শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
ক
আস্থা বা সহজাত ছিঁড়ে এসেছি
মাকড়সার জালে রোদ ও ভিজে শিউলি
কুড়োতে গিয়ে হাতে লেগে যাওয়া
কয়লার গোলার দাগ কোনওভাবে
ফিরবেনা জেনে নিজেকে ছেড়ে দিচ্ছি
বাক্যে নির্ভার দাঁতে দাঁত কল্পনাবিহীন দিন
সামান্য স্টিলের নখ বেঁধানোর কথা ভেবে দিন যায়
নিজেরই পুরনো রক্ত সামাজিক মানুষের সাদা টিসু কাগজে
খ
প্রাত্যহিক পাথর ও আমার টানটান ছিলা
কুয়াশা বস্তুত নরম কালো শরীর কোঁদা
যোনিতে আমি জিভ নামানোর ছলে লালা দিই
ব্যাকরণই আসলে লেহন
এই করতলহীন হাতে ভিক্ষার সামগ্রীও নেই
সামনে শুধু তীব্র হলুদের মোহে
নিভাঁজ চৌখুপ্পি নির্মাণ হলে তাকে দুপুর বলি
তার গায়ে শুকনো গ্রীষ্মের দিনে
একাকী হিংস্র পশুর চলন বসাই
গ
ভারি কলমে চাপ দিয়ে লিখি ‘হিংস্র’
আসলে ফোটেনা
শিশুর হাতে টুকরো হয়ে যাওয়া পতঙ্গ
অথবা যন্ত্রণাকাতর মেরুদণ্ডে চিত হয়ে লেখার খেলা
বসতে না পারার মধ্যে যে দাঁতে দাঁত ঘসা
পরপর তৈরি আকার যাদের দিন বলে ডাকলে
একটা অভ্যেস জুড়ে যায়
জিভে ঠোঁট নিজের লালা
শরীর বাঁকিয়ে যে হাত নিজেরই লিঙ্গের কাঠিন্যে ঘোরে
সেখানে করতল পাতি শব্দ!
বীর্যপতনের ঝাঁকুনির সামনে
শুধু পরপর কালো আকার হারানো মেয়েশরীর
আর তাদের শ্বতাঙ্গ রমণ
ঘ
একটা মাংসল সন্ধে চাইছি
ক্রমাগত লালা ও জিভের মধ্যে জাগিয়ে রাখা
না সামাজিকতা – অথচ বারবার ফসকে যাচ্ছে
গঠিত হচ্ছে সুড়ঙ্গ ও একান্ত
পরপর আয়নায় ঢেকে যাওয়া দুপুরের পর
অনায়াসে শিথিল বিকেল
অথচ যে জোরের সঙ্গে আঁকড়ে ধরছি কলম
যেভার নেমে আসা উচিত ছিল স্বাভাবিক কামড়ে
স্তনে বৃন্তের খেলে যাওয়া কুঞ্চনে
সেগুলোর প্রতিশব্দ নরম এই ন্যাকা ভাষায়
বারবার লেখা ও না লেখার মাঝখানে
একটা ন্যাড়া পার্ক তৈরি হয়
সামাজিক মানুষের সিঁড়ি দিয়ে চলে যাওয়া
নিভৃত বেড়াল এই বাক্যবিন্যাস
আদতে কয়েকটা পাতা মাড়ানোর
পিকনিক শেষের ভিজে ডিসেম্বর বিকেল
বস্তুত
কিস্যু না করতে পারার গায়ে থেমে থাকা
বাবার ছবির দিকে
ঙ
অক্ষরের গায়ে লিখি হাঁস
তারপর মধ্যরাত ও যাবতীয় ফ্লাইওভারের অঙ্কে
ট্যাক্সি ও সঙ্কেতবাহী শরীর কে আটকে রাখে?
যাবতীয় না যাওয়ার মধ্যে একটা কাগজ থাকে
বাক্যের ভারী গঠন সচেতন করে দেওয়া বদ্ধতা
সীমার গায়ে সুরক্ষা এঁটেছে কেউ
এই করতলবিহীন হাত কাকে ছোঁবে?
স্পর্শ তো আসলে একটা ভয় পাওয়ার পরের উষ্ণতা!
একটু পরে চলে যাবে বাবা-মা যাবতীয় শৌখিন কাচ
সামনে গেলেই উঁচু গাছ উপরের দিকেই
শুধু বরফের রজনী গন্ধ
পরক্ষণের কারুর সঙে কথা বলা,
সামান্য খিস্তির লঘু চলনে ভেসে আছে
ফাতনা ও থাকার টান
বন্ধু ও যুদ্ধ বিধ্বস্ত কোনও দেশের কথা
চটপট উত্তর লেখার চিঠি সব দূরে…
কে আসবে সেতুতে?
চ
যতটা কাঠিন্যে ট্রিগারে হাত সেটা আমাদের ধাতে নেই
যে বন্ধু গুয়াতেমালা থেকে ইমেইল এ লিখল
“আমাদের ৮০% পরিবারে কেউ না কেউ গৃহযুদ্ধে মরেছে”
তার জবাবের ভাষা নমনীয়
যোগ্য অভিধানহীনতায়
আমি তার ভাষায় উচ্চারণ করি গেররা
মাঝের ‘র’ এ জোর দিয়ে শ্বাদন্ত চেপে
তারপর বলি যুদ্ধ
জীবনে না দেখার ফলে জোর পাইনা
সারা যাতায়াত শুধু দস্তানা পরা লোকের হাতে কারনেশান ধরা
শুধু আয়না/ স্নান করবার ছল
দেখেছি ব্যর্থতা আমাদের গৃহকর্ম নিপুণ করে তোলে