যা দেখছেন মুখোশ
ভেতরে আমি নেই!
৫.
ধূধূ মরুভূমি, দূরে পাহাড়ের সারি
একটি বর্ধিত হাতের তালু দৃশ্যপটে ঢুকে গেছে
তালুর উপর একটি তরতাজা গাছ নিশ্বাস নিচ্ছে
উপরে খণ্ডিত ঘন মেঘ বজ্র বৃষ্টি গাছের উপর ঢেলে দিচ্ছে
ছাতা মাথায় একটি কিশোরী আশ্রয় নিয়েছে তার তলে।
১৫.
ম্যাপেলের বনে দিগন্ত কাত হয়ে আছে
স্যাক্সোফোন থেকে সুরের পরিবর্তে
বের হয় মিনোয়েচার বনানী এবং
ফোটা পদ্ম থেকে বের হওয়া নৃত্যপর বালিকা!
২৫.
মেঘের রাজ্যে আকাশের সমুদ্রে
পাল তোলা জাহাজ ভয়ানক জ্যোৎস্নায় ভাসমান,
পাহাড় টপকে বহু চাকার ট্রাক বয়ে নিয়ে যাচ্ছে
হাওয়ায় মেলে ধরা নক্ষত্র খচিত রাতের চাদর।
২৭.
টাই কোট আছে, আছে দামি হ্যাট সু কিন্তু ভিতরে মানুষ নেই
ফার গাছে পাতা নেই আছে মেঘ, আকাশে পাতাদের ঝোপ উড্ডীন
একজন বুক টেনে খুলে দেখাচ্ছে আর এক পৃথিবী।
৩১.
দেহ সামনে মুখ পিছনে, তুমি দাঁড়িয়ে আছ প্রিয়তমা!
উড়ন্ত ঈগলের ধরে রাখা পিয়ানো
লেগুনের উপর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে প্রেমিক বাজাচ্ছে
তিনটি লাস্যময়ী অপ্সরী ধরে আছে মাথার উপর ত্রি-বিশ্ব।
৪৭.
কাচের এ্যাকুরিয়ামের ভিতরে, জানালা দিয়ে
ইজিচেয়ারে বসে নীল আকাশ দেখছি
বাইরে গোল্ড-ফিসেরা হাওয়ায় উড়ছে।
৮০.
ঊর্ধ্বাঙ্গ সাগরে ডুবিয়ে প্যাসাইডন অর্ধশায়িত
কাঁধে ত্রিশূল, বুক ভর্তি বহুতল ভবন
সেখানে মাছেদের বসবাস।
৯৩.
স্ট্যাচু অব লিবার্টির মশালের আগুনে
আলোকিত একটি নগ্নিকা
এগিয়ে যাচ্ছে স্যাটানের দিকে
নিচে নিউইয়র্ক স্বাভাবিক !
১২১.
আমি কোনো দশকের না
আমি মহাশূন্য দশকের
আমার তিনটি চোখ
চারটি হাত এবং
পাঁচটি পা
তবু মাকড়শা না।
লিলিপুটের দেশে কিঞ্চিৎ বিভীষিকা
আমি মহাপিপীলিকা।
১৩৩.
রাতটা তারকাখচিত, আকাশ খুলে দিয়েছে অর্গল
সুইমিংপুলের জাম্প-প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে
ট্রাকস্যুট খুলে একজন দৌড়বিদ
হান্ড্রেড মিটার বেগে আকাশে দৌড়াতে থাকল!
কাজী গিয়াস আহমেদ
কাজী গিয়াস আহমেদের জন্ম ১লা জানুয়ারি ১৯৬০, ঝিনাইদহ শহরে। পড়াশুনা, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ঢাকা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অংকশাস্ত্র সম্পন্ন করেন। সাহিত্য জগতে প্রবেশ করা থেকেই, একজন নিরলস পাঠক ও কবিতাযাত্রী। লেখালিখি এবং সৃজনশীলতার প্রতি আকর্ষণের কারণে, একজন আড্ডাপ্রিয় মানুষও বটে। ভ্রমণের প্রতি রয়েছে প্রবল টান। এ-পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে তিনটি মৌলিক কবিতা ও একটি নেপালি অনুবাদ কবিতার বই।
১. রোদ পুড়ানো গান।
২. বাতাসের রাগ রাগিণী।
৩. বিভ্রমের স্বরলিপি।
৪. নেপালি কবিতার পাল্লাচিহ্ন, সমসময়িক নেপালি কবিতার অনুবাদ।
একমাত্র কন্যা বৃষ্টি আহমেদ ও স্ত্রী ডাঃ হামিদুন নেছা পাখী। বর্তমানে ঝিনাইদহ শহরেই বসবাস করছেন।