দ্য আন্ডারগ্রাউন্ড রেলরোড
৫
স্টিভেন্স
প্রক্টর মেডিকেল স্কুলের এনাটমি হাউসের অবস্থান প্রধান ভবনের তিন ব্লক পরে। রাস্তার একেবারে শেষ প্রান্তের দিক থেকে এটি দ্বিতীয় ভবন। বোস্টনের বেশি পরিচিত কলেজগুলোর মতো এই কলেজে সাদা-কালো বৈষম্য নেই। কাজেই এর চাহিদাও বেশি। আর সে চাহিদা পূরণ করতে এখন এর সম্প্রসারণ প্রয়োজন। এলাসিয়াস স্টিভেন্স তার ফেলোশিপের জন্য রাত জেগে কাজ করেন। বিনিময়ে তার টিউশন ফি মওকুব করা হয়েছে এবং তিনি কাজ করার ফ্রি একটা জায়গাও পেয়েছেন। রাত গভীর রাতে হলে চারদিক নিঃশব্দ, নীরব হয়ে যায়। গবেষণার জন্য এ সময়ই সবচেয়ে উযুক্ত। এখানে এনাটমি স্কুলের জন্য একজন লাশ চোর দরকার।
কার্পেন্টার সাধরণত ভোর পর্যন্ত কাজ করে। কিন্তু আজ তাকে মাধ্যরাতে ডেকে আনা হয়েছে। স্টিভেন্স আলোটা নিভিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলেন। আজ তিনি মাফলার নিতে ভুলে গিয়েছিলেন। তাই শীতের কামড় কত বেশি তা বেশ টের পেয়েছেন। এখনও শরৎ শেষ হয়নি। তাতেই এমন কনকনে শীত। জানান দিচ্ছে শীতকালে কী রকম শীত পড়বে। আজ সকালে একটু বৃষ্টি হয়েছে। তবে রাস্তায় তেমন কাদা হবে না। তার মাত্র একজোড়া ব্রগ জুতো আছে। তারও সোলের অবস্থা খুব খারাপ।
সাথে কবকে নিয়ে কার্পেন্টার ড্রাইভারের আসনে বসে অপেক্ষা করছে। স্টিভেন্স গাড়িতে একটা টুলের উপর বসলেন। তিনি একটু পিছিয়ে বসলেন যাতে তাদের সাথে তার ভাল দূরত্ব তৈরি হয়। এমনিতেই দেরী হয়ে গেছে। শিকাগো থেকে আসা একজন হাড় বিশেষেজ্ঞ আজ একটা প্রেজেন্টেশান করেছেন। এখন হয়ত সঙ্গীসাথীদের নিয়ে তারা বারে মদ পান করছেন। স্টিভেন্স আজকের বক্তৃতা শুনতে পারেননি। এজন্য তার খুব খারাপ লাগছে। এমন বক্তৃতা অনুষ্ঠানের কারণে প্রায়ই তার ফেলোশীপের কাজ বাধাগ্রস্ত হয়। কিন্তু এতে তার অর্থকড়ির সংকট মেটে। এখানে আর যারা গবেষণা করছেন তাদের বেশির ভাগই ম্যাসাচুটেটসের ধনী পরিবারের। থাকা-খাওয়ার পয়সা নিয়ে তাদের কোন চিন্তা নেই। গাড়িটা ম্যাকগিন্টি পেরোনোর সময় তিনি ভিতরে লোকজনের হাসির শব্দ শুনতে পেলেন। স্টিভেন্স তার হ্যাটটা একটু নামিয়ে দিলেন যাতে কেউ তাকে দেখতে না পায়।
কব একটু হেলান দিয়ে বসেছে। এসো, আজ রাতে কনকর্ড উপভোগ করি। এই বলে তার ফ্লাস্কটা এগিয়ে দিল। কিন্তু স্টিভেন্স ধন্যবাদ জানিয়ে তা পানে অনাগ্রহ জানালেন। গবেষণা এখনও শেষ হয় নি। এরই মধ্যে তিনি মানুষের স্বাস্থ্য সম্পর্কে বেশ কিছু বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে গেছেন। ঝাপটা বাতাস বইছিল। এনাটমি হাউসে পৌঁছাতে তাদের এখনও বেশ দেরি আছে।
