভাগ্যবান মনে হলো। ক্লাবে ঘোরার পর আমরা সামনের রাস্তার ফুটপাতে বসলাম কফি নিয়ে।
কেমন লাগলো? পাবলো জিজ্ঞেস করল।
অসাধারণ!তোমাকে কি বলে ধন্যবাদ দেব জানি না!
পাবলো আমিগো (বন্ধু) বলে পিঠ চাপড়ে দিয়ে বলে, বহু খেলোয়াড় এখানে খেলার পর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ক্লাবে খেলতে গেছে। ৬০,৭০ ও ৮০র দশকে ফুটবল খেলা অনেক আর্জেন্টাইন পরিবারের জন্য দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে স্বচছলতার সিড়ি হিসেবে দেখা হত।’ তা বলো, তোমার একদিনে আর্জেন্টিনা দেখে কেমন লাগলো?
তোমাকে সত্যি বলব?
হ্যা, অবশ্যই বলো!
আমার খুব হতাশ লাগছে!লাতিন আমেরিকায় শোষণহীন সমাজ আর সাম্যবাদ নিয়ে যিনি একদম সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেই চে গুয়েভারার দেশে এত বিভেদ, ধনী গরীব মানুষের মাঝে এতো বৈষম্য আমি মানতে পারছি না!
জানো নাভিদ, আমি আর্জেন্টিনাকে নিয়ে আর স্বপ্ন দেখি না!আর্জেন্টিনা আজকে একটা স্বপ্নহীন, স্থবীর আর দূর্নীতির জালে জড়ানো দেশে পরিনত হয়েছে! পাবলো ধরা গলায় বলে।
আমি চুপ করে থাকি।
তুমি কি এরপর বলিভিয়া যাবে? যে দেশ চের শোষণহীন সমাজের স্বপ্নকে চূরমার করে দিয়েছে তা কি দেখতে যাবে না? পাবলোর চোখে যেন আগুন ঝরে।
না পাবলো, লা পাজ ( বলিভিয়ার রাজধানী) যাবার টাকা আমার নেই। আমি পাশ কাটিয়ে বলি।
আমার উরুগুয়ে যাবার কথা আছে। বুইনেস আইরেস হতে ফেরি করে নদীর ওপারে যাওয়া অনেক সহজ। পরের বার আবার এদিকে আসার সূযোগ হলে ‘মটরসাইকেল ডায়েরীজ’ সিনেমাটির মতো আমি চের অনূকরনে আর্জেন্টিনা, চিলি, পেরু, হয়ে বলিভিয়া যেতে চাই। আমি বলি।
আর ইকুয়েডর আর কলম্বিয়া?
হয়তো!
তুমি লাতিন আমেরিকার যে দেশেই যাও না কেন, সবখানেই তুমি স্বপ্ন ছাড়া হতাশ মানুষের মিছিল দেখবে!পাবলো বলে।
আমি জানি পাবলো, আর্জেন্টিনার মানুষ কিন্তু সমাজতন্ত্র থেকে সরে গিয়ে পূঁজিবাদকে আকড়ে ধরেও কিছুই পায়নি। পেরন ও ইভা পেরনের সময়, তারপর একটা দীর্ঘ সময় সামরিক শাসনের নিষ্পেষন আর সেই সময় হাজার হাজার মানুষের হত্যা, নির্যাতন আর নিখোঁজ হওয়া সব মিলিয়ে আর্জেন্টিনার সাম্প্রতিক ইতিহাস খুব রক্তাক্ত। আমি বললাম।
কিন্তু তুমি আমায় বলো আর্জেন্টিনা নিয়ে তোমার আগ্রহ কিভাবে হলো?
