সহপথিক, যে কেউ
মানুষ, তুমি কাঁদছো যখন, আমার কাঁধে তোমার মাথা রাখতে পারো।
মানুষ, এই যে আমার আঙ্গুল, তুমি কোথাও তোমার ব্যথা জড়িয়ে রাখো।
মানুষ, তোমার নাম জানি না। মানুষ, তুমি নাম বোলো না।
মানুষ, আমি হাঁটছি যখন, চাইলে তুমি এই সড়কের
পুরোটা সাথে থাকতে পারো।
মানুষ, আমি একলা এপথ অনেক চিনি; তোমার গল্প তুমি অসংকোচে
আমার কাছে বলতে পারো।
মানুষ, আমি সমগ্র জীবন এখন এই মুহূর্তে ধরতে পারি;
অচেনা মানুষ, এই এক মুহূর্ত আমি কেবল তোমাকে দিলাম।
রাখতে পারো?
দংশনের জন্য কৃতজ্ঞতা
ধরে নাও, মরেপচে গেছি!
মরেপচে তো যায় মানুষ। আগেও কতশত গিয়েছে।
তেমন, অস্তিত্বের সংজ্ঞাতেই আমারো পড়েছে পুঁজের দাগ,
তোমাদের নামের পরে প্রমূখের মত গুঁজে আছি কোথাও!
কিংবা সেটুকুও নেই—
অশ্রদ্ধাজনিত যে প্রেম,
আদিনারীদের অভিধান থেকে দেখে নিয়ে-
আমি ব্যক্তিত্বরহিত হতে হতে চলে আসি বিনাশের খুব কাছে
অর্জনের মত ম্লান কিছু নেই আমার আলেখ্য—
ধরে নাও, এরকম হয়,
মানুষ তো লিখেছে কত প্রেম বা বিরহ, বিপ্লব বা দ্রোহ, এইসব—
আমি এলাম ঘৃণার কথা লিখে যেতে—
যেন এইসব কিছু হয়েছিলো আগেও কোথাও
যেখানে পা পড়েছে সেখানেই থামার কথা ছিলো
এভাবেই তরঙ্গস্থির স্রোতের সাথে এলিয়ে যাওয়া
আমার জীবন কেবল পুনরাবৃত্তি,
আমার শরীর কেবল বিতৃষ্ণা,
আমি অনেকটাই নেই, এইসব না থাকা’র
সওদায় রাজি হলে জানিও, প্রিয় সাপ—
দংশনের জন্য আজও কৃতজ্ঞতা।
অপর্ণা হাওলাদার
জন্ম ২০শে অক্টোবর, ১৯৮৫। ঢাকা শহরের উদয়ন বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ভিকারুন্নিসা নুন কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স করেন। ২০১১ সাল থেকে উচ্চশিক্ষার প্রয়োজনে প্রবাসে, ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে পিএইচডি শেষ করেন আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় থেকে। বর্তমানে আমেরিকার পিটসবার্গের চ্যাথাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।