শব্দের ওজন ও তার ভারসাম্য দৌড়: দিলারা হাফিজ

১। শব্দ: উবুন্টু (Ubuntu)

‘উবন্টু’ শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার বন্টু উপজাতিদের ব্যবহৃত শব্দ থেকে।

শব্দটির অর্থ হল অপরের জন্য মানবতা।

এই শব্দটি মানবতাবাদী দর্শন, নৈতিক ভাবাদর্শ, উবুন্টুইজম ও মানবতাবাদী বোঝাতে আশি এবং নব্বইয়ের দশক থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে। তবে, উনিশ শতকের শুরুর দিক থেকেই ‘উবুন্টু’ শব্দটির আবির্ভাব লক্ষ করা যায় দক্ষিণ আফ্রিকাতেই।

নেলসন ম্যান্ডেলা

বিভিন্ন ধরনের অনুবাদে মানবতা, সদয়গুণ, পরোপকারিতা দয়াশীলতার মতো কিছু অর্থ উঠে আসতে থাকে। তবে ব্যাকরণগতভাবে এর উৎপত্তি হয়েছে ‘উন্টু’শব্দ থেকে যার

অর্থ মানুষ বা ব্যক্তি। এর সাথে উবু (বিশেষ্য, অর্থ মানবতা) উপসর্গটি যোগ করার ফলে শব্দটি পূর্ণতা পেয়েছে ‘উবুন্টু’ হিসেবে। যার পুরো অর্থ দাড়ায়  মানুষের জন্য মানবতা বা অপরের জন্য মানবতা। বিশেষভাবে নেলসন ম্যান্ডেলার নেতৃত্বে দক্ষিণ

নোবেল লরিয়েট ডেসমন্ড টুটু ( দ.আফ্রিকার ধর্মযাজক ও অধিকার আন্দোলনকর্মী)

আফ্রিকার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সময় থেকে এই শব্দটি দক্ষিণ আফ্রিকার বাইরে ব্যাপক জনপ্রিয় হতে শুরু করে। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার ধর্মযাজক ও অধিকার আন্দোলন কর্মী নোবেল লরিয়েট ডেসমন্ড টুটুর লেখার মাধ্যমেও ইংরেজি ভাষাভাষী জনগণেরমধ্যেও ‘উবন্টু’ একটা দর্শন হিসেবেও জনপ্রিয়তা লাভ করে।

‘উবন্টু’নামে আফ্রিকায় এমন একটা জনপ্রিয় প্রথাও প্রচলিত আছে যে, কেউ কোনো ভুল বা খারাপ কাজ করলে—তাকে তার আবাসস্থলের মধ্যবর্তী কোনো স্থানে রেখে তার চারপাশ ঘিরে থাকে ঐ জনপদের জনগোষ্ঠী। তারপর তাকে ঘিরে থাকা গ্রামের বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ—তার ভালো কাজের প্রশস্তি বা প্রশংসা গায় এক এক করে। এভাবে তিনদিন ধরে তার সব ভালো কাজের স্তুতিসহ ফিরিস্তির বর্ণনা দেয়া হয়। এতে করে তার মনের উপর ইতিবাচক প্রভাব তরান্বিত হতে থাকে। এবং নিজেকে খারাপ কাজ থেকে গুটিয়ে এনে ভালো কাজেরপ্রতি মনোনিবেশের সুযোগ তৈরি হয়।

এমন মানবিক সংশোধনের সুযোগ পেলে খারাপ কাজের প্রতি ঘৃণা জন্মানো তো খুবই স্বাভাবিক, তাই না? নিজের ভালো কাজের প্রশস্তি শুনে শুনে তার অপরাধী মনের মধ্যে ভাবান্তরের সৃষ্টি হয়। এভাবেই ধীরে ধীরে একটা মানবিক সমাজ গড়ে ওঠে বলে তারা বিশ্বাস করে।

