‘জীবনে কেবল তিনটি জিনিস প্রয়োজন বই, বই আর বই। টলস্টয়ের এই প্রবাদ বাক্যটি আমরা প্রত্যেকে কম–বেশি জানি। কিন্তু মানি আরও কম সংখ্যক মানুষ। সেই কম সংখ্যক মানুষের কাছে জীবনের বোধ, কর্ম সঞ্চালনও ভিন্ন। বই তাঁদেরকে বিশ্বস্ত করে রাখে নানা সমৃদ্ধিতে। বই তাঁদের চারপাশ আলোকিত করে উন্নত রুচি এবং মহৎ প্রবণতায় প্রত্যহ সিক্ত করে রাখে। জীবনকে অর্থময় করে তোলে। বই কেবল সভ্যতার বাহন নয়, তা সভ্যতার প্রাণও বটে। সভ্যতার বিচার করতে গিয়ে আমরা কী দেখি! সেখানে স্থাপত্য, বিজ্ঞান, দর্শন, সাহিত্য, শিল্প নানা রঙে, বর্ণে, গন্ধে থরে থরে সাজানো। সেখানে কৃষ্টি, সংস্কৃতি, চিন্তা–চেতনা, কর্ম, ধর্ম একাকার হয়ে আছে গভীর গুঞ্জনে। তাকে আবিষ্কারের চ‚ড়ান্ত পথটি গ্রন্থ ধারণ করে আছে। গ্রন্থ সেই অতীত থেকে বর্তমান কালাবধি তার নানা ঘটনা–দুর্ঘটনা, নির্মাণ, ধ্বংস, যুদ্ধ মহামারীসহ সম্পূর্ণ জীবনের ছবিটি, তার ভাষাটি অতীত থেকে বর্তমান এবং ভবিষ্যত কালব্যাপী পৌঁছে দেয়ার যোগ্যতা রাখে। ফলে গ্রন্থ হয়ে ওঠে আদরণীয়, বরণীয়, ভালো লাগার দুরন্ত সিম্ফনি।
যে গ্রন্থ বা বইকে নিয়ে এত সব ঘটনা, দুর্ঘটনা, এত সব মানুষের, মনীষীদের জীবন ব্যয়ের ঘটনা সংগঠিত, সেই গ্রন্থ সৃষ্টির পিছনে রয়েছে অসংখ্য মানুষের চিন্তা–চেতনা, কর্ম, শ্রম, সৃষ্টিশীলতা। বই হঠাৎ করেই এত সুন্দর, মজবুত, ঋদ্ধ ও সমৃদ্ধ অবস্থানে যেতে পারেনি। হাজার হাজার বছরের মানুষের চিন্তা, কর্ম প্রচেষ্টার ফলে তা আজ একটি কাঠামোয়, অবস্থানে এসে পৌঁছেছে। সে ইতিহাস চোখ বুঝলেই অনুভব করা যায়। অনুভব করা যায় কবি–লেখকের তাগিদ, প্রকৌশলীদের উদ্ভাবন, শ্রমিকের ঘাম নিঃসৃত ক্লান্তির কাল। বই–এর প্রসঙ্গে মনে পড়ছে মনীষী ম্যাক্সিম গোর্কীর কথা,’বই–এর ঘটনাবলীর সঙ্গে যে জীবনে সংঘটিত ঘটনার একটা তফাৎ আছে সে সম্বন্ধেও আমার মনের মধ্যে এখন একটা সশঙ্ক ধারণার জন্ম হচ্ছে’।‘ অর্থাৎ বই–এর ঘটে যাওয়া ঘটনার চরিত্রের মধ্যে বাস্তবের মিল সব ক্ষেত্রে রক্ষিত হয় না। কারণ, জীবন জীবনের মহিমায় উজ্জ্বল, সাহিত্য সাহিত্যের প্রবণতায় নিত্য প্রবাহিত। বই এবং বাস্তবতা পরস্পরের প্রত্যহ পরিপূরক, সহায়ক, সম্পূর্ণ অনুকরণের নয়। মনীষী ম্যাক্সিম গোর্কী এসব জেনেই বলেছেন,’আমার মধ্যে উৎকৃষ্ট যা কিছু আছে তার জন্য আমি ঋণী বই–এর কাছে।‘ গোর্কী অন্যত্র বলেন,’বই হচ্ছে আমার আত্মার সু সমাচার, যা মানুষের বর্ধনশীল আত্মার যাতনা ও ক্লেশ প্রতিফলিত করে।‘ তাহলে দাঁড়াচ্ছে যে, বই মানুষের ভিতরের রূপটি প্রকাশের পাশাপাশি মানুষকে পরিবর্তিত করে, ধীরে ধীরে বই ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রকেও পরিবর্তনের আওতায় আনে।
