৩১ জুলাই ২০১১-এর বিকেলটি যেন হয়ে উঠেছিল শুধুই কবিতার।
অনন্য এক কবিতা সন্ধ্যায় উতরোল হয়ে উঠেছিল উত্তর আমেরিকার নিউইয়র্ক। আর এটির আয়োজন করেছিলেন বাংলা কবিতার অন্যতম প্রধান কবি শহীদ কাদরী। নিউইয়র্কের জ্যামাইকার একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানটির পরিচালকও ছিলেন তিনি।
তিন পর্বে বিভক্ত অনুষ্ঠানটির প্রথম পর্বের নির্ধারিত কবি ছিলেন শামসুর রাহমান। মূলত তাঁকে উপস্থাপন ও তাঁর কবিতা আবৃত্তি ছিল এ পর্বের বিষয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল তাঁর কবিতা থেকে পাঠ। এতে অংশ নেন নিউইয়র্কের তিনজন আবৃত্তিশিল্পী। তাঁরা হলেন- মুজিব বিন হক, মুমু আনসারী, জেসমীন মোশতাক ও সেমন্তি ওয়াহেদ।
অনুষ্ঠানের সুচনালগ্নে বাংলা কবিতার ইতিহাস ও বিবর্তন নিয়ে বক্তব্য রাখেন শহীদ কাদরী। তিনি শামসুর রাহমানের কবিতার নানা দিক ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে নাতিদীর্ঘ আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, “আধুনিক কবিতা নবতর প্রাণ পেয়েছে শামসুর রাহমানের হাতে। শামসুর রাহমানের কবিতার সাথে আমার পরিচয় সেই ১৯৫৪ সালে। রাহমান তাঁর কবিতায় মানব জীবনের বহু বিচিত্র অনুভূতিকে ধারণ করেছেন বহুমাত্রিকতায়।” তিনি আরো বলেন, “রবীন্দ্রনাথ এবং তিরিশের দশকের পঞ্চ কবির পর দুই বাংলায় শামসুর রাহমানের চেয়ে বড় কবি আর আসেনি।”
দ্বিতীয় পর্ব ছিল ষাটের দশকের তিন কবি আবদুল মান্নান সৈয়দ, সিকদার আমিনুল হক ও রফিক আজাদ-এর কবিতা থেকে আবৃত্তি। কবিত্রয়ের কবিতা থেকে আবৃত্তি করেন- ক্লারা রোজারিও, রওশন আরা লিপি, মনজুর কাদের ও জি এইচ আরজু।
শেষ পর্বে কবি শহীদ কাদরী যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসী তিনজন কবিকে উপস্থাপন করেন। আশির দশকের এই তিন কবি হচ্ছেন- তমিজ উদ্দীন লোদী, ফকির ইলিয়াস এবং শামস আল মমীন।
তমিজ উদ্দীন লোদী তার নিজের লেখা চারটি কবিতা ‘তোমার আগুন’, ‘তুমুল দাবদাহের পর বৃষ্টি’, ‘মিড শটে সব ফ্রিজ’, ‘গোলক ধাঁধাঁ কিংবা ভলভুলাইয়া’, ফকির ইলিয়াস তার তিনটি কবিতা ‘গল্পের শিল্পকথা’, ‘এক যে ছিল ঘুম’, ‘গুহার দরিয়া থেকে ভাসে সূর্যমেঘ’ এবং শামস আল মমীন তার পাঁচটি কবিতা ‘আরও বেশি ভুল’, ‘আমি শুধু একটি কবিতা শুনতে চাই’, ‘হাত’, গরীবের সংগ্রাম’, ‘যেভাবে মস্তান হওয়া যায়’ পাঠ করেন।
সমাপনী ভাষণে শহীদ কাদরী বলেন, আমরা আমেরিকায় এমন আয়োজন আরও করার ইচ্ছে পোষণ করছি। পরবাসে যারা কবিতার জন্য নিরলস শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন, আমরা তাদেরকে আপনাদের সামনে তুলে ধরবো ভবিষ্যতে আবারো।
দর্শক-শ্রোতাদের মধ্য থেকে অনেকেই বলেছেন, প্রায় দু’ঘণ্টাব্যাপী এই অনুষ্ঠানটি ছিল সাম্প্রতিক কালের একটি শ্রেষ্ঠ পরিকল্পনা। তারা শহীদ কাদরীর এমন উদ্যোগকেও স্বাগত জানিয়েছেন।
‘Shahitya Cafe’ gives us the room to express ourselves , to be familiar with the new generation writers. It’s a wonderful platform for those who seek space to read literary works, want to publish their composition as well…..