কব মনে হয় সুঁড়িখানা থেকে কাল রাতে মদের তলানিটুকুও নিয়ে এসেছে। স্টিভেন্স তাই নিয়ে বেশ হাসাহাসি করলেন। কব বেশ আমুদে লোক। সবাইকে সে জমিয়ে রাখে। সবাই বলে, কব যতই মদ গিলুক সে কখনও তাল হারায় না। রাতের অভিযানে তাকে সব সময়ই পাওয়া যায়। কবর খুঁড়ে যারা লাশ চুরি করে মেডিকেল কলেজগুলোতে এনাটমি ডিসেকশনের জন্য দেয় তারা অভিযান চালায় রাতের বেলা। এখানে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের পর থেকে এনাটমি ডিসেকশনের জন্য লাশের আকাল শুরু হয়। আইনত আদালত জেলখানায় মারা যাওয়া বা বেশ্যাদের লাশ কিংবা কেউ খুন হলে সে লাশ মেডিকেলে দেওয়ার আদেশ দিতে পারে। আর বিকলাঙ্গ বা অজানা রোগে কেউ মারা গেলে সে লাশও বিক্রি করার বিধান আছে। কোন ডাক্তারও মৃত্যুর পর তার মরদেহ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার জন্য কলেজে দান করে যেতে পারেন। এসব সত্বেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক লাশ পাওয়া যায় না। লাশের কারবার বেশ জটিল। যে কেনে বা যে বেচে উভয়ের জন্যই বেশ ঝামেলার। ধনী মেডিকেল কলেজগুলো গরিবদের লাশ উচ্চ মূল্যে কিনে নেয়। লাশের কারবারিদের কয়েক ধাপে হ্যাপা সইতে হয়। লাশ গায়েব করে চোর, একজন সেই লাশ লুকিয়ে রাখে এবং শেষ পর্যন্ত একজন জায়গামত লাশ পৌঁছে দেবে। সব ঘাটেই পয়সা দিতে হয়। সেশন যখন শুরু হয় তখন লাশের দাম থাকে আকাশচুম্বি। আর শেষের দিকে কোন চাহিদাই থাকে না।
ডাক্তার স্টিভেন্সকে প্রায়ই এই ধরনের মরবিড প্যারাডক্সের মুখোমুখি হতে হয়। তার পেশাটাই এমনই। ডাক্তার হিসেবে তার কাজ জীবন বাঁচানো। অন্যদিকে গবেষণার জন্য তার দরকার মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি। পেশাদারিত্বে ঘাটতি হলে জজ সাহেব তাকে সমন দিয়ে আদালতে কৈফিয়ত চাইতে পারেন। আদালত যদি মনে করে, অনৈতিকভাবে কোন লাশ জোগাড় করা হয়েছে তাহলে তাকে সাজা দেবার এখতিয়ার আদালতের আছে। প্রক্টর হাসপাতাল তাই ছাত্রদের প্যাথোলজিকাল স্পেসিমেন পাবার ব্যবস্থা করে।
প্রথম ডিসেকশনে স্টিভেন্সের দুটো লাশ দরকার ছিল। কী করে তিনি দুটো লাশ সংগ্রহ করবেন? কীভাবে দুটো লাশ কেনার অর্থ জোগাড় হবে? তিনি মেইনে ফিরে এসে তার মায়ের রান্নার তৈজসপত্র বেচে দিলেন। তার মা এগুলো উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন।
কার্পেন্টার তার সাথে কাজ করার জন্য স্টিভেন্সকে আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা গ্রহণে সামান্য দ্বিধা করেননি। তাকে দেখে স্টিভেন্স ভয় পেলেন। ষণ্ডামার্কা চেহারা। কয়েক মাসের মধ্যে তার পয়লা লাশটা সরবরাহ পাওয়া দরকার। আইরিশ এই লাশ চোরটা যেন সাক্ষাৎ দানব; যেমন ভয়ংকর তার চেহারা, তেমনি কথাবার্তায় একেবারে গেঁয়ো। ভদ্রতার বালাই নেই তার মধ্যে। দেখে মনে হয় এক তাল মাটি জমাট বেঁধে আছে।