বই–এর ভ‚মিকার কাছে জগতের যাবতীয় বস্তু, বিষয় ম্লান। কখনো কখনো তা অকার্যকর। জগতের সব কিছুই পরিবর্তন পায়। সে পরিবর্তনে অগ্রে থাকে সময়। তার গভীরে ঘটে যায় কোটি কোটি মানুষের চিন্তা–চেতনা, ঘাম নিঃসৃত কর্ম। বোধ, বিবেকও জাগ্রত হয় তার নিজস্ব পথে। বই সেই পরিবর্তনের প্রধান হাতিয়ার, অকল্যাণের বিনাশে, আঁধারের বিলোপে নিত্য সঞ্চারণ এবং তার মৌল উদ্ভাস।
সেই ব্যক্তি, জাতি দুর্ভাগা যাদের পছন্দে, আগ্রহে বই–এর তালিকা নেই। সেই ব্যক্তি ও জাতি ধ্বংসময় যার প্রচেষ্টায় সৃষ্টির আয়োজন ম্লান। যার আয়োজনে সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, শিল্প অনুপস্থিত। গ্রন্থ মানব মনের চিকিৎসার কাজটি সুসম্পন্ন করে। শরীরের যেমন অসুখ হয় তদ্রæপ অসুখ হয় আত্মার। তখন আত্মার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন পড়ে চিকিৎসকের। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না কবি–লেখক সেই আত্মার চিকিৎসক। তাঁরা তাদের সার্বিক কৌশল, বোধ, বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে মানুষের মনের চিকিৎসা চালান। বই সেই চিকিৎসার চেম্বার, ক্লিনিক বা হসপিটাল। এখানে এসে পাঠক চমৎকার গোছানো পরিপাটির সঙ্গ লাভ করেন। সেবা পান অসুখ থেকে মুক্তির। পাশাপাশি তাঁর মনের নানা স্তরে বাস করা দারিদ্র্যের, সংস্কারের, নির্বুদ্ধিতার, রুগ্নতার, শীর্ণতার, ক্ষুদ্রতার আঁধারের, অসচেতনতার–রন্ধ্রে রন্ধ্রে–রশ্মি, রস, আলোর প্রক্ষেপন টের পান। এতে তার যাবতীয় বিকলঙ্গতা, অসুস্থতা দূর হয়। পাঠক সজীবতায় উন্নীত হন। তাঁর সমস্যাসমূহ ধীরে ধীরে দূরে সরে যায়। আত্মশুদ্ধির সেই পথে জাগ্রত হয় অসংখ্য সমৃদ্ধি, রূপ, রস, গন্ধ। প্রাণবন্ততার আশ্চর্য প্রকাশ ঘটতে থাকে উত্তরণের। মুক্তির সমৃদ্ধির দুর্দান্ত পথ ক্রমশ সামনে এসে দাঁড়ায়। যে কারণে, সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী লাইব্রেরিকে হাসপাতালের চাইতেও অধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য রেখেছিলেন।
বই–এর জন্য সৃষ্টিশীল কবি–লেখক যুদ্ধ করে থাকেন। প্রকাশকের দল লেখককে নানান প্যাঁচে ফেলে উদ্দেশ্য হাতিয়ে নেন। তথা লেখককে নিংড়ে–নেন আপন স্বার্থে। দিন বদলের পালা সংঘটিত হলেও কবি–লেখকের দিন বা ভাগ্যের কোন পরিবর্তন লক্ষযোগ্য নয়। যাঁরা লেখাকে জীবনের অন্যতম কাজ হিসেবে জানেন, তাঁদের লেখা সমূহের সদগতির প্রয়োজনে তারা সম্মুখে কোনো আলো, ক‚ল–কিনারা