অনুবাদ: ওয়ারিসুল আবিদ
পূর্বাভাষ
আমি পতাকার মত— উন্মুক্ত আর বিশাল স্থান দ্বারা বেষ্টিত,
অনুভব করতে থাকি দূর-আগত বাতাসের—
আর তারই মাঝে অবশ্যম্ভাবী বসবাসের;
যখন অন্য সব কিছু নিজেতে নির্বাক:
দরোজাগুলো নিঃশব্দে বন্ধ, চিমনিগুলোতে বিরাজমান নিস্তব্ধতা;
জানালাগুলো স্থির, আর ধূলার আস্তরণ ভারি ও গহ্বরের মত কৃষ্ণকায়।
ঝড়কে আমি চিনি, তাইতো আমি সাগরের মতই অস্থির।
খুলে ধরি নিজেকে ঢেউয়ের মাঝে, আবার গুটিয়ে ফেলি আমাতে,
নিজেকে ছুড়ে দিই বাতাসে… এই আমি—
সম্পূর্ণ একা এক প্রকাণ্ড ঝড়ের মাঝে।
প্রতিবেশী
অদ্ভুত বেহালা, তুমি কি আমার পিছু ধাবমান?
কত অযুত দূর-শহরে ইতিমধ্যে তোমার আর আমার
নিঃসঙ্গ রাত্রি সেরে নিয়েছে কথোপকথন?
কে বাজায় তোমায়— একশত না একজনে?
নাকি তোমার অনুপস্থিতিতে—
পৃথিবীর সব মহান শহরগুলো বিলীন হত নদীজলে?
আর কেনইবা প্রতিনিয়ত বিচলিত রাখে এই ভাবনা?
কেন আমি নিরন্তর প্রতিবেশী তাদের—
যারা সন্ত্রস্ত আর নির্দেশ দেয় তোমার এই সুরের,
আর তোমাকে বাধ্য করে বলতে:
জীবনের দায় সকল ভারি বস্তু থেকে অধিক ভারি।
প্রস্থান
কিভাবে অনুভবে আসে এই প্রস্থান।
আর কিভাবে জানি, কোন এক বস্তু:
কৃষ্ণকায়, নিরীহ অথচ নিষ্ঠুর,
যা কেবলমাত্র বিচ্ছিন্ন হবার জন্য—
আরেকবার দেখিয়ে দেয় তার কোমল বেণি।
আমি, প্রতিরোধহীন, চেয়ে থাকি তারই দিকে—
ছেড়ে যাবার আগে যে ডাক দিয়ে যায়,
আর পেছনে ফেলে রাখে— যেন সব নারীস্বরূপ,
এখনও অল্প ও শুভ্র, এবং অনেকটা অন্যকিছু।
ইতিমধ্যে, যা আর আমার উদ্দেশ্যে নয়,
হালকা ও প্রতিধ্বনিময় ঢেউয়ের পিছুপিছু এক বিদায়ী ভঙ্গিমা,
রহস্যময়: সম্ভবত—
এক তালসুপারী বৃক্ষ থেকে ঊর্ধ্বশ্বাসে উড়ে গেল একটি কোকিল।