স্বপ্ন
আমি হাঁটছি দ্রাক্ষাবনে, চারদিকে বাতাসের সিম্ফনি,
আজ কোনো ক্ষুধা নেই, পান তেষ্টা নেই, পাখিদের প্রেমে বিষণ্ণতা থমকে দাঁড়ায়।
ওই দূরে টিলায় বোধকরি ঈশ্বর-আবাস, আমার প্রবেশ নিষিদ্ধ।
ঘুমপরীর করুণ ভায়োলিন, চোখ মুদে আসে, ও আকাশ আমাকে
ফেলে মেঘের কাছে যেওনা কো! জানো তো
রোদ আমার প্রেমিক ছিলো! সে অনেক কথা- ঘুমের দেশের চিঠি পড়ছি -কাল
আলিফ লায়লার শাহজাদা স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলো।
আমার মান নির্ণয়
রাস্তা ধরে হাঁটছি, হাঁটছি, এবার দিলাম দৌড়,
দৌড়াতে দৌড়াতে এমন এক জায়গায় এলাম
যার সামনে, পেছনে, ডানে বাঁয়ে কিচ্ছু নেই, শূন্য!
না মাটি, না বসতি, না বাজার, না অফিস না স্কুল
কেবল মাথার উপরে অসীম, আধা ধূসর
আধা ফিরোজা আকাশ, পায়ের নীচে সবুজ জল,
শব্দ নেই, কোলাহল নেই, আসমান আর সবুজ
জল একে অপরকে সন্দেহের চোখে দেখছে!
আমি উড়তে পারছি না ডানা নেই, নীচে ডুবতেও
পারছি না, সাঁতার জানা নেই, আমার আমিকে
শূন্য এবং একের ভেতরে বিসর্জন দিলাম !
ভাবনা
অপরাহ্ণের রোদ যেন, আমার প্রেমিকের মুখ
সব বেদনা ভুলিয়ে দেয় এক নিমিষেই
জানিয়ে দেয়, বুঝিয়ে দেয় জীবন এবং
মৃত্যুর, রহস্যঘেরা ফাঁদ !
বৈপরীত্য
অথচ কিছু ঘরে কমলা আগুন
তাদের ও ছেঁড়া কাঁথার অতীত ছিলো!
এখনো কিছু শীতার্ত আঙুলে
কুঁকড়ে যায়, বিনা ভালোবাসায়
পরিযায়ীদের মতো স্বপ্নকালীন
ওম ও তাপ তাহারা পায়নি !
সভ্যতার কড়চা
একা একা ভাসতে ভাসতে জলও শুকিয়ে গেলো
তবুও সভ্যতা তুই বেহুঁশ হয়ে পড়ে আছিস!
চেতনায় একবিংশ, মননে ঊনবিংশ
সব ক্যারিকেচার তোর নিজের আনন্দে পুড়ছে
আকাশে বাতাসে উড়ছে ছাই, সেদিকে কাহারো
ভ্রুক্ষেপ নাই,লাজুক বনানী সরব হচ্ছে,পাথর
চাওয়া প্রাণীদের বিরুদ্ধে, জনক নেই,জননী
নেই, অপুষ্ট সন্তানে ভরে গেছে, অপসংস্কৃতির
এই জনপদ, ঈশ্বর ও বুঝিবা নিরেট কল্পনা !
জাকিয়া এস আরা
জাকিয়া এস আরা’র জন্ম রংপুরে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স।
পেশাগত জীবনে শিক্ষকতায় জড়িত ছিলেন।
প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ
জীবন ঝুলে আছে (২০১৫)
সেমন্তির চোখ (২০১৭)
নীতুর মুক্তিযুদ্ধ, গল্পগ্রন্থ (২০১৫)
স্মৃতির জানালা, মুক্তিযুদ্ধ কালীন স্মৃতিকথা, (২০১৭)
প্রথম দুটো পড়েছি। সুন্দর।
অসাধারণ! কবিতা গুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো। ভবিষ্যতে আরও নতুন নতুন কবিতা পড়তে চাই।