মলয় রায়চৌধুরী
মরে গেলি? সত্যিই মরে গেলি নাকি অরুণেশ?
রূপসী বাংলার খোঁজে আসঙ্গ-উন্মুখ শীতে বেপাড়া-ওপাড়া ঘেঁটে
শেষ-মেশ ঝিলের সবুজ ঝাঁঝরিতে ডুব দিলি ! যবাক্ষারযানে কালো
বিষগানে আধভেজা উলুপীর সাপ-রক্ত মিঠেল শীৎকারে
হৃদযন্ত্রে দামামা বাজতেই বুক খামচে জলে নেমে গেলি,
বাড়িতো পিছনে ছিল; সেদিকে গেলি না কেন? ডাঙার গেঁজেল হায়নারা
যৌবনে ভালবাসা পেয়েছিল তোর, যখন অতৃপ্ত ছিলি? কী খাচ্ছিল
কে খাচ্ছিল নৌকোর পালে আঁকা তোর রাগি নমস্কার? দেখেছিলি
মোমে-জোড়া ডানা গলে ইকারাস সমুদ্রের আঁশটে ঘূর্ণীতে নেমে গেছে
নিরিবিলি ওফেলিয়া পিরানহা মাছেদের বন্দনা মেশানো ঝাঁকে
ড্রাগন উৎসবের ডিঙি থেকে ঝাঁপ দিলেন সৌম্য কুউয়ান
ফেনার ওপরে লেখা কীটসের নশ্বর অক্ষরমাংস ঠোকরায় চিল
হয়তো কাঁকড়ারা বুজকুড়ি কেটে-কেটে লি পো’র কবিতা পড়ে
শোনাচ্ছে নাটালি উডের লাশে ভাসমান কাক-গৃহিনীকে
হার্ট ক্রেনও আছে নাকি তোর পাশে শুয়ে কিংবা ঠোঁটে
চুমু কি দিচ্ছেন ওঁর নগ্ন আলিঙ্গনে টেনে ভার্জিনিয়া উলফ?
বউ ফেলে ষোড়শী মেরিকে নিয়ে গা ঢাকলেন পিসি বিসি শেলি
দেখলি ডন হুয়ান নয়, তিন দশকে ফ্র্যাংকেনস্টাইন খুড়ো
জলে-পচা রাসপুতিন ছিঁড়ে খেলো তোর প্রিয় রূপসী বাংলাকে
স্বপ্নের নীল নদে, টাইবার নদীতে, রাইনে, লিমমাতে, তিস্তায়
অ্যামস্টারডামের খাল যার দুই ধারে রোজ বেশ্যা-প্রেমিকারা
রক্তাক্ত আলোয় বসে উলঙ্গ গোলাপি খুলে সন্ধ্যা ফেঁদেছেন
পরমহংসের শোক শিখেছিলি রেঁবোর আবসাঁথ পান করে
অথচ ঠান্ডা রক্তে জড়িয়ে ধরল জল ভালবেসে তোকে
উকুন ও ছারপোকার কামড়ের মধ্যে তৃপ্ত ঘুম ছেড়ে ওরে
নেমে গেলি অমৃতমন্হনের ডাকে— কোন দিকে যাবি তুই
বুঝতে না পেরে অসুর ও দেবতার মাঝে পিষে গেলি, আজীবন
পিষে গেলি…পিষে গেলি…পিষে গেলি…পিষে গেলি…পিষে…
জলে ডুবে মারা যাওয়া বিখ্যাত দের বৃত্তান্ত একটা কবিতায় উপমাকারে উঠে আসা ……অসম্ভব ভালো লাগল। কবিতায় উপমার ব্যবহার জীবনানন্দের কথা মনে করে দেয়। আধুনিক কবিতা …আধুনিক উপমা…ধন্য…