রওশন আরা মুক্তা
অপেক্ষায়
ওসব যা ছিল জোয়ার জোয়ার—
তা কী ছুঁয়েছে আস্তিক মরণ ?
তা কী আর আসে না মখমল-ব্যথা হয়ে?
আর কী চাপে না রক্তে দুর্নিবার্য তেষ্টা নিয়ে?
ওসব যা ছিলো জোয়ার জোয়ার—
তা কী শীতল ঘুম পোহাচ্ছে তোমার নির্লিপ্ত ঠোঁটে?
নাকি সব ঐখানে—কিছুকাল আগে—
বুলিয়েছে তুলির শেষ আঁচড় পদ্মপাতার নিচের নীরবতায়।
বিস্তর হাওর নিসাড়া একা, বিষাদগ্রস্ত বাতাস কাঁদে
জোয়ার জোয়ার যা ছিল তা শেষ হয়েছে আগেই।
মেট্রিক্স-মেট্রন
সন্ধ্যা নামে ব্রহ্মপুত্রে, বিদ্যুৎকেন্দ্রে সারি-সারি বাতি জ্বলে ওঠে।
বিদ্যুৎ! বিদ্যুৎ! তা-ই—যা পাচার হয়ে থাকে শ্বাপদ শহরে।
আলতো মৃদু উপস্থিতি, বিন্দু বৃত্ত নদী আর শহর আমার
বেশ্যাবৃত্তি করতে লেগে যায়—কে সে? অন্ধকার নামক খদ্দের।
ঐ দ্যাখো লোকাতীত কাশবন; আমাদের কৌমুদীবিলাস,
কেরোসিন-বাতি নৌকা, রাত-জাগা ঝিলিমিলি রুপালি বিছানা।
ঐশ্বরিক আর খুব প্রাকৃতিক। ব্রহ্মপুত্র আমার, জানো?—না?
বেঞ্জামিন-উপজাত ধনাত্মক ঋণাত্মক বিদ্যুৎ-বর্তনী
কর্পোরেট বালাখানা পরকীয়া করে সেই আলোর বিভবে।
দশ মাথা শত চোখ, তুমি দুটি পায়ে স্থির দাঁড়িয়ে, হারিয়ে
যাচ্ছ; খাচ্ছ হাবুডুবু সে সকল আলোকের শ্লৈষ্মিক ঝিল্লিতে।
ভিজে যাচ্ছে, পিছলে যাচ্ছে গা তোমার, আলোপ্রেমী তমিস্র কুমার।
ডুবে যাচ্ছ লাল নীল বাতিজ্বলা বিদ্যুৎকেন্দ্রের আলেয়ায়,
গুলে যাচ্ছ, খুলে খুলে যাচ্ছে শুধু স্বর্ণেমোড়া তোমার শরীর।
তোমার ঐ দশ মাথা শত চোখ একটিমাত্র মাত্রায় থিতানো,
অবশেষে ঊর্ধ্বশ্বাস অপলাপী অপরাধী আমার তমিস্রা—
তুমি খোঁজো চাষযোগ্য মাটি, খোঁজো আদিতমা রমণী-রজনী
খোঁজ তুমি পরিত্যক্ত দ্বীপ, তাতে যেন আমরা কপিলা কুবের!
হায়! গুহামানবের শুঁকে-চলা প্রবণতা খুঁজিছ, নাগর,
চকমকি পাথরে তুমি জ্বালবে রাত—যাও কোন জীবন বয়নে?
ফিরে যাচ্ছ, ফিরছ তুমি আদিপিতা, ফিরছ গুহাজীবন যাপনে।
দাবানল
প্রতিটা আহধ্বনিতে যা উঁহু তোলে
বুক-পেটে যা জ্বলে ওঠে তা কি তুমি,
বলো, দাবানল?
তোমার কি আর বন নাই পোড়ানোর?
