ড্রপসিন
কালো টাকা সাদা করেও যে লোক
সাদা থাকে–একটুও কালো হয় না
ভূকম্পবলয় থেকে বেঁচে যায়
ভূমিচাপা পড়েনা– নড়েনা অর্থলিপ্সা থেকে একবিন্দু
বিন্দু বিন্দু ঘাম নেই–শুধু অর্থকাম !
তারা-তো বেঁচে থাকে সুখসেব্য সকল ব্যবস্থা নিয়ে
তাদের কাপড় হরেকরকম
বেশভূষা ঝলমল করে
মলমল ও মসলিনে !
চোরাগুপ্তা পথে তাদেরই নিষ্ঠুরতা
আঁধিঝড় টেনে আনে–কচিপাতা মরে যায়
দমকা বাতাসে বারবার কার ঘর পড়ে যায় ?
তাদের পরিবেদনা নেই–
জোড়কলমে তাদের বাগান ভরে যায় !
প্রলোভন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে হতে
বোধ মরে যাচ্ছে !
কোন্ আস্তাবল থেকে কোন্ ঘোড়া নিয়ে
কারা অশ্বধ্বনি শুনিয়ে শুনিয়ে চারদিক দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে !
তাদের জন্য বারবার দৃশ্যপট
পাদপ্রদীপ ও মঞ্চসজ্জা !
ওরা মেকআপ নিয়ে আসে
নৃত্য-সহযোগে অভিনয় ভালোবাসে–
কখনো তাদের মঞ্চে ড্রপসিন পড়বে না ?
বেসাতির ছন্দ ভাঁজে ভাঁজে
বিলাস-বৈভব অশ্লীলতার পর্যায়ে পড়ছে আজ
সাজ নিয়ে উগ্রভাবে হাঁটে বাণিজ্যের–
বোন-ভাইব্রাদার !
বেসাতির ছন্দ আজ নানা ভাঁজে ভাঁজে !
কাদের আশ্রয়ে বর্বরেরা ক্ষীর রান্ধে সকাল বিকাল
ভুবনমোহন রূপভাঁতি !
অন্যদিকে অভাগিনী তার আঁচলে আটকিয়ে রাখে
ক্ষুধার্ত সন্তান !
ভোটকম্বলে জড়িয়ে রাখলেও শীত যায়না !
ভুরভুর করে পদ্মগন্ধ ফুলবাবুদের রুমালে
বিলাসপরায়ণতা পয়সার জোরে–
কারো কারো মায়াকান্না দেখে মুর্ছা যাই !
অশালীন হয় অট্টরোল !
ডাইনে আনতে বাঁয়ে না কুলানো মানুষের
উৎপত্তিস্থান কোন্ লোকালয়ে ? কোন্ কুঞ্জে বাড়ে?
প্রসববন্ধন
পাতা ঝরার সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে ?
নিষ্পত্র ও ন্যাড়া গাছে
এখন কি পাতা গজাবে ?
নাকি ডালপালাও শুকিয়ে যাবে
এই খরায় এই জরায় !
মূলরোমে জল নেই–চির হরিৎ গাছের এ অবস্থা দেখে
কা-কা করে কাক
শালিকের বুক পুড়ে খাক,
কোন্ প্রচ্ছায়ার ভেতর দিয়ে সময় এগিয়ে আসছে ?
বৃক্ষ তার প্রসববন্ধন নিয়ে জেগে উঠতে পারছে না কেন ?
এই মাটিতো দিয়েছে তাকে সমস্ত ঐশ্বর্য !
এই এক বিশ্ব – যেখানে আমরা
কার খুঁটি কোনখানে বাঁধা
সেই অনুয়ায়ী মতিগতি ঠিক করি
যদিও তা জানে গাধা!
আমরা জানিনা?
খুঁটিবাঁধা ছাগলের মত নড়ি
আবার হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ি!
কোন্ মন্ত্রে খোঁপে খোঁপে ঢুকে যাই
মধুকোষ থেকে কার মধু কোন্জন নিয়ে যায়
কে থাকে বৃত্তাবদ্ধ খাঁচায়?
ত্বক থেকে আঁশ নিয়ে যায়
তবু উড়ু-উড়ু মন
এলো আজ কোন্ সন্ধিক্ষণ?