কার্পেন্টার পরিবারের ছয় সন্তান। দুটো পীতরোগে মারা গেছে। তারা বাচ্চা দুটো এনাটমির ডিসেকশনের জন্য বিক্রি করে দেয়। এমনও হতে পারে এগুলো বানোয়াট, স্রেফ গল্প। স্টিভেন্সের তখন লাশ পাওয়া খুব দরকার। শবদেহ পাচার এখন সাধারণ ঘটনা। কাজেই আবেগতাড়িত হয়ে লাভ নেই।
এই প্রথম কবর খুঁড়ে লাশ চুরি করছে, ব্যাপারটা কিন্তু আদৌ তা নয়।
সুঁড়ির দোকান থেকে ক’টা মাতাল জোগাড় করে সে একটা গ্যাং তৈরি করে ফেলল। তারা সারাদিন ঘুমায়, সন্ধ্যায় মদ গিলে চুর হয়ে থাকে। তারপর আড্ডা মারে। “সময়টা খুব ভাল না; কিন্তু চোরদের জন্য এটাই সেরা।” তারা সংশোধনের অযোগ্য বদমাশ। পাড় ক্রিমিনাল। একেবারে ইতরের ইতর। কবরখানা থেকে লাশ চুরি করা ইতরামির শেষ। গবেষণার জন্য ইঁদুরের মত তারা লাশের কারবার করে। এখানেও তুমুল প্রতিযোগিতা চলে। সময়মত একটা লাশ চুরি করতে না পারলে অন্য কোন দল তা চুরি করে নিয়ে যাবে। এক প্রতিযোগীর এমন একটা লাশ চুরির ঘটনা সম্পর্কে কার্পেন্টার পুলিশকে জানিয়ে দেয়। পুলিশ সাথে সাথে ডিসেকশন রুমে অভিযান চালিয়ে পঁচাগলা সেই লাশ উদ্ধার করে। একই লাশ চুরি করতে প্রতিযোগীরা এক সাথে গোরস্তানে হাজির হলে প্রায়ই মারামারির বাঁধে। গালাগালি হৈচৈ করে তারা পাড়া মাথায় তোলে। তারা একে অপরকে রক্তাক্ত জখম করে।
কার্পেন্টারের যখন সুদিন ছিল তখন সে বিশেষ নৈপুন্যে অন্যদের প্রায়ই বোকা বানাত। শয়তানিতে তার জুড়ি নেই। গাড়িতে করে সে ইট, পাথর এনে কবরে ঢুকিয়ে লাশ নিয়ে পালাত। মর্গের চারপাশে ঘোরাঘুরি করে অপরিচিত মানুষের লাশের খবরাখবর জোগাড় করত। তারপর লাশঘরে হাজির হয়ে সে দাবি করত এটা তার কোন ভাইপো বা ভাগ্নির লাশ; অনেকদিন ধরে নিখোঁজ ছিল। মর্গে গিয়ে সে এমন কান্নাকাটি শুরু করত যে কেউ তাকে সন্দেহ করত না। এভাবে সে অন্যের লাশ মর্গ থেকে নিয়ে ভাগত। ভাইপো-ভাগ্নি পরিচয় দিয়ে এভাবে অন্যের কত লাশ নিয়ে সে ভেগেছে তার শুমার নেই। অন্য কোন উপায় না দেখলে সে লাশের জিম্মাদারের চোখ ফাঁকি দিয়ে লাশ চুরি করে পালাত। একাধিকবার সে এনাটমি রুমে হাজির হয়ে কোন লাশের মালিকানা দাবি করে পুলিশকে খবর দিয়ে বলেছে, লাশটা তার মৃত ছেলের। বউকে সাজিয়ে নিয়ে গিয়ে সেখানে এমন কান্নাকাটি শুরু করাত যে পুলিশও বোকা বনে যেত। তারপর কার্পেন্টার সেই লাশই আবার অন্য কোন এনাটমি স্কুলে বিক্রি করে দিত। বেওয়ারিশ লাশের কবর দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। কেউ কোন লাশ নিজের কোন আত্মীয় বলে দাবি করলে সরকারের খরচ বাঁচে, ঝঞ্ঝাটও এড়ানো যায়। তাই এসব নিয়ে কেউ তেমন মাথাও ঘামায় না।
লাশচুরি এত ব্যাপক আকার ধারণ করল যে স্বজনেরা প্রিয়জনের কবর পাহারা দেবার জন্য পাহাদার নিযুক্ত করতে বাধ্য হল। কেউই চায় না কবর শূন্য করে চোরেরা রাতের আঁধারে আপনজনের শবদেহ চুরি করে নিয়ে যাক।