আফ্রিকানদের মতে ‘উবুন্টু’ হল এমন একটি সমাজ যেখানে সকলকে মানবতার সাথে বিবেচনা করা হয়। মিচায়েল ওনিইবুচি এজ, উবুন্টুর মূল দর্শনকে সংজ্ঞায়িত করে বলেছেন যে, একজন মানুষের সাথে আরেকজনের পার্থক্য, স্বতন্ত্র বিচার ধারা এবং ভিন্ন অবস্থান থাকা সত্ত্বেও অপরের মতামতকে সম্মান করা এবং তার দর্শনকে স্বীকৃতি প্রদান করা। এটি অবশ্যই একটি সৃষ্টিশীল সংজ্ঞা। কেননা, মানুষের মধ্যে ‘মানবতা’ একটি চারিত্রিক গুন।

সমাজের এই পরিবর্তনের  মধ্যে টিকে থাকতে হলে প্রত্যেকের প্রয়োজন প্রত্যেককে। এই দর্শনের মতে আমরা একে অপরের সৃষ্টিশীলতা ভাগাভাগি করে নেই এক সাথে চলব বলে। তুমি আছ বলে আমি আছি, আর অবশ্যই আমি আছি বলে তুমি আছ, শত পার্থক্য এবং মূল্যবোধ থাকা সত্ত্বেও আমি একা কোনো একক সত্তা নই।

আমরাও বাংলা ভাষাভাষিরা আশা করবো,’উবুন্টু’ শব্দটি এখন শুধু দক্ষিণ আফ্রিকা নয়, পৃথিবীর সর্বত্র তার বিজয় কেতন উড়িয়ে দেবে।

 

২।শব্দ: ফাটাফাটি

সালটা ঠিক মনে নেই। কলকাতার সেই সাহিত্য সম্মেলন উপলক্ষে কবি নির্মলেন্দু গুণ তার কন্যা মৃত্তিকাকে নিয়ে গেছিলেন, আমার ছোট সন্তান অব্যয় ছিলো আমাদের সঙ্গে। কবি রফিক আজাদের জন্যে যথারীতি সৌমিত্র মিত্রের ব্যবস্থাপনায় রাজ্য অতিথিশালায় আমাদের থাকবার ব্যবস্থা হয়েছিলো। গুণদাও  উঠেছে সেখানে। বাংলাদেশের বেশ ক’জন কবি গেছিলাম সে যাত্রায়।

কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইন রবীনকে নিয়ে গেছিলেন। যেহেতু রাজ্যঅতিথি ভবন নিউমার্কেটের ঠিক পেছনের রাস্তায়। কাজেই পায়ে হেঁটে নিউমার্কেটেই সব কেনাকাটা হতো বাংলাদেশ থেকে আগত কবি সাহিত্যিক পরিবারের সদস্যদের।

এরমধ্যে মৃত্তিকা একটু বড় হয়ে উঠেছে। পোশাক পরিচ্ছেদের প্রতি তার আগ্রহের দেশলাই ঝলক তোলে। আমাদের সন্তানদেরযেহেতু কবিতা পড়া নেই, কাজেই ফ্রি। নিজের পছন্দের একটা পোশাক কিনতে মৃত্তিকা বার বার ছুটে যায় নিউমার্কেটে। দাম যে অনেক, তাই পোশাকটি বার বার দেখে, আর  ফিরে আসে। শেষ পর্যন্ত তার বাবাকে বলেই ফেললো, বাবা ড্রেসটা আমাকে কিনে দিতেই হবে।

এক্কেবারে ফাটাফাটি।

আমার যা পছন্দ অইছে না?

এইটা কিনে না দিলে কিন্তু আমি বাঁচবো না।

এই প্রথম আমি মৃত্তিকার মুখে শুনলাম ড্রেসের অনন্য সৌন্দর্য প্রকাশ করতে ফাটাফাটি শব্দটি ব্যবহৃত হতে। এর পূর্ব পর্যন্ত, বাঁশ লাঠি দিয়ে মারামারি করলে মাথা ফেটে গেলে, সেই ব্যাখা বা গল্প প্রসঙ্গে বলতো

