নিশিব্যাধ
বিরান প্রান্তরটুকু পার হয়ে গেলে হয়তো পাওয়া যাবে মৃদু জনপদ
বাচ্চাদের চ্যাঁয়্যাঁ ভ্যাঁয়্যাঁ, বেলুন ফাটার শব্দ, গড়গড়িয়ে ছুটে যাওয়া চাকা
খাঁচার ময়নার মুখে দু’চারটে অশ্লীল শব্দ, গাভীগন্ধে উন্মত্ত বলদ
সম্ভাবনা অগণন, শতরঞ্জ ছকে যেন সারি সারি কলসি মুখঢাকা
বাদশাই মোহর? সাপ? কুটকুটে আলকাতরা? মদ? গুড়? বালি? পুঁথি সুপ্রাচীন?
কী আছে অন্তরে তব? হয়তো বা কিছু না, পাত্র মাথামুণ্ডু শুনশান ফাঁকা
তবে কি ফাঁকের মধ্যে ফোকর বানাবে আর মেলে ধরবে আঁধার দূরবীন?
মহাফেজখানা নেই তার, তাকে তাকে খণ্ড খণ্ড অতীতের হাড়গোর
প্রকল্পকেন্দ্রও নেই, যে, আগাম দেখতে পাবে ভবিষ্যৎ স্বপ্নসমীচীন
গভীর বিচ্ছেদবশে ইশারা ইঙ্গিত সব পালটে যায়। ভাবকক্ষে চোর
খুতবা উচ্চারণ করে মন্দ্রকণ্ঠে। শ্রোতা তথাগত। সে নাকি ছিল পথিক
কাচের কৌটয় ঠ্যাং চিতিয়ে আনন্দঘুমে ইদানিং
গাছেরা পাথর
হৃদয়হীনের রিক্থে, হাতিশাল ঘোড়াশাল চিত্রশাল পর্যুদস্ত, হামেশা অলীক
শূকর তোলপাড় করে নদীতট, ছুটে আসছে নিশিব্যাধ হাতে তীক্ষ্ণ শিক
কবন্ধ
দেখতে দেখতে স্তব্ধতা গা-সহা হয়ে এল, আর ভয় টয় লাগে না তেমন
ভাবি, এসপার ওসপার কিছু একটা হবে যা হোক, যেভাবে প্রকৃতিপূজারী
গুমোটে আগাম দেখতে পায় ঝড়, মাথায় আকাশ ভেঙে ত্রিভঙ্গমুরারি
নদীনালা, গাছপালা, উড়ে গেছে ঢেউটিন শাড়ি লুঙ্গি সশরীর মন
প্রতিটি প্রক্ষিপ্ত টুকরো যে কুড়িয়ে আনতে হবে, তাও ভাবে, আশ্চর্য, অগ্রিমই
সন্তানেরা কেউ ছিল ব্যাধ, পাখি মেরে অপ্রতিষ্ঠা পেল কবির অধরে
যেহেতু শোকার্ত তিনি। সে কি প্রাণনাশে মাত্র, না কি প্রাণ মিথুনপ্রহরে
আরো উজ্জয়ন্ত আরও প্রাণবান হয়ে ওঠে, তাই আমনুষ্যকীটক্রিমি
সবাই প্রণম্য সেই অদ্বয়সাধনে, তাই শোক এত লক্ষ কোটি গুণ
যেন বা ছন্দপতন হ’ল প্রকৃতিতে, তাই শূন্যতাপূরণ করতে ছন্দ
জেগে উঠল রক্তে, যেন রক্ত ছিটকে পড়ল তাই ফুটে উঠল রক্তের প্রসূন
তবে কি স্তব্ধতা ভাঙতে এত নাটকীয়তাও প্রয়োজন! সদর অন্দর
হাট ক’রে রাখি তবে, কখন ঘনাবে ঝড়, আছড়ে পড়বে বাতাসের নুন
আমার আপন ব্যাধ মুণ্ড কাটবে, শোকে হা হা ক’রে উঠবে আমারই কবন্ধ
কাঠিন্যের আবরণে এতটা সহজতা ! কবিতা তো নয়,যেন অজস্র পাথরের ব্যঞ্জনা নিয়ে স্রোত ছুটেছে । সৌভাগ্য আমার এমন চমত্কার কবিতা পড়তে পেরেছি । অনেক ধন্যবাদ গৌতম স্যার ।
Bhalo laglo, kobi, duitai besh laglo.