পরে আবির্ভূত হল ছেলেধরার দল। এরা শিশুদের ফুসলিয়ে নিয়ে পালাতে শুরু করল। কাউকে বা মায়ের কোল থেকে জোর করে ছিনতাই করে পালায়। পরে তাদের মেরে ফেলে লাশ এনাটমি ডিসেকশনের জন্য বিক্রি করে। পৃষ্ঠাজুড়ে এ ধরনের খবর প্রায়ই খবরের কাগজে বের হতে লাগল। সেই সাথে কড়া সম্পাদকীয়। এর ফলে টনক নড়ল অনেকের। আইন তৈরি হল। লাশচুরি বা ছেলেধরা দলের বিরুদ্ধে কড়া আইন তৈরি হলে বদমাশগুলোও ভিন্ন পথ ধরল। এবার তারা এই দুষ্কর্মের জন্য তাদের কাজের এলাকা বাড়িয়ে নিল অনেক দূর পর্যন্ত। কার্পেন্টার এবার নজর দিল বিশেষ করে নিগ্রোদের উপর।
নিগাররা তাদের স্বজনের লাশ পাহারা দিত না। তারা এসব নিয়ে কোন পুলিশ বা পত্রিকার কাছে নালিশ জানায় না। আর পুলিশও এ নিয়ে মাথা ঘামায় নি, কোন সাংবাদিকও এসব নিয়ে দু’ কলম খবর লেখেনি। ফলে, চোরের দল বস্তায় ভরে লাশ পৌঁছে দিতে লাগল মেডিকেল স্কুলে এনাটমির হিমঘরে। সব কিছুই রহস্যময় হয়ে রইল। স্টিভেন্সের কাছে এসবই ঈশ্বরের মহিমা।
কুকুর যেমন হাড়গোড় নিয়ে কাড়াকাড়ি করে, তেমনি কার্পেন্টার নিগার শিশুদের ছিনতাই করে পালায়। সে ঘৃণার সাথে বলে, নিগার। স্টিভেন্স কখনও নিগার শব্দটা উচ্চারণ করেন না। তিনি বর্ণবৈষম্যে বিশ্বাসী নন। অশিক্ষিত, বর্বর প্রকৃতির মানুষ এই আইরিশ শে^তাঙ্গ কার্পেন্টার। নিজেকে সে নিগ্রোদের চেয়ে উন্নত জাত হিসেবে গণ্য করে। কবরের গন্ধ শুঁকে শুঁকেই তার জীবন কেটেছে। শেষ বিচারে একজন শ্বেতাঙ্গ ডাক্তার আর তার মধ্যে কি-ই বা পার্থক্য? যদিও কথাটি সে নিজে কখনও বলেনি। কখনও সখনও স্টিভেন্স ভাবেন, আধুনিক যুগের বিচারে কি তার মত অদ্ভূত শোনায় না? বোস্টনের মেডিকেল স্কুলের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা নিগ্রোদের সম্পর্কে নানা কু কথা বলে। নিগারদের কুৎসিত চেহারা, গায়ে বিকট গন্ধ, বুদ্ধিসুদ্ধি একবারেই কম, আদিম আচরণ সব কিছু নিয়েই তাদের ঘৃণা উপচে পড়ে। আবার মেডিকেলে পড়ুয়া একই শিক্ষার্থী কালো একটা মৃতদেহে ছুরি চালাতে চালাতে ভাবে, তারা এসবই করছে স্রেফ কালোদের উন্নতির জন্যই। তারা দাসপ্রথা বিলোপকারীদের চেয়ে অনেক বড় মাপের কাজ করছে নিগ্রোদের স্বার্থে! মৃত্যুর পরই মেডিকেল স্কুলে কেবল একজন নিগ্রো মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি পায়; মৃত্যুর পরই একজন কালো সাদা মানুষের সমান হয়।
কনকর্ডের বাইরের রাস্তায় একটা কাঠের গেটে এসে তারা থামল গোরস্থানের জিম্মাদারের সংকেতের অপেক্ষায়। কবর পাহারাদার একটা লণ্ঠন সামনে-পিছনে নাড়িয়ে সংকেত দেবার সাথে সাথে কার্পেন্টার তার গাড়িটা দ্রুত কবরস্থানের ভিতর ঢুকিয়ে দিল। কব পাহারাদারের হাতে বকশিসের টাকাটা গুঁজে দিলেই সে বলল, আজ দুটো বড়, দুটো মাঝারি আর তিনটে শিশুর লাশ দিতে পারবে সে। কিছুক্ষণ আগে বৃষ্টি হয়েছে। তাই মাটিও নরম। খোঁড়াখুড়িতে ঝামেলাও তাই কম। সবগুলো লাশ তুলে গাড়ি ভরতে তাদের ঘন্টা তিনেক লাগবে। তারপর আবার মাটি দিয়ে কবরগুলো এমনভাবে ভরে দেবে যে মনে হবে সেখানে কোন কবরই ছিল না।
