চৌকাঠ
প্রকাশ্যে উড়ছে
যাবতীয় ব্যথার অগ্রন্থিত অক্ষর
তোমাকে জানা আর না জানা অকথিত ভঙ্গিমা মাত্র
অথচ কোন গোপন দরজা খুলে গেলে
আশ্চর্য কী সব দেনা-পাওনা মিটিয়ে দেখি
যারা এঘরে ওঘরে জমিয়ে রাখে অভাবের ছিটেফোঁটা
তারাও আজকাল দিব্যি কিনে নিতে পারে
প্রকাশের শালীনতা
যেদিকে দুর্লভ প্রতিভা মেলে দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি
বিপন্ন চৌকাঠে লেগে থাকে মৃত্যু আর
মাতৃত্বের যন্ত্রকৌশল থেকে ভেসে আসে দুরত্বের অভিমান
যে দুরত্বে দাঁড়িয়ে থেকে হিম হয়ে আসে যাবতীয় মনস্তত্ত্ব
বুকের সারাংশ
উৎসর্গ: সুমনাকে
১
ভেঙ্গে যায় ঘর-দোর
জলের মত তবু স্বচ্ছতা
ধরে রাখি নির্বিশেষ
যেন অন্ধকার আলো ছায়ায়
হেমন্তের ক্লান্তি মেখে
তোমাকে ব্যর্থতার কথা বলি–
‘যে যার মত করে উষ্ণতার
মাত্রা ভুলে গেলে সম্পর্কও
কীরকম বদলে যায়’
২
এই যে কাকতালীয়
চেনা জানা প্রতিবার
তার মানে–
বুকের সারাংশ টেনে
পুরানো ঘড়িরে গর্জনে
নুয়ে পড়ে আছে সব
অনুযায়ী ছেড়ে যাওয়া
বিচ্ছিন্নতার সাঁকো
জীবনের সব কলঙ্ক মুছে দিলেও
অভ্যাস যায় না প্রিয়তম। আরো আরো নাস্তিক হ্নদয়, যুগল সন্ধি মন–
মিলিত হলেও জানবে না তুমি নেই; অতঃপর ঈশ্বর নেই–
চেয়ে দেখো কাঠাল পাতার ঘ্রাণ, লেবুর সুগন্ধি, অরক্ষিত সন্ন্যাস…
জীবন খচিত নক্ষত্রের পথ ধরে বিচ্ছিন্নতার সাঁকো
তবু হ্নদয় সর্বগ্রাসী নচিকেতা এক জ্বলজ্যান্ত নমস্কার।
স্মৃতি
যে আর ফিরেনি বুকের গর্ত খুঁড়ে খুঁড়ে
তাকে ফিরিয়ে আনি এই বেলায়–
মৌনতা ভিতর উড়ে বেড়ায় যন্ত্রণা
আজকের সংকোচে লেগে থাকে পরিত্যাগের কথা
আর নিলাম নিয়ে ঢুকি উচ্ছিষ্ট আলোর সন্ধানে
মাটির টিম টিমে ধ্বনি থেকে আকাশের রন্ধ্র
যাপনের অম্ল স্বাদ থেকে জন্মদাতার মুখ ভেসে আসে
লুন্ঠিত শরীর হয়ে ভেসে আসে দূরের খদ্দের
চুক্তি
উৎসর্গ: সুমনাকে
‘দিল মুঝে উস গলি মে লে জা কার
অউর ভি খাক মে মিলা লায়া’ -মীর তকি মীর
শুধু একমুখী হতে পারে
আমাদের যাওয়া–
এই বেলা তুমি ভাল থেকো
ওই বেলা আমি
তুমি চেয়ে থেকো দুর্দিনে
অভিশাপের অন্তরালে যত ক্ষোভ
ধুয়ে যাবে শঙ্খ জলের ছোঁয়ায়
আমি চেয়ে থাকি বিষের বরাদ্দে
যেন পুণ্যস্পর্শে প্লাবিত হয় যৌবন ব্যাধি