খুঁজে পান না। প্রথমে প্রয়োজন পড়ে তাদের লেখাসমূহের খÐ, খÐ প্রকাশ। পাঠক সাধারণের কাছে এই খÐ, খÐ লেখার মাধ্যমে পরিচিতি অর্জন। পাঠকের মনোযোগ স্থান পেলে গ্রন্থ বা বই প্রকাশের প্রয়োজন পড়ে। হঠাৎ করে কোনো কবি–লেখকের বই–এর প্রকাশনা যুক্তিসংগত নয়। নতুন কবি–লেখকের জন্য প্রধান ক্ষেত্র সাহিত্য পত্রিকা। সাহিত্যের নানা প্রকাশনায় নিজের লেখাটি তুলে ধরতে ধরতে বই–এর কাছে চলে আসতে হয়। স্বভাবত বই প্রকাশনার ক্ষেত্রে দুই শ্রেণি লেখকের অবস্থান চোখে পড়ে। এক শ্রেণি জীবনের প্রথম লেখাগুলিকেই বই–এর মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকেন। আর–এক শ্রেণি বিভিন্ন পত্র–পত্রিকায় লিখতে লিখতে বই–এর প্রকাশনার দিকে ঝুঁকে পড়েন। এক্ষেত্রে যে সরাসরি বই–এর দিকে ঝুঁকে পড়ছেন সেই লেখকের পাঠক পরিচিতি না থাকায়–তাঁর বইয়ের চাহিদা বা উপযোগ সৃষ্টি অসম্ভব ব্যাপার। তাঁর প্রচার, প্রসারের ক্ষমতা, যোগ্যতা, শক্তি থাকলে হয়তো কিছুটা সার্থকতা সংঘটিত হতে পারে। নইলে একদম পানিতে পড়ার অবস্থা আসে। অন্যদিকে কিছুটা হলেও পরিচিত নতুন লেখকের কিছু পাঠক পরিচিতি থাকায়, তাঁর বই–এর সামান্য হলেও কিছুটা কাটতি ঘটে। ফলে তাঁর সার্থকতার পথটি মসৃণ ও পেলবতায় উন্নীত হয়।
তাছাড়া এ সত্যতো সবারই জানা যে, কবি–লেখকের সাথে পাঠকের সংযোগ প্রধান ঘটনা। পাঠক ছাড়া কবি–লেখকের শ্রম, প্রচেষ্টা সৃষ্টিশীলতার,কোন অর্থ নেই; উদ্দেশ্য নেই। তাই পাঠকের দুয়ারে পৌঁছানোর জন্য কবি লেখকের ভিন্ন ধরনের সচেতনতা, দৃষ্টি প্রয়োজন। নিজের লেখাকে চিরন্তন, অনিবার্য, ঋদ্ধ, বলিষ্ট করার জন্য–নিরন্তন চিন্তা–ভাবনা, প্রচেষ্টা–পরশ বাড়ানো বুদ্ধিমানের কাজ। এ ক্ষেত্রে মিডিয়ার ভ‚মিকার কথা স্মরণে রাখতে হয়। অনেক সময় মিডিয়ার আনুক‚ল্য পেলে কবি–লেখক সাহস, উদ্দীপনা ও প্রেরণা পায়। বিষয় ও ঘটনার সমঝদার হয়ে পাঠক, সমালোচক জাগ্রত হয় জীবনের পথে। এক কাল থেকে আরেক কালে, এক সমাজ, জাতি ও দেশ থেকে আরেক সমাজ, জাতি ও দেশের কাছে গ্রহণে, মননে কবি–লেখক সমাদৃত হন। এ পথের স্বপ্ন দেখতে ও দেখাতে কোনো দোষ নেই। এই পথের যাত্রারা কখনো নিঃশব্দে, কখনো সশব্দে উচ্চকিত। এই পথই চিরন্তন পথ, এই ভাবনা বাস্তবতা নিঃসৃত। এ পথই চিরন্তন হবার পথ, বিশেষ ভাবে জাগ্রত হবার মৌল অভীপ্সায় প্রত্যহ ঝংকৃত। সুরে, গন্ধে, রূপে আলোড়ন ও বিলোড়নের প্রধান ঘটনা। একে অস্বীকার করা মানে লেখাকে অস্বীকার করা। একে উপেক্ষা করার অর্থ সভ্যতাকে উপেক্ষা করা। কাজেই সাহিত্যের বাস্তবতার পথ ও প্রচেষ্টা নিয়ে কবি–লেখকদের একনিষ্ঠ হতে কোনো দ্বিধা, সংশয় থাকা উচিত নয়।