‘কাইজা এখন মারামারি আর ফাটাফাটিতে চলছে’।

অথবা বলতো মাইরা এক্কেবারে ফাটাইয়া দিছে।

মারামারি করে রক্তপাত হলে, সেই অবস্থাটি বোঝাতে বলা হতো ফাটাফাটি লাগছে।

এর অতিরিক্ত কোনো অর্থ আমার জানা ছিলো না, বাংলা ভাষার একজন শিক্ষক হলেও। কিংবা শব্দটিকে এভাবে ব্যবহার করা যায়, তার মূলোচ্ছেদ করে— ভাষাশিল্পীদেরও বোধ করি এমন অবস্থায় বিপাকে ফেলে দেয়। কেউ কেউ আবার নীরিক্ষামূলকভাবে এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়ে থাকেন। তবে ভাষার অপব্যবহার দায় কখনো ভাষা শিল্পীরা নেবে না, একথা সর্বতোভাব সঠিক বলে মানি। তবে, একথাও মানতে হবে যে, তরুণদের আবেগ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতেই শব্দটি আরো একটি নতুন অর্থ পরিগ্রহ করে দ্বৈত অর্থের যোগান দিচ্ছে।

এজন্যেই বোধ হয়, তরুণদেরকে আমরা সবচেয়ে আধুনিক এবং প্রগতিশীল ভাবি। আমরা পুরোনোরা শব্দের একই ব্যবহারে থিতু হয়ে থাকি। এটাই ভাষা বা শব্দের গতিধর্ম।

 

৩। শব্দ: মামা

সাধারণত মায়ের ভাইকে মামা ডাকা হয়। কিন্তু মামার প্রকার ভেদ আছে। বাংলা ভাষায় দুটি বাগধারা আছে। শকুনি মামা ও কংস মামা।

১। শকুনি মামা অর্থ কুচক্রী আত্মীয়।

(মহাভারত মহাকাব্যে বর্ণিত, ধৃতরাস্ট্রের স্ত্রী গান্ধারীর ভাই শকুনি ছিলো দুর্যোধনের মামা)

কুরু-পাণ্ডবের যুদ্ধের উস্কানীদাতা ছিলো এই শকুনি মামা।

পাক-ভারত উপমহাদেশে এটাই ছিলো প্রথম ভাইয়ে ভাইয়ে জ্ঞাতি যুদ্ধের লিখিত বয়ান। শকুনিমামার প্রত্যক্ষ ইন্ধন ও উস্কানির জন্যে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিলো। এ কারণেই ‘শকুনি’ মামা— বাগধারা সৃষ্টি হয়েছে এই কাহিনী অবলম্বন করে।

২। কংস মামা অর্থ নির্দয় আত্মীয়।

মধ্যযুগে বড়ু চণ্ডীদাসের কৃষ্ণকীর্তন কাব্যে বর্ণিত কংস ছিলো মথুরার অত্যাচারী এক রাজা এবং সম্পর্কে অষ্টম অবতার কৃষ্ণেরআপন মামা। কংসের  অত্যাচারে মথুরাবাসীর আপামর জনগণ হাপিয়ে উঠেছিলো। অষ্টম অবতার হিসেবে কৃষ্ণ দেবলোক থেকে পৃথিবীতে এসেছিলো কংসের অত্যাচার থেকে মানুষকে রক্ষা করতে। সেই সময়ে রাধাও মর্ত্যে এসেছিলো কৃষ্ণের সঙ্গিনী হিসেবে।

সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় মামার অসদাচরণ নিয়ে এত নেতিবাচক ঘটনা ঘটেছে যে, ফলে জনমনেও তার প্রতিফলন দেখা যায়।

আক্ষরিক অর্থে ‘মামা’শব্দটি দিয়ে মায়ের ভাইকে বোঝানো হয়ে থাকে। মা শব্দটির দ্বিত্ত উচ্চারণ করলেই যে শব্দটি সৃষ্টি হয়, সেই সম্পর্কের নাম মামা। আত্মীয়দের মধ্যে সবচেয়ে কাছের, আপনবোধের সম্পর্কটির নাম হলো মামা। মামা তার বোন-পুত্রকে আপন ভাবলেও,মামী কিন্তু স্বামীর বোন কিংবা বোনের সন্তানদের সঙ্গে ততটা সহজ নয়, আপনও হয়েওঠে না। যতটা তার নিজের বোন-ভাইয়ের সন্তানদের সঙ্গে সে আপন বোধে একাত্ম থাকে।

