বয়স
নিজেকে এখন এক বয়সশূন্য প্রান্তর মনে হয়
তরুনীরা অজানা সন্দেহে ঠারে-ঠারে চায়। তরুনরা
দূরত্ব রেখে তাকায়। আমিও
চালকুমরো মোরোব্বা হয়ে টিকে থাকি বয়ামে-বয়ামে
আমার দুচোখ—
শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য ও যৌবনে আটকে থাকে
এখনো দাড়ি না রেখে, ধর্ম-কর্মে সুমতি না দেখে
কতিপয় বিস্ময়সূচক ঢেউ-
অসুন্নতি গোঁফে এসে লাগে
মাঝে মাঝে মনে হয়— এতো সহজে আমরা
কেনো এতো বুড়ো হয়ে যাই
বৃদ্ধ হবার আগে? যদিওবা এ সুযোগে–
সিনিয়র কয়েকটি ঘোরেল বোয়াল
পানাপুকুরের দেশে এসে
ঝাঁকিয়ে সুতীক্ষ্ণ দাড়ি, ঘাই মারে সম্মুখ আসনে…
…
কক্সবাজার, ৩০/১০/২০২৩
উড্ডয়ন
আমরা উপরে উঠি, দেখি–
আমাদের গ্রাম দেখা যায় কিনা!
আমাদের বাড়ি দেখা যায় কিনা!
ওটাই কি আমাদের বাড়ি—
উঠোনে মেলেদেওয়া বেগুনি শাড়ি!
কিশোরীর ওড়নায় উড়েযাওয়া ধানক্ষেত!
এখনো সবুজ মাঠ!
সেতুগরবিনী দেশের শেষ খেয়াঘাট!
আমরা আকাশে উঠি
দেখা কী যায়—
এক কিশোরের ফেলে আসা লাটাই!
ছেঁড়াঘুড়ি! বইয়ের ভাঁজে লুকোনো
পাপড়ির শিরা-উপশিরা, মৃদু সুবাস!
ডুবসাঁতার! ভেজাচুল! চোখলাল
ঝকঝকে এক দুপুরবাহার! দেখা কী যায়—
এখনো আমায় খুঁজেফেরা মা—’নূরুন নাহার’!
…..
২৫ অক্টোবর ২০২২, যশোর।
রাষ্ট্রদাস
এ কেমন রাষ্ট্রদাস হয়ে বেঁচে থাকা?
স্বাধীন ভূখণ্ডে বেড়ে উঠছে আমার যে সন্তান—
একদিন তারও থাকবে না কোনো দেশ, সে-ও একদিন রাষ্ট্রদাস বনে যাবে!
স্বাধীন ভূখণ্ড মানেই কি স্বাধীন দেশ?
স্বাধীনতা? সকলেই চিৎকার করে—
এ দেশ আমার, এ দেশ আমার
তারপর, ফাইট টু ইচ আদার….
২১/১০/২০২৩, ঢাকা
কাজী মাজেদ নওয়াজ
জন্ম: ৩০ ডিসেম্বর ১৯৬৯, মাগুরা জেলার দ্বারিয়াপুর গ্রামে নানাবাড়িতে। পৈত্রিক নিবাস মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার মুজদিয়া গ্রামে। দর্শনশাস্ত্রে স্নাতকোত্তর।
তাঁর কবিতার সুর হলো মূলত হৃদয়গ্রাহী, ইন্দ্রিয় চেতন ও কাব্যিক শব্দচয়নে উত্তাপ ছড়ানো এক স্বপ্নময় আখ্যান। আর এই নিবিড় সুরের মূর্ছনা থেকেই জেগে ওঠে তার কবিতার অনুরণন। মাজেদের কবিতা কখনও স্নিগ্ধ রাতের মতোই রহস্যময় আবার কখনও প্রকৃতই রোদ্দুরে সবুজ।
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: বলো, জলদ্যুতি
বাস্তবতা মাখানো হৃদয় ছোঁয়া। অপূর্ব কবি।
আসসালামুয়ালাইকুম ভাই, অনেক দিন পরে আপনার কবিতা পড়ে ছোট বেলার কথা অনেক বেশি মনে পড়ছে। গ্রাম বাংলার চিত্র মনে হচ্ছে … খুব সুন্দর হয়েছে ভাইয়ের জন্য শুভ কামনা রইলো।
মিলন মেহেদী
জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন
ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া