কবি–লেখকের আনুকূল্য প্রয়োজন। পৃষ্টপোষকতাহীন প্রহরেরা সরবতা খুঁজে পায়না কোথাও! এই আনুক‚ল্য পৃষ্টপোষকতা, গাইড প্রেরণার পথেই লেগে থাকার বিষয়, ভাবনার সংশ্লি¬ষ্টতায় ছুটতে থাকে সময়ের একান্ত নিকট ঘেষে। সাহিত্যের যা কিছু সৃষ্টি, যা কিছু মহৎ অর্জন তার অধিকাংশই পৃষ্টপোষকতায়, প্রেরণার দ্বারা ঝংকৃত, অলংকৃত এবং সমাদৃত। পৃষ্টপোষকতা তাই একটি প্রধান ঘটনা, যে কোনো মহৎ শিল্প আবিষ্কার, নির্মাণ ও কর্মের পথে। সভ্যতার ইতিহাসে পৃষ্টপোষকতা গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রেখে আসছে আদি ও অনাদিকাল ধরে।
যে কোনো ধরনের সৃষ্টিশীলতা দেশ, জাতি ও সমাজের কাছে অপ্রত্যাশিত এবং বিস্ময়ের বিষয়। আর সেই অপ্রত্যাশিত বিষয়, ঘটনা বা বিস্ময়ের খোঁজে সৃষ্টিশীল প্রাণ অনেক প্রচেষ্টার, চিন্তনের, সাধনার ও নিবিষ্টতার দ্বারা উদ্দেশ্য খুঁজে পান। এ কথাতো আমরা জানি যে, সৃষ্টিশীল সত্তার অধিকারীগণ সমাজের আর দশজন লোকের মতো সাধারণ নন। ফলে সাধারণ লোকের কর্ম ও বাঁচার পথে তিনি সজ্ঞানে এবং অজ্ঞানে হাঁটতে জানেন না। তাঁর দ্বারা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সাধারণ কার্যক্রম প্রত্যাশা করাও যুক্তিসংগত নয়। তদুপরি সৃষ্টিশীল লেখক, শিল্পীর, বিজ্ঞানীর দায়িত্বে তা অনেক সময় ঘাড়ে এসে পড়ে। অগোছালো বেশ–বাসে তা তখন জটিল, দুর্বোধ্য ঠেকে।
আবার কোন কোন বিষয় খেলো বা অন্তঃসারশূন্যতায় জাগ্রত হয়ে ব্যথিত ও বিমর্ষের কবলে তাঁদেরকে আঁকড়ে রাখতে চায়। ফলে দ্ব›দ্ব, সংশয় আর ক্লান্তির দুর্বিসহ চাপ গবেষণায়, চেতনায়, সৃষ্টিশীলতায় মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। সৃষ্টিশীল পথে তা অনিবার্য বাঁধার সৃষ্টি করে। এ অবস্থায় প্রয়োজন পড়ে সমব্যথির। প্রয়োজন পড়ে পৃষ্টপোষকতার। তবেই সভ্যতার অর্জন পূর্ণতার পথে এগোতে পারে। সম্ভাবনার পথ অর্জিত হতে পারে। জীবন দিন দিন ঋদ্ধ ও সমৃদ্ধির পথ খুঁজে পায়। কবি–লেখকের চারিত্র্য বৈশিষ্টে লেখা প্রকাশের একটা তাগিদ সর্বদা কাজ করে। কিন্তু চিরকালের বাস্তবতায় অধিকাংশ কবি–লেখকই আশানুরূপ সুযোগ না পেয়ে দিশাহারা হন।।