কাজেই মায়ের পরে আপনজন হয়ে ওঠে মামা এবং খালা। অনায়াসে সেই আপনজন মামার বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া যায়। কিন্তু মামী যে আপন নয়, সেই পরিচয় লিপিবদ্ধ হয়ে আছে যোগীন্দ্রনাথ সরকার সংকলিত ‘খুকুমণির ছড়া’ বইয়ে।

দারুণ একটি ছড়া আছে। শিশু ক্লাসেই পড়ানো হতো আগে। এখনও আছে কিনা জানি না। তবে ৬ চরণে শেষ ছড়াটি নিম্নরূপ:

তাই তাই তাই
মামা বাড়ি যাই
মামা দিলো দুধভাত
পেট ভরে খাই
মামী এলো লাঠি নিয়ে
পালাই পালাই।

এই মামা ডাকে ডাকা হয়, রিকশাওয়ালাদেরকে। আজকাল তরুণ ছেলেমেয়েরা রিকশা ভাড়ার সময় তাকে মামা বলে সম্বোধন করে কথা বলে। এতে কি রিকশাওয়ালার মন নরম হয়? জানি না। তবে, জানি যে, মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্তের বাহন রিকশা এবং বাস। যারা বাসে যাতায়াতে অপারগ, তারা রিকশার উপর নির্ভরশীল। কিন্তু দিন দিন রিকশা ভাড়াও যে হারে বাড়ছে, এতে মামা সম্বোধন করা ছাড়া উপায় কি?

এক দশক আগেও সজ্জনেরা এই রিকশা, এদিকে এসো, না বলে—বলতো, ভাই এদিকে এসো।

আমাদের শ্রদ্ধেয় আবু হেনা মোস্তফা কামাল স্যার ছাত্র-ছাত্রীদেরকে আপনি করে বলতেন। তাকে অনুসরণ করে অনেকেই বলতো, রিকশাওয়ালা ভাই এদিকে আসুন একটু।

জানি না, ‘মামা’ সম্বোধনের ভাব-ব্যঞ্জনায় আমাদের রিকশাওয়ালা ভাইয়েরা তরুণ ছাত্র-ছাত্রীর প্রতি মামার মতো সদয় ও সহানুভূতিশীল হয়ে ভাড়া কিছু কম নেন কিনা। কিন্তু শ্রমজীবী মানুষ হঠাৎ যদি মামা ডাকটি শুনেন নিশ্চয় তার ভালো লাগে। একথা হলপ করে বলা যায়।

 

৪।শব্দ: শালা বা শ্যালক

শালাও শব্দটি দিয়ে একটি মধুর সম্পর্ক নির্ণয় করে। যার অর্থ হলো-শ্যালক /বিশেষ্য পদ/ শালা, পত্নীর ভ্রাতা।

বিশেষ্য পদ/ স্ত্রীলিঙ্গ শ্যালিকা, শ্যালী। স্ত্রীর ছোটভাইকে সাধারণত শালা বলে সম্বোধন করা হয়। ছোট বোনকে শালী।

একটা সময় পর্যন্ত এই ‘শালা’ শব্দটি আদুরে শব্দ হিসেবে বিবেচিত হতো। নিশ্চয় এই আদরের সুযোগ নিয়ে ছোট শালারাদুলাভাইয়ের সঙ্গে বহুত সুযোগ নিয়েছে, হয়তো স্থান কাল ভেদে প্রতারণাও করেছে শালাদের কেউ কেউ। বোনের সম্পর্ক ভাঙ্গিয়ে, দুলাভাইয়ের ব্যবসা বাণিজ্যে ঢুকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে তাকে। ফলে, শব্দটি তার প্রকৃত অর্থ হারিয়ে ফেলে গালি-গালাজে পরিণত হয়েছে। দুঃশালা।

৫।শব্দ: অস্থির

ইংরেজি টেনশনের বাংলা অস্থির বা অস্থিরতা। মানসিক বা শারীরীক বিশেষ একটি অবস্থার নাম অস্থির। যাকে বলা যায় চিত্তের বৈকল্য।