চে, মারাদোনা আর ইভা পেরন, এই তিনজনের কারনে।ইভা পেরন পৃথিবীর প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আমি বলি। দূঃখের বিষয় হলো, অনেকে আমার সাথে মারাদোনা বিষয়ে কথা বলতে চাইলেও, খুব কম মানুষই চের ব্যাপারে কথা বলার আগ্রহ দেখিয়েছে।
এর কারণ হলো আর্জেন্টিনার মানুষ আর স্বপ্ন দেখে না। শোষণহীন সমাজ এখন শুধুই একটি ইউটোপিয়া। অবাস্তব, অলিক কল্পনা মাত্র। পাবলো বলে।
আমি জীবনে সফলতার আকা়ংখা নিয়ে ছোটা মানুষের স্বপ্ন চূরমার হতে দেখেছি। কিন্তু নিজের জন্ম ভূমি নিয়ে কারো স্বপ্ন চূর্ণ হলে তা দেখা সত্যিই বেদনার।
তুমি কি তোমার দেশ নিয়ে, দেশের মানুষের সুখ দুঃখ নিয়ে স্বপ্ন দেখো? পাবলো এবার আমায় জিজ্ঞেস করে।
হ্যা। দেখি। সবসময়। যদিও আমি জানি পাবলো বাংলাদেশ নিয়ে কিছুই বলতে গেলে জানে না। উপমহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র ভারত নিয়ে ওর আগ্রহ আছে, তাও রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে নয়। মহাত্মা গান্ধী, ইয়োগা আর ভারতীয় খাবার নিয়ে কিছুটা উৎসাহ দেখেছি।
বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ১৯৭১ সালে আর আর্জেন্টিনা ১৮১৮ সালে। তাই হয়তো আমার স্বপ্ন দেখার সময় শেষ হয়ে যায় নি,আমি ম্লান হেসে বলি।
আজকে রাতে কি করছো?
ট্যাংগো দেখতে যাব ভাবছিলাম,আমি বললাম।
আর্জেন্টিনা আসবে আর ট্যাংগো দেখবে না, তা হয় নাকি? চলো আমি তোমাকে খোলা উঠোনে যেখানে অপেশাদার ট্যা্ংগো নাচ হয় সেখানে নিয়ে যাব। তোমার মনে থাকবে। চলো, ওঠা যাক।
আনালিয়া আমাকে নাচার জন্য ডাকছে। চূড়ো করে বাঁধা কালো চুল, কালো আঁটসাঁট পোশাক, টকটকে লাল শাল, লাল ঠোঁট, আনালিয়াকে অপার্থিব মোহময়ী অপ্সরা লাগছে। আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো নাচ দেখছি, কিন্তু মনে হচ্ছে একটা স্বপ্ন দেখছি। আনালিয়ার জুতার ক্লান্তিহীন খটখট শব্দ, গিটারের সুরের মূর্ছনা আর হাজার দর্শকের অবিরাম করতালি, মধ্যরাতের উজ্জ্বল জোছনার আলো, আমার চোখে যেন তন্দ্রা ভর করে। পাবলো আসার সময় বলেছিলো, দরিদ্র্য শ্রমিকরাই প্রথম ট্যাংগো নাচ শুরু করে। হয়তো সে জন্যেই জীবনের জটীলতা, দুঃখ ভুলতে তারা আজও নেচে চলেছে। আমি কোন দামী ক্লাবে অথবা হোটেলে নাচ দেখতে চাই না। তাই এখানে আসা।
আনালিয়া পাবলোর বান্ধবী। সকালে একটা স্কুলে পড়ায়। সন্ধ্যায় এলাকার ক্যাফে তে নাচে। আজকে আবহাওয়া ভালো, মৃদু হালকা বাতাস হচ্ছে। আমরা ক্যাফের বাইরে খোলা উঠানে বসেছি। রকমারি ফুলের ঝোপের মাঝে লুকানো ছোট ছোট বাতির আলোয় আর মোমবাতির নরম আলোয় সবাই নাচছে। কিছুক্ষন পর পর খুব জোরে করতালির শব্দে কান পাতা যাচ্ছে না। আমার মনে হলো, এই মানুষগুলো কি সত্যিই নিজের দেশ নিয়ে সব আশা ছেড়ে দিয়েছে? এই নাচ, এই উচ্ছ্বাস, এই গিটারের বাজনা সবই কি এক পরাবাস্তব জগতে বিভোর হয়ে বাস্তবতা ভোলার এক চেষ্টা মাত্র?