“হে হে, এই নেন আপনার ডাক্তারি ছুরি” বলে স্টিভেন্সের হাতে কার্পেন্টার একটা কোদাল ধরিয়ে দিল।
সকালে যথারীতি স্টিভেন্স আবার মেডিকেল শিক্ষার্থী বনে যাবেন। আজ রাতে তিনি যেন মৃত মানুষের একজন পুনর্জন্মদানকারী। কবর থেকে শব তুলে নিয়ে আসছেন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার টেবিলে! কবর থেকে পুনরুত্থান! আহা! একবারে খাঁটি কথা। যে শব তুলে আনা হল তার শরীর থেকে তখনও তরল পদার্থ বেরুচ্ছে। তবে মাল একেবারে খাঁটি।
গত জীবনে সে মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি না পেলে কী হবে, এবার সত্যিই পুনরুত্থানের মধ্য দিয়ে মানব জাতির কল্যাণে সে নিজেকে উৎসর্গ করবে!
স্টিভেন্স মাঝে মাঝে ভাবেন, একটা মৃতদেহ যদি ভাল করে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করা যায়, কেবল তাহলেই বোঝা যায় জীবনের ধর্ম। আর তখন সেটাকে আর প্রাণহীন লাশ মনে হয় না।
মাটিতে কোদাল চালানোর আগে দু’হাত ঘসে সে হাতের রক্ত চলাচল ঠিক করে নিল। (চলবে)
আমিরুল আলম খান
জন্ম যশোর জেলার ভারতীয় সীমান্তলগ্ন শিববাস গ্রামে ১৩৫৮ বঙ্গাব্দের ১৫ই অগ্রহায়ণ।
পড়েছেন এবং পড়িয়েছেন ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য। এরপর মাধ্যমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে যুক্ত থেকেছেন। যশোর শিক্ষা বোর্ডে প্রথমে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পরে চেয়ারম্যান ছিলেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি অপেশাদার সাংবাদিকতায় যুক্ত গত পাঁচ দশক ধরে। ইংরেজি দৈনিকে নিউ নেশান-এ প্রায় এক দশক সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেন। দৈনিক ইত্তেফাক, প্রথম আলো, সমকাল, বণিক বার্তায় কলাম লেখেন।
গ্রামীণ পাঠাগার আন্দোলনে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশে গ্রামোন্নয়নের নতুন মডেল ডিহি ইউনিয়ন পাবলিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেন। দেশের প্রাচীনতম এবং বৃহত্তম গণপাঠাগার যশোর পাবলিক লাইব্রেরির সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
শিক্ষা, ভাষা, প্রকৃতি, কৃষি, বাস্তুসংস্থানবিদ্যায় আগ্রহী। এসব নিয়েই তার বই: বাঙলার ফল, অরণ্যের পদাবলী, পারুলের সন্ধানে, কপোতাক্ষ-মধুমতীর তীর থেকে, বিপর্যস্ত ভৈরব অববাহিকা, পারুল বিতর্ক, বাংলাদেশের শিক্ষার স্বরূপ সন্ধান এবং বিদ্যাবাণিজ্যের রাজনৈতিক-অর্থনীতি।
তাঁর অনুবাদগ্রন্থ: আফ্রিকান-আমেরিকান উপন্যাস দি স্লেভ গার্ল। হ্যারিয়েট অ্যান জেকব রচিত এই আত্মজৈবনিক উপন্যাসটি বোস্টন থেকে প্রকাশিত হয় ইনসিডেন্টস ইন দ্য লাইফ অব এ স্লেভ গার্ল শিরোনামে, ১৮৬১ সালে।