অস্থির শব্দের অর্থ /বিশেষণ পদ/ অধীর, চঞ্চল, ব্যাকুল, ব্যস্ত, অনিশ্চিত।

অস্থির দু’ভাবে হয় মানুষ। কোনো দুঃসংবাদে শারীরিকভাবে একজন মানুষ অস্থির বোধ করে যদি তখন সে ঘামতে থাকে। জোরে জোরে শ্বাস প্রশ্বাস ফেলে। কারো কারো হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যায়। আর মনে মনে অস্থির হলে মানুষ দীর্ঘক্ষণ পায়চারী করে, ঝিম মেরে বসে থাকে। নানাভাবে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ গোচর হয়। কিন্তু ইদানীং এই অস্থির শব্দটি যেভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে তরুণদের মধ্যে, এতে শব্দটির প্রকৃত  অর্থ পাল্টে গেছে বা যাচ্ছে।

যেমন, কোনো সুন্দরী মেয়েকে যেতে বা আসতে দেখলে তরুণেরা আজকাল বলে, দেখ দেখ মামা, মেয়েটা কি অস্থির। অর্থাৎ সুন্দরী অর্থে ব্যবহার করছে অস্থির শব্দটিকে। ফলে ব্যবহার গুণে শব্দটি তার প্রকৃত অর্থ পরিহার করে আরোপিত অর্থ ধারণ করছে।

বিভিন্ন ভাষায় এরকম বহু শব্দ আছে,সময়ের ব্যবধানে এবং ব্যবহার গুণে তারা একাধিক নতুন অর্থ পরিগ্রহণ করে বহাল তবিয়তে বাস করছে ভাষার ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করে।

২০/১/২২
টরন্টো

 

দিলারা হাফিজ

কবি দিলারা হাফিজ। ১৯৫৫ সালের ২০ নভেম্বর মানিকগন্জের গড়পাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। পিতা বখশী হাফিজ উদ্দিনআহমেদ, মা রহিমা হাফিজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বি. এ অনার্স ও এম এ করেছেন। ১৯৯৮ সালে ঢাবি থেকে পি এইচ ডি ডিগ্রিলাভ করেন। ৩৭ বছর শিক্ষকতা জীবনে সরকারি কুমুদিনী কলেজ, ইডেন কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যায় ছাড়াও মিরপুরের সরকারি বাঙলাকলেজ ও তিতুমীর কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, ঢাকার চেয়ারম্যানহিসেবে চাকুরি থেকে অবসরে যান।

প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ:

১।ভালোবাসার কবিতা, ২।পিতা কিংবা পুত্র অথবা প্রেমিক ৩। প্রেমের কবিতা ৪। কে নেবে দায় ৫। খুঁজে ফিরি ভিক্ষালব্ধ জ্ঞান ৬। অবিনশ্বর আয়না ৭। নির্বাচিত কবিতা
৮। নারী সংহিতা
গবেষণা গ্রন্থ: বাংলাদেশের কবিতায় ব্যক্তি ও সমাজ (১৯৪৭–১৯৭১)
স্মৃতি গদ্য: আনন্দ বেদনাযজ্ঞে রফিক আজাদ
স্মৃতি উপন্যাস: কে প্রথম কাছে এসেছি
শিশুতোষ:সুষমার গল্প
অনুবাদ:মার্কিন কবি ক্যারোলাইন রাইট ও ভারতীয় বহুভাষাবিদ পণ্ডিত শ্যাম সিং শশী নারী অধিকার সম্পর্কিত তাঁর অনেককবিতার অনুবাদ করেছেন।
সম্পাদনা : গদ্যের গহন অরণ্যে
১৯৮৩ সালে কবিতার জন্যে লা ফর্তিনা সম্মাননা ও ২০১২ সালে বাংলাদেশ ও নেপাল ফ্রেণ্ডশীপ সম্মাননা লাভ করেন। বিটিভির বহুল প্রচারিত ও জননন্দিত গণশিক্ষামূলক অনুষ্ঠান “সবার জন্যে শিক্ষা” গ্রন্থনা ও উপস্থাপনার দায়িত্ব পালন করেছেন ২২ বছর। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অন্যতম প্রধান কবি রফিক আজাদ (প্রয়াত) এর স্ত্রী। দুই পুত্র সন্তান অভিন্ন ও অব্যয় এর জননী।

Facebook Comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top