এ সকল, সকল প্রশ্ন আগেও করেছি,
মসৃণ দেয়ালে,
আয়নায়,
নিজেকে ঘুরে ফিরে দেখেছি—
তা আরও পেলব,
আরও উন্মীলিত,
আরও অঙ্কুরিত।
সবুজ-সবুজ সোনালি লতা।
দুপুরের রোদেও
স্যাঁতসেঁতে অন্ধকার বাসা বাঁধে এই বনে;
এই বুভুক্ষা-বনে,
তুমি ধারালো ম্যাচেটি হাতে কেন আসো,
বুনো?
এ সকল, সকল প্রশ্নাতীত,
তবু করি,
কেন শুধু ঘ্যাঁচ ঘ্যাঁচ কেটে যাও আমায়?
ভরদুপুরে রোদ-অন্ধকারে—
কুচিকুচি ফালিফালি সোনালি লতা।
প্রিয়তমা
অন্ধকারে আগুন দেখলে কি চেনা যায়,
ছেলে না মেয়ে?
আগুন স্পর্শ করে কি বুঝতে পেরেছ,
ছেলে না মেয়ে?
আগুনের লাল রঙের ছটায়
দেখা যায় কি,
কী জ্বলছে কেন জ্বলছে?
আগুনের বারবার ওঠা-নামা দেখে কি
তোমরা কখনও অনুভব করেছ
কোন দুঃখ-ভুলানো কাব্যে দুলছে ওটা?
বলো তো অন্ধকারে ছুঁড়ে ফেলা আগুন
দেখে কি জ্ঞান করা যায়,
কে ছুঁড়ল ওটা?
ছেলে না মেয়ে?
আলোতে বড্ড বেশি নিন্দুক তোমরা
তাই,
জয়তু অন্ধকার!
আলোতে বড্ড বেশি নিন্দুক তোমরা
তাই,
জয়তু অন্ধকার!
মুক্তা
আপনার কবিতা পড়ে আমার নিচের অনুভুতি-
“ততক্ষন আটকে আছি ফসিল হয়ে
প্রতিটি শব্দ-পাথরে অথবা প্রত্ন কালে,আর লাইনে-
যতক্ষন না শেষ হয় রেলের পথ চলা।”
আমি একটু অনুরোধ করি যদি ঘুরে যানঃ-
http://www.jolporepatanore.weebly.com
or
http://www.jolporepatanore.webs.com
তাহলে কবিতার বন্ধন নিতে পারি।
অনেক ধন্যবাদ, সুন্দর অনুভূতি আপনার। শুভেচ্ছা।
আরো কবিতার অপেক্ষায়…।।আপনার কি কোন বই বেরিয়েছে?…..@.মুক্তা
“তোমার ঐ দশ মাথা শত চোখ একটিমাত্র মাত্রায় থিতানো,
অবশেষে ঊর্ধ্বশ্বাস অপলাপী অপরাধী আমার তমিস্রা—
তুমি খোঁজো চাষযোগ্য মাটি, খোঁজো আদিতমা রমণী-রজনী
খোঁজ তুমি পরিত্যক্ত দ্বীপ, তাতে যেন আমরা কপিলা কুবের!
হায়! গুহামানবের শুঁকে-চলা প্রবণতা খুঁজিছ, নাগর,
চকমকি পাথরে তুমি জ্বালবে রাত—যাও কোন জীবন বয়নে?
ফিরে যাচ্ছ, ফিরছ তুমি আদিপিতা, ফিরছ গুহাজীবন যাপনে।”
simply beautiful………………………………..
না, আমার বই বের হয়নি, আমি মাত্র প্রকাশ হলাম। বই হতে অনেক দেরী হবে হয়তো। এখনও কত শেখার বাকী!
আপনার লেখার শক্তি এতই যে আমার মন্তব্য করতে সাহস হল না। যদি অভয় দেন তবে বলতে পারি।