রাত গভীর হয়। আনালিয়া হঠাৎ করেই কবিতা আবৃত্তি করে স্প্যানিশ ভাষায়। আর্জেন্টিনা যে খানেই আমি গিয়েছি মানুষের সপ্রতিভতা আমাকে ছু্ঁয়ে গেছে। কবিতাটি না বুঝলেও পাবলো যেভাবে আনালিয়ার হাত ধরে আছে তা দেখে এযে ভালবাসার কবিতা বোঝা যায়।
আনিলায়া, আজ থেকে এক শতাব্দী আগে আমার দেশের এক কবি আর্জেন্টিনায় এসেছিলেন, জানো? আমি বলি।
পাবলো অবাক হয়ে বলে, তাই নাকি? কে?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
পাবলো কখনো রবীন্দ্রনাথের নাম শোনেনি, তার অবাক চাহনি বলে দেয়। আমি এবার পাবলোকে রবীন্দ্রনাথের আর্জেন্টিনা আসার কারন বলার চেষ্টা করি।
রবীন্দ্রনাথ আর্জেন্টিনা এসেছিলেন ১৯৩০র দশকে। বুইনেস আইরেসে তার দেখা হয় আর্জেন্টাইন কবি ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর সাথে। রবীন্দ্রনাথের বহু কবিতা ও গানের অনুপ্রেরণা ছিলেন ভিক্টোরিয়া।’
রবীন্দ্রনাথ ভিক্টোরিয়ার নাম দিয়েছিলেন বিজয়া। আমি বলি।
পাবলো খুব অবাক হয়ে বলে, তাই নাকি? কই আমরা কেউই জানি না তো। ভিক্টোরিয়ার নাম অবশ্য শুনেছি কিছুটা।
গভীর রাতে অনুষ্ঠান শেষ হলো, আমাকে পাবলো আর আনালিয়া এগিয়ে দিচ্ছে, আমরা এলোমেলো পায়ে হাঁটছি। চাঁদের আলো আর রাস্তার হালকা বাতি আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
আনালিয়া বলে, তুমি আমাদের বাংলা নাম দিলে কি দেবে, মনআমোর (প্রিয়)?
আমি কিছুক্ষন চুপ থেকে বলি, তোমার নাম দেব মিতালী আর পাবলোর মিত। মিতালী আমার দিকে জিজ্ঞেসু দৃষ্টিতে তাকালে আমি বললাম, এদুটি শব্দেরই অর্থ বন্ধু।
বুইনেস আইরেসের চওড়া রাস্তায় চাঁদের আলোয় আমার দুই আর্জেন্টাইন বন্ধুর হাতে হাত জড়িয়ে হাঁটতে হাঁটতে আমার মনে হলো বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার কোন দেশ, জাতি, ধর্ম বা বর্ণ কিছু হয় না। বন্ধুত্বের বন্ধন হয় মনের সাথে মনের মিল হলে। আনালিয়া একটি স্প্যানিশ গান গাইছে মনের সব আবেগ দিয়ে। আমার মনে হলো সে আমার কালকের বিদায় নিয়েই গাইছে এই বেদনাবিধুর মন ছুঁয়ে যাওয়া গান।
আজ আমার আর্জেন্টিনায় শেষ দিন। আমি, মিত আর মিতালী বুইনেস আইরেস থেকে উরুগুয়ের রাজধানী মন্টেভিডিও যাওয়ার ফেরি ঘাটে অপেক্ষা করছি। লা প্লাটা নদীর মোহনার ওপারে আতলান্তিক মহাসাগরের তীরে মন্টেভিডিও শহর। মনে হচ্ছে আমার হৃদয়ে যেন রক্ত ঝরছে। পায়ের নীচেশর্ষে নিয়ে চলা আমি আজ আবার ভালোবাসার মানুষদের বিদায় জানাচ্ছি। চে গুয়েভারা থেকে মারাদোনা, ট্যাংগো থেকে রবীন্দ্রনাথ কি নিয়ে এ কদিন আলাপ হয়নি!লাতিন আমেরিকার মানুষ ও ইতিহাস আরো জানার অদম্য আকাংখা নিয়ে আমি উরুগুয়ের মাটিতে পা রাখি। আদিওস আর্জেন্টিনা, ওলা উরুগুয়ে।
মন্টেভিডিও, উরুগুয়ে, এপ্রিল, ২০০৬