চন্দ্রসুধা
চন্দ্রসুধা পান করার জন্য যখন আমি অপেক্ষায়
তখন তুমি টিমটিমে আলো
আবছায়ার ভেতর মিলে গেলে।
নিষ্প্রভ হয়ে বিচ্ছিন্ন ভূভাগ হয়ে
কোন্ সমুদ্রের জলে ডুব দিলে ?
শুল্কপক্ষ বার বার কি আসে ?
নিজের আরশিতে নিজেকে কখন আর দেখবে ?
দীপসজ্জা কব্জা করে আনা যায়না সবসময়ে !
ভেতরে ভেতরে আপনা আপনি উজ্জ্বলিত হতে
পারছো না কেন ?
চন্দ্রকান্তা হতে তোমার কি ইচ্ছে জাগে না ?
তুমি কি অস্ফুট চন্দ্রমল্লিকা হয়ে থাকবে ?
কুহকবিদ্যা
একজন আচার্য–আর্য থেকে কি অনার্য হয়ে যাবে ?
অর্থ-ক্ষমতা ও পদবীর লোভে !
কুহকবিদ্যায় –
দিকজ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে !
হর্ষধ্বনি দিচ্ছে কার নামে ?
অভিজ্ঞান-চিহ্ন মুছে ফেলে
পাহাড়পুর ও তক্ষশিলা ভুলে গিয়ে
বাদ্যধ্বনি বাজিয়ে বাজিয়ে উঠছে কোন্ বজরায় ?
উঠছে কোন্ রেলে ?
পূর্ব-গোলার্ধের বাসিন্দা হয়েও –
হয়ে যাচ্ছে এলেবেলে !
জ্ঞানলিপ্সার বদলে ধনলিপ্সা
দূরদর্শিতার বদলে অপরিনামদর্শিতা
শিক্ষার্থী কী শিখছে ?
বিদ্বৎসমাজ কোন্ সাজ পরে আজ !
আচার্য তুমিও মরমে না মরে –
পশুচর্মে কোন্ মর্মে জামাটা বানিয়ে
নিজেই পরেছো !
পরাশ্রয়ী হয়ে–দৃষ্টিশক্তিহীন হয়ে
আর কী কী বির্সজন দিবে ?
ধীপ্রধান সখা
থাকে দর্প নিয়ে আত্মশ্লাঘাহীন
ঋণ শোধ না করেও রসমঞ্জরী খায়
দু’পায়ে গিয়ে গাইবান্ধায় !
গ্রন্থজ্ঞানহীন থেকে তারা
জলশূন্য করে নদী–নিরবধি মিথ্যাচার
ভুলে গেছে কি যমুনা পাড়ের লোকেরা
কালশিরা পড়া অত্যাচার !
ধেইধেই করে নাচে উদ্বিড়ালের ধাড়ী
কণ্ঠে তার সুর শুনে মনে হয়–এ কোন্ অসুর ?
আবারও সেই শোরগোল-গোলমাল-চেঁচাচেঁচি
শঠতা-ঠকামি আর বজ্রাঘাত দিয়ে
আবারও চুরি হবে নদীধারে
ধোপার কাপড় কাচার তখ্তা ও হাঁড়ি !
দণ্ডদাতা নেই
ধিক্ বলারও কেউ নেই
ধিকি ধিকি জ্বলে তুষের আগুন ক্লান্তদেহে !
ধীপ্রধান সখা
তুমিও আবার যাও কোন্ ভীড়ে !
অন্ধকার অতিগাঢ় হলে
জ্যোৎস্না কি পরিস্ফুট হবে যমুনার তীরে ?
গোঙানি নির্ভর অসুস্থতা
মাথায় জলপট্টি দিয়ে জ্বর কমানো যাচ্ছেনা
কমানো যাচ্ছেনা সেঁক দিয়ে ব্যথা
আর রক্তপাত ?
জাত যাবে বলে ডাক্তারও স্পর্শ করছে না !
দুঃখের টাইপ সাজাতে সাজাতে
কোন্ সঙ্গীতের স্বরলিপি তৈরি হচ্ছে ?
কাপড়ের পুঁটুলিতে বাঁধা আছে গোপন কিছু কি ?
সুস্থ হওয়ার জন্যে কোন্ কন্যে
বাপের বাড়িতে চলে যাচ্ছে ?
দ্রবণের জটিলতা নিয়ে আরও একবার
দ্রবীভূত হচ্ছি কোন্ নর্দমার জলে ?
ভবিষ্যত কোন্ কল্পিত চিত্রকরের হাতে ?
গোঙানি নির্ভর অসুস্থতা আরও বাড়বে ?