কবির কাজ কবিতা লেখা, লেখকের কাজ শুধুই লেখা। কিন্তু তা জনসাধারণের মাঝে পৌঁছে দেয়ার যে কাজটি বাকি থাকে, তার দায়িত্ব কে গ্রহণ করবে? কবি? লেখক? না পত্র–পত্রিকা? না প্রকাশক? আমাদের বোধে–চিন্তনায়, এষণায় মনে হয় সবারই দায়িত্ব তা পাঠকের সামনে উপস্থাপন করা। কবি লেখকও অনেকটা সচেতন থাকবেন। পত্র–পত্রিকাও নিবেদিত থাকবে, ভালো লেখকের লেখা ছাপানোর কাজে। আর প্রকাশকও কেবল বাণিজ্যের কথা মাথায় না রেখে সৃষ্টিশীল, উন্নত দর্শন, বিজ্ঞান, সাহিত্যসমৃদ্ধ কবিতা ও লেখাসমূহ বই হিসেবে তৈরি করে, পাঠকের দরোজায় পৌঁছে দেবেন। এর ফলে এক ভাষা–ভাষী জনগণ চিন্তা–চেতনায়, কর্মে ও উদ্ভাসে দিন দিন জীবনকে পরিবর্তিত করতে পারবেন। বাঁচবেন বাঁচার মতো করে। এই বাঁচা শুধু পাঠকের বাঁচা নয়, তা লেখকের, প্রকাশকের, গবেষকের, বিশ্লে¬ষকের, অধ্যাপকের বাঁচার পথে–প্রধান ঘটনা ও বিষয় হবে নিশ্চিত।
তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে মুদ্রণ শিল্পের উপর অনেকটা আঘাত চলে এসেছে। এই আঘাতে ভবিষ্যতের পথ কী হবে তা আমরা জানি না! একটা সংশয়, সন্দেহ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। গ্রন্থের পাঠক আজ অনেক কমে এসেছে। ক্রমান্বয়ে তা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা যায়। এই অবস্থায় লেখা কিভাবে বাঁচবে! লেখার পথ কীভাবে রক্ষা পাবে! তাই নিয়ে আমাদের ভাববার এবং চিন্তা করার কাল খুব দ্রæতই বয়ে যাচ্ছে। আমরা সময়ের উপর এই সমস্যার ভার তুলে না দিয়ে, নিজেরাই খুঁজে ফিরি অস্তিত্ব রক্ষার অনিবার্য লড়াইকে। যে লড়াই এই বিপর্যয়রোধে এবং উদ্দেশ্যের ব্যাপ্তিতে যথেষ্ট ভ‚মিকা রাখতে পারে। কেননা,’যা কিছু সত্য ও প্রয়োজনীয় তা একমাত্র বইয়ের মধ্যেই পাওয়া যাবে এবং সেখানে সব কিছু সুন্দর, ন্যায়সঙ্গত এবং দরদভরা।‘
শিমুল আজাদ
জন্ম ০৮ নভেম্বর ১৯৭১ খ্রি. বাবুগঞ্জ, বরিশাল। যশোরে বেড়ে উঠেছেন। পেশাঃ অধ্যাপনা। লিখেছেন এবং লিখছেন দেশ-বিদেশের অসংখ্য পত্র-পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে। তিনি শিল্পগ্রাম নামে একটি লিটল ম্যাগাজিনের সম্পাদক।
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : বিরুদ্ধ প্রবাসে (একুশের বইমেলা ২০১০, ঢাকা); জন্মান্ধ আয়নার পাশে (একুশের বইমেলা ২০১১,ঢাকা); রোপিত রোদন (একুশের বইমেলা ২০১২, ঢাকা); প্রত্যাবর্তনের কালে (একুশের বইমেলা ২০১২, ঢাকা); আশ্চর্য অপরাধী (একুশের বইমেলা ২০১৩, ঢাকা); আলোরস্ক্রিন: শব্দময় নৈঃশব্দ্য ( সেপ্টেম্বর ২০১৭ কবিতীর্থ, কলকাতা,ভারত)।
প্রকাশিত প্রবন্ধ গ্রন্থ: অদ্বৈত গদ্যের ঘ্রাণ (একুশের বইমেলা ২০১১, ঢাকা); শিল্পের গোপনীয়তা (একুশের বইমেলা ২০২০, ঢাকা)।
সম্মাননা ও পুরস্কার : জয়পুরহাট সাহিত্য সংসদ কর্তৃক সাহিত্য সম্মাননা ২০১৩; পাবনা মহিয়সী সাহিত্য পাঠচক্র কর্তৃক বিশেষ সম্মাননা পদক ২০১৪; শব্দসাঁকো সাহিত্য সম্মাননা-২০১৭, কলকাতা, ভারত।