দুপুর গড়িয়ে
নিখোঁজ স্তব্ধতার মাঠ ঠোঁটে নিয়ে তখনও
বাতাস বাজে সবুজের ডানায়
কোথাও কাঠ গোলাপ ফোটা মিহি শব্দের ভেতর
দুপুর গড়িয়ে যায়। আর
এইসব দেখে নেয়া পরিধির আলোছায়ায়
স্নানশেষে গৃহলক্ষ্মীর ভেজা মীমাংসার সুবাস নিয়ে
উড়ে গেছে আঁচলের হাওয়া—
একটা ঘাম-দুপুর হলুদ বিক্ষেপণ ছড়ায় বারান্দায়
কোন এক সংযোগ তৈরির আচ্ছাদনে
জড়িয়ে যাচ্ছে ভিন্ন বলয়ের গল্প—
নীচের রাস্তা পেরিয়ে যায় টুংটাং সাইকেল
সাথে, বিপুল তরঙ্গ হে—
আর নীল সমুদ্র খুলে জলমগ্নতা স্থির হতে থাকে
কৈশোর পেরিয়ে যাওয়া উচ্ছলতার সমান্তরাল।
সন্তাপ
উপুড় আকাশের জমিনে
যেসব পরির দল ডানা খুলে ঘুরে বেড়ায়
তাদের অনন্ত অভিসারে ডেকে নেয়
কৃষ্ণের বাঁশি, কিউপিড বা বেণীবাধব, নবীন পুরুষ
অভিসন্ধি আলোছায়া গল্পের ভিতর,
মানুষের প্রবণতা সে কে আর বুঝেছে কবে!?
এরচেয়ে বেশী আচ্ছাদনে জড়াতে হলে
পড়ে নিতে হবে—
প্রেম পর্যায়ের চ্যাপ্টারে বৃষ্টি
তার তালে সুতো ও পুতুলের ভিজে যাওয়া
যেতে যেতে পৌঁছে যাবে
খাদের কিনারে বিপজ্জনক,
তখন চোখের থলিতে
অন্ধ তির ছুটে না অব্যর্থ নিশানায় ।
বিভ্রান্তির ভিতর জমা হয় হিম নির্জনতা
কেবল কুয়াশা মেঘ ধোঁয়াশা আঁধার
ফিরে যায় ব্যক্তিগত বিলাপের সন্ন্যাসে ।
এবার মৃত্যুর অধিক এক ফোটা জীবন,
নিজেকে গুঁজে দিয়ে নিজের ভিতর
ডানা ভাঙা রূপসীরা প্রার্থনায় খুঁজে নেয়
বিবর্ণ বিস্মরণের ঘুম!
নিঃস্বতার ছবি
ফিরে না দেখার মত নির্দয় চোখ নিয়ে
নিরুদ্ধ সময় নিঃশ্চুপ।
তরঙ্গের বিনিময় দোল থেমেছে
ঘোলা অন্ধকারে
শতবার মনে করা অনুভবের ভিতর
কোন ঢেউ আর আছড়ে পড়ে না কোন কুলে।
দৃষ্টি সীমায় দেখা না দেখা
বৃষ্টির ভিতর ভাঙ্গা ছাতার মতো
একটা নিঃস্ব বিকেল পড়ে আছে।
সুন্দর ও যথার্থ
সুন্দর ও যথার্থের অনুসন্ধান প্রায়শই
হতবাক পড়ে থাকে সাদা পৃষ্ঠায় ।
এর মুহূর্তকাল যাপন মুখে রক্ত তুলে
জ্বরাগ্রস্থ বিলাপের কতশত গল্প অজানা রেখে
ভেঙ্গে গেছে তোমাদের যাবতীয় আসর ।
যা রয়ে গেলো আলোর মুখে,
কচি সবুজ পাতায়
তাতে কোন অস্থিরতা নেই, সংশয় নেই
সতত জারিত চোখে বরং মুগ্ধতা।
যথার্থ হোলেই তা সুন্দর প্রবোধে
বাঁক ঘুরে গেছে
জীবনের দীনতার মুচলেকায়
বোধ ও প্রকাশের মাঝে আটকে থাকা
অক্ষমতা নিয়ে সহস্র নক্ষত্র মরে গেছে পৃথিবীর ধুলায়।
আলোর পরী হে—
ভয়ংকর পরিত্রাণ নিয়ে কখনো সময়
অথবা মানুষ— উপসংহার লিখে।
প্রেমে না, ঘৃণা করে না, অপারগতায় এবং
বলা ভালো— শুভাকাঙ্ক্ষায় ।
স্মৃতি ও মনন, সবটুকু জুড়ে পাঠ
পূর্ব-পুরুষ
আগে থেকেই নির্ধারিত
দুর্মর রীতির ছকের জীবন।
বহুদিন আভাসে ছিল,
আধেক গিয়েছে বলে
আধেক রেখেছে অব্যক্ত অভিধানে ।
আজো তারে ফিরে যেতে দেখি—
আলোর পরী হে,
হে যৌবনা, প্রাঞ্জল প্রেয়সী
জবুথুবু, দিগভ্রান্ত তাকে তুমি শুশ্রূষা দিও
ভুল করেও বিরহ দিও না ।
তৌহীদা ইয়াকুব
জন্ম টাঙ্গাইলে। প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁর প্রতিষ্ঠিত স্কুল কলেজ থেকে পড়াশুনা শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ হয়েছে। লেখালেখির শুরু সেই ছোটবেলা থেকেই। স্কুলের দেয়ালিকায়, বার্ষিক সাংস্কিতিক অনুষ্ঠানে স্বরচিত কবিতা পাঠ এসব দিয়ে। এরপর প্রায় ১৫ বছর লিখেননি। বারবার শুরু ও ছাড়া। এই ছেড়ে যাওয়া, ফিরে আসার মাঝে কবিতা তাকে কখনই ছেড়ে যায়নি। ২০১৪ থেকে আবারও নিয়মিত লিখছেন। যদিও হারিয়ে ফেলেছেন পুরানো সব লেখাগুলো। কবিতা লেখা ছাড়াও, আবৃত্তি করা, বই পড়া, গান শোনা ও মুভি দেখা পছন্দের বিষয়।
বর্তমানে বসবাস ফ্রান্সের দক্ষিণে পারপিনিয় শহরে। পারপিনিয় শহরের এক পাশ ভূমধ্যসাগর, আর তিন পাশ পাহাড় বেস্টন করে রয়েছে। তাই সমুদ্রের চেয়ে পাহাড় তাকে বেশি টানে।