এলোমেলো মনের কবিতা

wifeসেলিম রেজা নিউটন

ইনসোমনিয়া

অনিদ্রার অভিধানে কী কী নাই ঘাঁটতে ঘাঁটতে চলে যাওয়া। ঘুম আর কী? এ দিক সে দিক করে পড়ে থাকা। এই করে রাত পার। দিন অতিক্রম। কাকে যেন পষ্ট করে দেখতে না পাওয়া। বিছানা বা চেয়ারের পেছনেই কেউ থেকে গেছে। ভালো করে তাকানো যাচ্ছে না। কী দেখতে কী না কী চোখে পড়ে যদি! যদি কিছু না দেখি আদৌ! তার চে ঘুমিয়ে পড়ি। কোনখানে ঘুম! শাদাকালো নিশ্চুল মাথায় সিনেমা। ঋতুপর্ণ-বেহায়ার দোসরের রিল। কে যেন মগজে বসা বই, মানে সিনেমার বই। প্যারালাল সংলাপ পাঠ করতে করতে কত সিনেমার নায়ক-নায়িকা। তারই মধ্যে স্বপ্ন দেখা – ঘুমের স্বপ্ন। স্বপ্নের মধ্যে কাকে খুঁজতে থাকা। কে বসে গাচ্ছিল গান। কোথায় রাত্রে। তার কণ্ঠ অকারণ কানের ভেতরে বসে পা দোলাচ্ছে ঠ্যাঙের ওপরে থেকে থেকে। খসখসে পুরাতন স্বর। বকুলের সুরগন্ধফুল। বিছানা বা চেয়ারের আড়ালে অদৃশ্য হয়ে থাকাও তো ঘুম। রাত জেগে সেলফোনে কল্পনের নেট পেতে আই লাভ ইউ। ঘোড়ার ডিম্বক ইউ –  জিডিইউ। উল্টাপাশে জিডিইউ নট: ওরকম অলীক কল্পনা আমি করতে পারি না।

রাবি: ১২ই জানুয়ারি ২০১৪

খুনস্মৃতিকথা

চুরি হয়ে যাবে – সেই ভয়। আমি তো বিশিষ্ট ভয়ে ভীত। (হইসে কী? কী যে বলি মনেও থাকে না! তার পরে জানিও না কিছু!) যে কথা বলব তাই চুরি হয়ে যাবে – খুব ভয়। অন্যে সেই কথা দিয়ে কবিতা বানাবে। রাত্রে বসে আপলোড করবে কোনো আকাশের জালে। কে আবার ভাববে শেষে কেউ তার পাশে বসে বলে যাচ্ছে কথা অবিরাম। খুনোখুনি সম্পর্কিত কথা। খুন করা তেমন জটিল কোনো কাজ নয়। সোজাসাপ্টা খুব। সবাই ভয় পায় কিনা জানি না। আমি ভয় পাই। (কী হচ্ছে ওখানে? সরি। বার বার কী হচ্ছে ওখানে বললে কীরকম লাগবে, তাই না? বারবার জিজ্ঞেস করলে কি সন্দেহ সন্দেহ লাগে? এই পচা কথাটাও কি লিখে রাখবে কেউ!) সব কথা চুরি করে পরে যদি খুন করে ফেলে! সব কথা যার হাতে সেই কি সবচে বেশি বিপদের না! খুন করে ফেলতে পারে সে। সে ছাড়া কেইবা আর খুন করতে আসবে আমায়! (তিন দিন হয়ে যাচ্ছে বৃষ্টিপাত-রক্তপাত থামছে না তো! এই রক্তধারা নিয়ে আমি তবে পালাব কীভাবে!) যাক – এটা কোনো ভালো অবস্থা না। কথাবার্তা চুরি হয়ে যাচ্ছে। কী হবে কে জানে কত দিনে! কবে খুন হয়ে যাব আমি তারই অপেক্ষায় আছি। আমি রাগ করব কীভাবে! আমি কি তোমার ‘পরে রাগ করতে পারি, প্রিয় খুনি! আমি তোর জিঘাংসার দাসী আজ। লিখবি নাকি খুনস্মৃতিকথা?   রাবি: ১২ই জানুয়ারি ২০১৪   পুনশ্চ খুনস্মৃতিকথা খুনস্মৃতিকথাটুকু পড়লাম এখন আবার। কে যেন মাথায় বসে পড়ে নিচ্ছে সকল আমার। সে কোথায়? সে এখানে নাই। অথচ অভাব তার আমাকে ভরাট করে রেখেছে কীভাবে জানি না তা। যা তা কাণ্ডকারখানা এই বিস্তীর্ণ শূন্যতার তেপান্তর জুড়ে ফাঁকা বাতাসের কাঁধে চেপে বয়ে যাচ্ছে। একটানা। কান্নিখাওয়া মাত্র এক ডানা। শোঁ শোঁ প্রেতের বাতাস একা বকে যাচ্ছে হাওয়ার সকাশে। কলকল করে কথা বলে যাচ্ছে পাগল কবিতা, আর ভবিষ্যত খুনস্মৃতিকথা।

রাবি: ১৬ই জানুয়ারি ২০১৪

Facebook Comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top